বেলডি সেতু পরিদর্শনে আশার আলো দেখছেন জঙ্গলমহলবাসী।
বসে যাওয়া বেলডি সেতুকে ঘিরে ফের আশার আলো দেখছেন জঙ্গলমহলের মানুষ। বুধবার পুরুলিয়ার জেলাশাসক কোন্থাম সুধীর সেতুটির বর্তমান পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন।
আড়শা ব্লক ও শহর পুরুলিয়ার সংযোগ রক্ষা করা এই গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি দীর্ঘদিন ধরেই বিপদজনক অবস্থায় রয়েছে।
তাই জেলাশাসকের এই পরিদর্শন এলাকাবাসীর মনে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। জেলাশাসকের সঙ্গে এদিন উপস্থিত ছিলেন পুরুলিয়া ১ ব্লকের বিডিও মনোজকুমার মাইতি, আড়শার বিডিও গোপাল সরকার, জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হংসেশ্বর মাহাত-সহ সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়াররা।
তারা সরেজমিনে সেতুর নীচের অংশের ক্ষয়ক্ষতি ও সামগ্রিক অবস্থার বিস্তারিত খতিয়ে দেখেন। পরে জেলাশাসক জানান, নতুন সেতু নির্মাণের সম্ভাবনা পর্যালোচনা করা হবে।
২০০১ সালে পুরুলিয়া-আড়শা সড়কে কংসাবতী নদীর উপর এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল পুরুলিয়া জেলা পরিষদের উদ্যোগে।
সেতু চালু হওয়ার পরে বেলডি, আড়শা ও মানকিয়ারি অঞ্চলের মানুষের জন্য শহর পুরুলিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ অনেক সহজ হয়ে যায়।
কিন্তু বছরের পর বছর সংস্কারের অভাব, পাশাপাশি সেতুর নিচে নির্বিচারে বালি তুলে নেওয়ার ফলে স্তম্ভের গোড়ায় বড় গর্ত তৈরি হয়।
এর ফলেই ২০২১ সালে সেতুর নিচের চাতালের অংশ ভেঙে পড়ে। পরে ২০২৩ সালের আগস্টে সেতুর মাঝের বড় অংশ পুরোপুরি বসে যায়।
সেই থেকে ঝুঁকি নিয়ে ভগ্ন সেতুর উপর দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে স্থানীয় মানুষজনকে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেতু বসে যাওয়ায় তাদের শহর পুরুলিয়া যেতে অনেকটা পথ ঘুরতে হচ্ছে। এতে সময় যেমন বেড়েছে, তেমনি যাতায়াত খরচও বেড়েছে।
তাই জেলাশাসককে সেতুর বর্তমান অবস্থা নিজের চোখে দেখে যেতে দেখে স্বাভাবিকভাবেই আশাবাদী হয়ে ওঠেন তারা। তাদের আশা, এবার হয়তো দ্রুতই সেতুর কাজ শুরু হবে।
জেলাশাসক সুধীর কোন্থাম দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই জেলার বিভিন্ন ব্লকে ঘুরে সরকারি প্রকল্পের কাজ নিজে পরিদর্শন করছেন।
মানবাজার এক থেকে মানবাজার দুই, জয়পুর, পুরুলিয়া এক ও বলরামপুর—সব জায়গাতেই তিনি প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি খতিয়ে দেখছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি জেলার প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে গিয়ে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন এবং সরকারি সুবিধাগুলি ঠিকমতো পৌঁছোচ্ছে কি না তা যাচাই করবেন।
এই উদ্দেশ্যে পুলিশ সুপার, ওসি-আইসি এবং মহকুমা পুলিশ অফিসারদেরও সহযোগিতার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। যাতে দূরবর্তী গ্রামাঞ্চলে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাধা না আসে।
বেলডি সেতুর এই পরিদর্শন তাই স্থানীয় মানুষের কাছে বড় আশা জাগাচ্ছে। তারা মনে করছেন, বহু প্রতীক্ষার পর অবশেষে নতুন সেতুর কাজ শুরু হওয়ার দিন আর দূরে নয়।
