আড়শায় হনুমানের তাণ্ডব অব্যাহত।

পুরুলিয়ার আড়শা ব্লকের বামুনডিহা ও তুম্বাঝালদা গ্রামে একদল হনুমানের আতঙ্কে চরম উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। 

দুর্গাপুজোর আগে থেকে দেখা পাওয়া এক পুরুষ হনুমান হঠাৎই আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে, যার কামড়ে ইতিমধ্যেই আহত হয়েছেন মোট ১৪ জন মানুষ। 

রবিবার বিকেলে আরও এক বৃদ্ধা মহিলা ও এক যুবক গুরুতরভাবে আহত হন। বনদফতর জানিয়েছে, হনুমানটিকে ধরতে খাঁচা বসানো হলেও তা সফল হয়নি। 

তাই সোমবার বিশেষ প্রশিক্ষিত টিম নামানো হচ্ছে, যারা ট্রাঙ্কুলাইজার ও জাল বন্দুকের সাহায্যে প্রাণীটিকে নিরাপদে আটকানোর চেষ্টা করবে। 

আতঙ্কে এখন থমকে গেছে গ্রামীণ জীবন— শিশুরা স্কুলে যাচ্ছে না, মহিলারা মাঠে যাচ্ছেন না। 

স্থানীয়দের আশা, প্রশাসনের তৎপরতায় খুব শীঘ্রই আতঙ্কের অবসান ঘটবে এবং আড়শা আবারও ফিরে পাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। 🐒🌳


arsha hanuman atanka

🐒 আড়শায় হনুমানের আতঙ্কে কাঁপছে দুই গ্রাম — বনদফতরের বিশেষ টিম নামছে অভিযানে

পুরুলিয়ার আড়শা ব্লকে এখন এক ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। হঠাৎ করে একদল হনুমান গ্রামজীবনে নেমে এসেছে আতঙ্কের প্রতীক হয়ে। 

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এই অঞ্চলের বাসিন্দারা ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন, কারণ এক পুরুষ হনুমান বারবার গ্রামবাসীদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে। 

রবিবার বিকেলে আরও দুই ব্যক্তি হনুমানের আক্রমণে আহত হন, যা আতঙ্ককে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। 😟

এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ জনে, যাদের মধ্যে শিশু, মহিলা এবং যুবক সকলেই আছেন। 

কেউ মাঠে গিয়েছিলেন ছাগল চরাতে, কেউ বাড়ির সামনে বসেছিলেন—সবাই সেই হিংস্র হনুমানের আক্রমণের শিকার হয়েছেন। 

বনদফতর ইতিমধ্যেই অভিযান শুরু করেছে, তবে এখনো পর্যন্ত হনুমানটিকে ধরা সম্ভব হয়নি।

বনকর্মীদের মতে, এই হনুমানটি অত্যন্ত বুদ্ধিমান ও সতর্ক। মানুষের উপস্থিতি টের পেলেই সে গাছের উপর উঠে পালিয়ে যায়। 

তাই এবার সোমবার এলাকা জুড়ে নামানো হচ্ছে এক বিশেষ প্রশিক্ষিত টিম, যারা ট্রাঙ্কুলাইজার ও জাল বন্দুক ব্যবহার করে তাকে ধরার চেষ্টা করবে।


📍 আতঙ্কের কেন্দ্রবিন্দু — বামুনডিহা ও তুম্বাঝালদা গ্রাম

পুরুলিয়ার আড়শা ব্লকের বেলডি গ্রাম পঞ্চায়েতের দুটি এলাকা—বামুনডিহাতুম্বাঝালদা— এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। 

দুর্গাপুজোর আগে থেকেই এলাকায় দেখা যায় একদল হনুমানকে। প্রথমে সবাই ভেবেছিল তারা সাধারণ বনের হনুমান, যারা ফল বা খাবার খুঁজতে গ্রামে এসেছে। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই সমস্যা ভয়াবহ রূপ নেয়।

একটি পুরুষ হনুমান আচমকা মানুষকে লক্ষ্য করে আক্রমণ শুরু করে। কখনও মাঠে কাজ করা কৃষক, কখনও পথচারী বা শিশু— কারও প্রতি ছাড় দিচ্ছে না সে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত অন্তত ১৪ জন গ্রামবাসী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা বেশ গুরুতর।

