পাড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রূপা গাঙ্গুলীর পরিদর্শন।
পাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিদর্শনে রূপা গাঙ্গুলি। হাসপাতালের শোচনীয় অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিধায়ক চাঁদ বাউরী। বিস্তারিত পড়ুন।
📰 পাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রূপা গাঙ্গুলীর হঠাৎ পরিদর্শন – শোচনীয় অবস্থা ফাঁস করলেন বিধায়ক!
🔍পাড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রূপা গাঙ্গুলী
📅 শনিবার বিকেল প্রায় ৫টা নাগাদ পাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছান অভিনেত্রী ও বিজেপি নেত্রী রূপা গাঙ্গুলি।
সঙ্গে ছিলেন পাড়া বিধানসভার বিধায়ক নদীয়ার চাঁদ বাউরী এবং বিজেপির আরও কয়েকজন নেতা।
রূপা গাঙ্গুলি প্রথমেই হাসপাতালের চত্বর ঘুরে দেখেন। এরপর তিনি আউটডোর পরিসেবা, মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ড, পানীয় জলের ব্যবস্থা এবং শৌচালয় পরিদর্শন করেন।
এমনকি ভর্তি থাকা রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সমস্যার কথা মন দিয়ে শোনেন।
রোগীরা মূলত অভিযোগ করেন যে চিকিৎসা পরিষেবার অভাব, ওষুধের সংকট, নোংরা পরিবেশ ও পানীয় জলের ঘাটতি রয়েছে।
যদিও সংবাদমাধ্যম প্রশ্ন করলে রূপা গাঙ্গুলি মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন। এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে আলোচনা।
🏥 বিধায়কের বিস্ফোরক অভিযোগ – “হাসপাতালের অবস্থা শোচনীয়!”
রূপা গাঙ্গুলীর সঙ্গে থাকা বিধায়ক নদীয়ার চাঁদ বাউরী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন –
“পাড়া হাসপাতালের অবস্থা সত্যিই শোচনীয়। অপরিষ্কার পরিবেশে ছাগল পর্যন্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে। ভালো বেড নেই, রুম থাকলেও সেগুলো অস্বাস্থ্যকর। পানীয় জলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। রোগীরা ওষুধ পাচ্ছেন না। এমন অবস্থায় কীভাবে চিকিৎসা সম্ভব?”
তার মতে, গরিব ও খেটে খাওয়া মানুষের জন্য এই হাসপাতাল একমাত্র ভরসা। কিন্তু মৌলিক পরিকাঠামোর অভাবের কারণে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।
তিনি রাজ্য সরকারকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান যাতে অন্তত প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ন্যূনতম পরিষেবা নিশ্চিত হয়।
এই বক্তব্যের পর থেকেই হাসপাতালের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
⚠️ হাসপাতালের বাস্তব চিত্র – কেন এত ক্ষোভ?
পরিদর্শনের সময় হাসপাতালের একাধিক সমস্যা সামনে আসে।
✔ নোংরা পরিবেশ: হাসপাতালের ভিতরে ওয়ার্ডগুলো অপরিষ্কার, যেখানে ছাগল পর্যন্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ।
✔ পানীয় জলের অভাব: রোগী ও তাঁদের পরিবারের জন্য নিরাপদ জল নেই।
✔ চিকিৎসার ঘাটতি: রোগীরা সময়মতো ওষুধ পাচ্ছেন না।
✔ অপর্যাপ্ত সুবিধা: বেডের সংখ্যা কম এবং যেগুলো আছে সেগুলোও অস্বাস্থ্যকর।
✔ অস্বাস্থ্যকর শৌচালয়: বাথরুম ব্যবহারের অযোগ্য, যা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
এই পরিস্থিতি শুধুমাত্র পাড়া ব্লক নয়, গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সাধারণ চিত্রও তুলে ধরছে। সাধারণ মানুষ আজও মৌলিক চিকিৎসার জন্য সংগ্রাম করছেন।
🗣️ রোগীদের মুখে কষ্টের কথা
রূপা গাঙ্গুলী যখন রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন, তারা তাদের অসুবিধার কথা অকপটে তুলে ধরেন।
-
একজন রোগী বলেন – “ওষুধের জন্য বাইরে যেতে হয়। সবকিছু টাকা দিয়ে কিনতে হয়।”
-
আরেকজন বলেন – “জলের অভাবে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।”
-
কেউ কেউ অভিযোগ করেন যে বাথরুমের অবস্থা এতটাই খারাপ যে ব্যবহার করাই কঠিন।
এই সমস্যাগুলো শুনে বোঝা যায়, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার অধিকার আজও সবার জন্য সমানভাবে নিশ্চিত নয়।
🗳️ রাজনীতি নাকি মানুষের স্বার্থ?
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিরোধীদের দাবি – রাজ্য সরকারের অবহেলার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
শাসক দলের পক্ষ থেকে আবার বলা হচ্ছে – এটি বিজেপির রাজনৈতিক প্রচার ছাড়া কিছু নয়।
তবে প্রশ্ন হচ্ছে – এই রাজনৈতিক লড়াইয়ের মাঝে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য পরিষেবা কি উপেক্ষিত হচ্ছে না?
গ্রামীণ মানুষদের একমাত্র ভরসা এই হাসপাতাল, তাই তাদের মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করা খুবই জরুরি।
📲 সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া
খবর প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়ার ঝড়। অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন –
💬 “গরিব মানুষের চিকিৎসার জন্য যেখানে সরকারি হাসপাতাল, সেখানেই যদি এমন অবস্থা হয় তবে মানুষ কোথায় যাবে?”
💬 “চিকিৎসার অধিকার কি শুধুই বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ?”
এছাড়াও অনেকে রূপা গাঙ্গুলীর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।
✅ মূল সমস্যা ও সমাধানের দাবি
প্রধান সমস্যাগুলি
✔ হাসপাতালের ভেতর ওয়ার্ড অপরিষ্কার।
✔ পর্যাপ্ত ডাক্তার ও নার্সের অভাব।
✔ পানীয় জলের সংকট।
✔ ওষুধের ঘাটতি।
সম্ভাব্য সমাধান
✔ নিয়মিত পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ।
✔ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ।
✔ পরিকাঠামো উন্নয়ন।
✔ বিনামূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ।
🏛 বিশেষজ্ঞদের মতামত
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রামীণ হাসপাতালের উন্নয়ন এখন সময়ের দাবি। শুধুমাত্র শহরে বড় হাসপাতাল বানালেই হবে না, গ্রামের সাধারণ মানুষদের জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে উন্নত করা জরুরি।
তাদের মতে, সরকারকে এখনই এই দিকে নজর দিতে হবে, নাহলে সাধারণ মানুষ মৌলিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হতে থাকবেন।
🔔 শেষ কথা
পাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রূপা গাঙ্গুলীর পরিদর্শন শুধু একটি খবর নয়, বরং গ্রামীণ স্বাস্থ্যব্যবস্থার সংকটের প্রতিচ্ছবি।
রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ চলবে, কিন্তু গরিব মানুষের চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার যেন রাজনীতির বলি না হয়।
এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন – অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং মৌলিক স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করা। না হলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে।
