বলরামপুরে ৬ গরু-সহ পিকআপ ভ্যান আটক।
বলরামপুরে আবারও নথিহীনভাবে গরু পরিবহনের অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলরামপুর থানার পুলিশের অভিযানে ৬টি গরু বোঝাই একটি পিকআপ ভ্যান আটক হয়েছে এবং গ্রেফতার করা হয়েছে তিনজনকে।
পিকআপ ভ্যানের মতো স্বল্প জায়গায় ঠাসাঠাসি করে গবাদি পশু পরিবহন করা হচ্ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। এর ফলে গরুগুলোর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণের অভিযোগও উঠেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সেদিন সন্ধ্যায় বলরামপুর পোস্ট অফিস মোড় দিয়ে যাচ্ছিল ওই পিকআপ ভ্যানটি। পুলিশের নজরে পড়তেই ভ্যানটিকে থামানো হয়।
এরপর চালক ও খালাসিদের কাছে গরু বহনের কোনো বৈধ নথি চাওয়া হলে তারা তা দেখাতে পারেননি।
এমনকি গরুগুলিকে যে অবস্থায় ভ্যানে রাখা হয়েছিল, তা ‘প্রিভেনশন অফ ক্রুয়েলটি টু এনিমেল অ্যাক্ট’-এর একাধিক বিধি লঙ্ঘন করছে বলে উল্লেখ করে পুলিশ।
ধৃত তিনজন হলেন—বাঘমুন্ডির অযোধ্যা পাহাড়ের সাপারামবেড়া গ্রামের বুদ্ধদেব মুর্মু, অযোধ্যা হিলটপের সোনাহারা গ্রামের উমির হাঁসদা ও মহাবীর মূর্মু।
ঘটনার পরই বলরামপুর থানার পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি ধারায় স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা রুজু করা হয়েছে।
বুধবার ধৃতদের পুরুলিয়া জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, নথি ছাড়া এভাবে গরু পরিবহন করা আইনত দণ্ডনীয় এবং তা পাচারের সঙ্গে যুক্ত কিনা, সেই বিষয়েও তদন্ত চলছে।
তবে ধৃতদের দাবি, তারা কেউই পাচারকারীর সঙ্গে যুক্ত নন। সকলেই কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত।
তাদের কথায়, কৃষি কাজে ব্যবহারের জন্যই স্থানীয় হাট থেকে এসব গরু কিনে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু নথিপত্র তৈরি করতে না পারায় তারা সমস্যায় পড়েছেন।
তদন্তকারী অফিসারদের মতে, দাবি সত্য হলেও নথিহীনভাবে এবং অস্বাস্থ্যকর, যন্ত্রণাদায়ক অবস্থায় গরু পরিবহন করা আইনত দোষ।
তাই ঘটনার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ গরুগুলিকে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দিয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
ঘটনাটি সামনে আসার পরে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, আইন লঙ্ঘন হলে পুলিশ পদক্ষেপ নিতেই পারে।
আবার অনেকের মতে, কৃষকদের আরও সহজে নথি তৈরির ব্যবস্থা থাকলে এমন সমস্যার মুখোমুখি হতে হতো না। তবে আপাতত পুলিশ মাধ্যমেই ঘটনাটির পূর্ণ তদন্ত চলছে।