একজন স্থানীয় বৃদ্ধ জানান —

“সন্ধ্যা নামলেই দরজা-জানালা বন্ধ করে দিই। কে জানে কখন কোথা থেকে লাফিয়ে এসে কামড়ে দেবে!” 😨

গ্রামজুড়ে এখন এক নিঃস্তব্ধ আতঙ্ক। স্কুলগামী বাচ্চারা বাইরে বেরোতে ভয় পাচ্ছে। মাঠে কৃষিকাজ বন্ধের উপক্রম হয়েছে।


🩸 রবিবারের ঘটনা — বৃদ্ধা ও যুবক আহত

রবিবার বিকেলে ঘটে যায় আরেকটি ভয়াবহ ঘটনা। তুম্বাঝালদা গ্রামের নেবুবালা মাহাত (৬২) প্রতিদিনের মতো ছাগল চরাতে মাঠে গিয়েছিলেন। 

তখনই একটি গাছ থেকে আচমকা ঝাঁপিয়ে পড়ে হনুমানটি। মুহূর্তের মধ্যেই তাঁর হাতে ও ঘাড়ে নখ বসিয়ে দেয়। 

রক্তাক্ত অবস্থায় চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে এলেও হনুমানটি পালিয়ে যায় গাছের মাথায়।

এরপর কিছুক্ষণ পরেই সত্যবান মাহাত নামে এক যুবককে রাস্তার পাশে আক্রমণ করে একই হনুমান। 

তাঁর পা ও হাতে গভীর কামড়ের দাগ পড়ে। স্থানীয়রা দু’জনকেই দ্রুত সিরকাবাদ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান।

চিকিৎসকেরা জানান —

“দুজনেরই কামড়ের ক্ষত গভীর। প্রয়োজনীয় ইনজেকশন ও অ্যান্টি-র‌্যাবিস দেওয়া হয়েছে। আপাতত তারা স্থিতিশীল আছেন।”

তবে এই ঘটনার পর গ্রামবাসীদের আতঙ্ক যেন আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। এখন কেউ একা মাঠে বা বনে যাচ্ছে না। শিশুরা ঘর থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে। 😢


🏥 আহতদের চিকিৎসা ও মানসিক প্রভাব

এখন পর্যন্ত যারা আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে কয়েকজন পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। 

স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা বলেন, কামড়ের ক্ষত ছাড়াও আতঙ্ক ও মানসিক চাপ অনেকের মধ্যে স্পষ্ট। বিশেষত বাচ্চা ও মহিলারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।

একজন মা বলেন —

“আমার ছেলেটা প্রতিদিন মাঠে খেলত, এখন জানালা খুললেই কেঁদে ফেলে। বলে, মা, হনুমান আসবে!” 😭

মনোবিদরা মনে করছেন, এই ধরণের প্রাণীর আক্রমণ দীর্ঘস্থায়ী মানসিক প্রভাব ফেলতে পারে, যদি দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনা হয়।

বনদফতর ইতিমধ্যে গ্রামভিত্তিক সচেতনতা প্রচার শুরু করেছে, যাতে মানুষ আতঙ্কিত না হয়ে সাবধান থাকে।


🌳 বনদফতরের প্রচেষ্টা ও ব্যর্থতা

পুরুলিয়া বনদফতরের কর্মীরা ইতিমধ্যেই এলাকায় খাঁচা বসিয়ে ও খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে হনুমানটিকে ধরার চেষ্টা করেছেন।

 কিন্তু সে প্রতিবারই পালিয়ে যাচ্ছে। বনদফতরের এক আধিকারিক বলেন —

“ওটা খুব বুদ্ধিমান ও তেজি হনুমান। খাঁচার আশেপাশে গেলেও খাবার নেয় না। মানুষের উপস্থিতি টের পেলেই দৌড়ে গাছের উপর উঠে যায়।”

তারা জানিয়েছেন, এবার বিশেষ টিম নামানো হবে, যারা ট্রাঙ্কুলাইজার বন্দুক, জাল বন্দুক, ও প্রশিক্ষিত কর্মী নিয়ে কাজ করবে। 

