আড়শা বনাঞ্চলে ১২ কেজির বিরল ময়াল উদ্ধার।
পুরুলিয়ার আড়শা বনাঞ্চলে বুধবার নজিরবিহীন এক ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। বিরচালি গ্রামের একটি চাষের জমি থেকে হঠাৎই বিশাল আকারের একটি ময়াল দেখতে পান গ্রামের বাসিন্দারা।
সাধারণ মানুষ এমন বড় আকারের সাপ খুব একটা দেখে না, তাই প্রথমে ভয় ছড়িয়ে পড়লেও পরে বনদপ্তরে খবর দেওয়া হয়।
খবর পাওয়ার পর দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুরুলিয়া বনবিভাগের আড়শা রেঞ্জের বনকর্মীরা। অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার সাহায্যে তাঁরা খুব সাবধানে সাপটিকে উদ্ধার করেন।
বনকর্মীদের মতে, উদ্ধার হওয়া ময়ালটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৬ ফুট এবং ওজন প্রায় ১২ কেজি।
এত বড় আকারের ময়াল সাধারণত গভীর জঙ্গলে পাওয়া গেলেও মাঝে মাঝে খাদ্যের সন্ধানে গ্রাম ও চাষের জমিতে ঢুকে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, মাঠে কাজ করার সময় হঠাৎই তাঁরা সাপটিকে দেখতে পান। সাপটি যদিও কারও উপর আক্রমণ করেনি, তবুও আকারের কারণে গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
পরে বনকর্মীরা এসে পরিস্থিতি সামাল দেন এবং সবাইকে সুরক্ষিত দূরত্বে থাকতে অনুরোধ করেন।
ময়াল সাপ মূলত মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয়। এরা বিষহীন এবং পরিবেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইঁদুর ও অন্যান্য ছোট প্রাণীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে এদের ভূমিকা অপরিসীম।
তাই বনদপ্তর সাপটিকে উদ্ধার করার পর সেটিকে কোনও ক্ষতি না করে নিকটবর্তী নিরাপদ জঙ্গলে ছেড়ে দেয়।
বনাধিকারীরা জানিয়েছেন, সাপটি পুরোপুরি সুস্থ ছিল এবং স্বাভাবিক ভাবে নড়াচড়া করছিল।
বনদপ্তর আরও জানিয়েছে, গ্রামে বা চাষের জমিতে এ ধরনের বন্যপ্রাণী দেখা গেলে ভয় না পেয়ে দ্রুত তাদের খবর দেওয়াই শ্রেয়।
কারণ ভুলভাবে ধরতে গেলে প্রাণীর ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি মানুষেরও বিপদ হতে পারে। তাই বন্যপ্রাণ রক্ষায় বনদপ্তরের সঙ্গে সহযোগিতা করা সকলের দায়িত্ব।
পুরুলিয়ার আড়শা জঙ্গলে মাঝে মাঝেই এই ধরনের বন্যপ্রাণীর দেখা মিলছে। বনদপ্তরও নিয়মিত টহল ও সচেতনতা কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষকে সতর্ক ও সচেতন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এবারের উদ্ধার অভিযান সেই সচেতনতারই একটি উদাহরণ।
এ ধরনের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে একদিকে যেমন গ্রামবাসীরা নিরাপদ থাকেন, অন্যদিকে প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য হয়।
আড়শা বনাঞ্চলে ১২ কেজির এই ময়াল উদ্ধারের ঘটনাও সেই প্রচেষ্টাকেই আরও দৃঢ় করল।
