বীরসা মুন্ডার জন্মজয়ন্তীতে প্রতিবাদী সভা অনুষ্ঠিত হলো বড় পাঞ্জনিয়ায়।

বড় পাঞ্জনিয়া শিব মন্দির চত্বরে পালিত হলো বীরসা মুন্ডার জন্মজয়ন্তী ও প্রতিবাদী সভা। 

কলাবনী আঞ্চলিক একত্রিত মহিলা সমিতি ও বড় পাঞ্জনিয়া ষোলোআনা দিগরের উদ্যোগে পরিবেশ, সমাজচেতনা ও আদিবাসী সংস্কৃতি রক্ষার বার্তা ছড়াল এই অনুষ্ঠান।

birsa munda janmajayanti protibadi sobha

বড় পাঞ্জনিয়া শিব মন্দির চত্বর আজ পরিণত হলো ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সামাজিক চেতনায় ভরপুর এক অনন্য জমায়েতে। 

বীরসা মুন্ডার জন্মজয়ন্তী উদ্‌যাপনকে কেন্দ্র করে কলাবনী আঞ্চলিক একত্রিত মহিলা সমিতি এবং বড় পাঞ্জনিয়া ষোলোআনা দিগরের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো এক প্রতিবাদী ও সচেতনতামূলক সভা। 

আদিবাসী নেতা বীরসা মুন্ডার আদর্শ, সংগ্রামের পথ এবং তার পরিবেশরক্ষার বার্তা তুলে ধরতেই ছিল এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য।

অনুষ্ঠানে বিশেষ আমন্ত্রণ পায় পুরুলিয়া বিজ্ঞান মঞ্চের মহিলা শাখা ‘মাদাম কুরি’। দুপুর দেড়টা থেকেই শুরু হয় দিনের কর্মসূচি। 

সূচনা হয় এক শক্তিশালী বার্তা বহনকারী র‌্যালি দিয়ে—যেখানে পাহাড়, জল ও জঙ্গল রক্ষার দাবিতে গ্রামবাসী মহিলাদের পাশাপাশি বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরাও একসঙ্গে হাঁটেন। 

সমাজ ও প্রকৃতিকে বাঁচানোর আহ্বান জানিয়ে র‌্যালিটি গোটা এলাকায় ছড়িয়ে দেয় প্রতিবাদের দৃঢ় সুর।

এরপর মাদাম কুরির সদস্যাদের পরিবেশনায় অনুপ্রেরণামূলক সাংস্কৃতিক সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। 

এই গান শুধু অনুষ্ঠানের পরিবেশকেই উৎসাহে ভরিয়ে তোলে না, বরং বীরসা মুন্ডার সংগ্রামী জীবনদর্শনকেও নতুন করে মনে করিয়ে দেয়। 

গ্রামবাসী প্রায় শতাধিক মহিলা এই সুযোগে তাদের গ্রামে বিজ্ঞান মঞ্চের একটি নতুন ইউনিট খোলার দাবি জানান, যা ভবিষ্যতে বিজ্ঞানচর্চা, সচেতনতা ও সমাজগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে মনে করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত একমাত্র পুরুষ প্রতিনিধি ছিলেন পুরুলিয়া বিজ্ঞান মঞ্চের জেলা সহ-সম্পাদক সঞ্জয় অধিকারী। তার উপস্থিতি ও বক্তব্য গ্রামের মহিলাদের আরও অনুপ্রাণিত করে। 

পরিবেশ ও সমাজ রক্ষায় নারীর ভূমিকা, বিজ্ঞানমনস্কতার প্রয়োজনীয়তা এবং আদিবাসী আন্দোলনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব—সবকিছু মিলিয়ে অনুষ্ঠানটি হয়ে ওঠে বহুমুখী চিন্তা ও মতের এক মিলন ক্ষেত্র।

পুরো আয়োজন জুড়ে ছিল শান্তিপূর্ণ কিন্তু দৃঢ় প্রতিবাদের সুর। বীরসা মুন্ডার জন্মজয়ন্তীকে স্মরণ করে এই সভা শুধু একটি অনুষ্ঠান নয়, বরং ছিল সমাজ, পরিবেশ ও মানুষের স্বার্থরক্ষার প্রতি এক গভীর অঙ্গীকারের প্রকাশ। 

বড় পাঞ্জনিয়ার মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ এই বার্তাই দেয়—সংঘবদ্ধ হলে পরিবর্তন আসবেই, আর সেই পথ দেখিয়েছিলেন বীরসা মুন্ডা।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url