তাঁদের উদ্দেশ্য — প্রাণীটিকে আঘাত না করে নিরাপদে ধরার চেষ্টা করা।

এই টিমের সদস্যরা দক্ষিণবঙ্গের এক বিশেষ প্রাণী উদ্ধার ইউনিট থেকে আসছেন, যাদের পূর্বে অনুরূপ পরিস্থিতিতে সফল অভিজ্ঞতা রয়েছে।


🚨 আতঙ্কে থমকে গেছে গ্রামীণ জীবন

বামুনডিহা ও তুম্বাঝালদা গ্রামজুড়ে এখন এক ধরনের নীরবতা নেমে এসেছে। বাজার ফাঁকা, হাটে লোক নেই, সন্ধ্যা নামলেই গ্রাম যেন নিস্তব্ধ। কৃষিকাজও ব্যাহত হচ্ছে।

একজন দোকানদার বলেন —

“আগে সকাল থেকে দোকান খুলে বসতাম, এখন দুপুর পর্যন্ত বন্ধ রাখি। কেউ আসে না। সবাই ভয় পেয়ে আছে।”

বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারছে না, কারণ অনেক জায়গায় হনুমানকে দেখা যাচ্ছে গাছের ডালে বসে থাকতে। মহিলারা জঙ্গলপথে কাঠ বা ঘাস কাটতে যাওয়া বন্ধ করেছেন।

গ্রামবাসীদের দাবি — প্রশাসন যেন দ্রুত পদক্ষেপ নেয় এবং বনদফতর হনুমানটিকে ধরে বনে ফিরিয়ে দেয়।


🙏 ধর্মীয় ভাবনা ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া

আড়শার মানুষদের মধ্যে হনুমান দেবতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে। তাই অনেকেই বলেন, এটি হয়তো “দেবতার রোষ”। কেউ কেউ পূজা ও শান্তি যজ্ঞের আয়োজনের কথাও ভাবছেন।

এক প্রবীণ ব্যক্তি বলেন —

“আমরা কখনও হনুমানকে আঘাত করতে চাই না। কিন্তু ও এখন মানুষকেই আঘাত করছে। হয়তো রুষ্ট হয়েছেন, তাই শান্তি স্থাপন করতে হবে।”

অন্যদিকে, কিছু সামাজিক সংগঠন বলছে — বনাঞ্চল ধ্বংসের কারণে প্রাণীরা মানুষের বসতিতে ঢুকে পড়ছে। 

খাবারের অভাবে তারা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে। তাই দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য মানুষ-প্রাণী সহাবস্থান রক্ষা করতে হবে। 🌱


🧠 বিশেষজ্ঞদের মতামত — কেন এমন আক্রমণাত্মক হনুমান?

বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি সম্ভবত “territorial aggression” বা এলাকা দখলের প্রবণতার ফল। একটি পুরুষ হনুমান নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষকেও শত্রু হিসেবে দেখতে পারে।

প্রাণীবিজ্ঞানীরা বলছেন, অনেক সময় হনুমানের দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে বা সঙ্গিনীর মৃত্যু হলে পুরুষ হনুমান আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে।

তাদের পরামর্শ —

  • হনুমানকে খাবার দেওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ করা উচিত 🛑

  • কেউ একা পথে না চলা

  • শিশু ও বয়স্কদের বাইরে না পাঠানো

  • হনুমান দেখলে চেঁচামেচি না করে শান্তভাবে দূরে সরে যাওয়া

এই নিয়মগুলি মানলে পরিস্থিতি অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।


🌄 আশার আলো — বিশেষ টিমের আগমন

বনদফতর জানিয়েছে, সোমবার সকালে বিশেষ প্রশিক্ষিত টিম আড়শায় পৌঁছাবে। তারা প্রথমে হনুমানের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করবে, তারপর ট্রাঙ্কুলাইজার বন্দুক ব্যবহার করে তাকে অজ্ঞান করার পরিকল্পনা রয়েছে।

টিমের এক সদস্য বলেন —

“আমরা চেষ্টা করব প্রাণীটিকে কোনো ক্ষতি না করে ধরে নিরাপদ বনে ছেড়ে দিতে। লক্ষ্য — মানুষ ও প্রাণী দুই-ই যেন সুরক্ষিত থাকে।”

এই খবরে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে স্থানীয়দের মধ্যে। অনেকে মনে করছেন, হয়তো কয়েক দিনের মধ্যেই আতঙ্কের অবসান ঘটবে। 🙏



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url