মমতার হাতে ৩৩টি দুর্গাপুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধনে পুরুলিয়ায় উৎসবের উচ্ছ্বাস।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে পুরুলিয়ায় ৩৩টি দুর্গাপুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হল।
জেলার বিভিন্ন পুজো কমিটি, স্থানীয় শিল্পী ও সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলিত হয়ে উৎসবকে আনন্দময় করে তুলেছে।
বেলগুমা পুলিশ লাইনস, বরবাজার, পুঞ্চা, চেলিয়ামা সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুজোর উদ্বোধন ঘরে ঘরে আনন্দ ছড়িয়েছে।
পুলিশ প্রশাসন এবং স্থানীয় কমিটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করেছে। প্রতিটি প্যান্ডেল, আলোকসজ্জা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান স্থানীয় ঐতিহ্য ও সৃজনশীলতাকে তুলে ধরেছে।
শিশুরা, যুবক এবং বৃদ্ধ সবাই মিলিত হয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করেছে। পুরুলিয়ার দুর্গাপুজো শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি সামাজিক মিলন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং কমিউনিটির শক্তির প্রতীক। 🎉
📰 মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৩৩টি পূজা উদ্বোধনে পুরুলিয়ায় জমে গেল দুর্গাপূজা
পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলে এবারের শারদোৎসব শুরু হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর হাতে। বৃহস্পতিবার তিনটি পর্যায়ে মোট ৩৩টি দুর্গাপুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধন করা হয়।
প্রথম থেকে তৃতীয় পর্যায় পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন দুর্গাপুজোর ঘরে ঘরে আনন্দ ও উৎসবের আলো পৌঁছে দিয়েছে।
তৃতীয় পর্যায়ের উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী বেলগুমা পুলিশ লাইনস আবাসিক বৃন্দ দুর্গাপূজা এবং কালী পূজা কমিটির দুর্গাপূজা উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক ড. রজত নন্দা, জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, এবং সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী শুধু বেলগুমা নয়, বরবাজার, পুঞ্চা, চেলিয়ামা, হুড়া লধুড়কা সহ আরও বেশ কয়েকটি পুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন।
প্রতিটি পুজো আয়োজনের মাধ্যমে স্থানীয় মানুষদের মধ্যে উৎসবের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে। 🌟
এই ধরনের ভার্চুয়াল উদ্বোধন প্রথাগত সংস্কৃতিকে বজায় রেখে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে দুর্গাপুজোর উজ্জ্বলতা বাড়িয়েছে।
স্থানীয় কমিটি ও প্রশাসনের সমন্বয়ে প্রতিটি পুজোর সময় নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে, যা উৎসবকে আরও আনন্দদায়ক ও সুরক্ষিত করেছে।
তৃতীয় পর্যায়ে উদ্বোধিত অন্যান্য দুর্গাপুজো
তৃতীয় পর্যায়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দুর্গাপুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন।
উল্লেখযোগ্য পুজোগুলো হলো বরবাজার মল্লপাড়া সার্বজনীন মহিলা দুর্গাপূজা, পুঞ্চা পাড়ুই সার্বজনীন দুর্গোৎসব, পুরুলিয়া ধীবর সমিতি জেলিয়া পাড়া, পুরুলিয়া সুভাষপল্লী (সিন্দারপট্টি), আড়শা ষোলোআনা দুর্গাপূজা, চেলিয়ামা আদি সার্বজনীন দুর্গোৎসব, এবং হুড়া লধুড়কা রাজলক্ষ্মী দুর্গামন্দির মাঝপাড়া।
প্রতিটি পুজো কমিটি স্থানীয় শিল্পী, হাতের কাজ, রঙিন প্যান্ডেল এবং ঐতিহ্যবাহী থিম নিয়ে উৎসব উদযাপন করে। 🎨
এই পর্যায়ের উদ্বোধন স্থানীয় মানুষদের মধ্যে আনন্দের সঞ্চার করেছে। প্রতিটি প্যান্ডেল শুধু সুন্দর নয়, তা স্থানীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং সৃজনশীলতার প্রতিফলন।
শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই অংশগ্রহণ করে এবং পুজোর আনন্দে ভেসে ওঠে। এছাড়া স্থানীয় প্রশাসন নিশ্চিত করেছে যে সকলের জন্য উৎসব সুরক্ষিত ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রতিটি ঘরে ঘরে উৎসবের আলো পৌঁছেছে এবং এই ভার্চুয়াল উদ্বোধন প্রথাগত অনুষ্ঠানকে আরও আধুনিক ও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
প্রথম পর্যায়ে উদ্বোধিত ১৫টি দুর্গাপুজো
প্রথম পর্যায়ে মুখ্যমন্ত্রী জেলার ১৫টি দুর্গাপুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন।
এগুলো হলো ঝালদা নামোপাড়া, জয়পুর চটিপাড়া, মানবাজার ইঁদকুড়ি, পুরুলিয়া তেলকল পাড়া, পুরুলিয়া আমলাপাড়া, পুরুলিয়া অলঙ্গীডাঙ্গা, পুরুলিয়া নর্থলেক রোড, কাশিপুর বড়ো লোহার পাড়া, কাশিপুর রামপুর, রঘুনাথপুর মিশন রোড, রঘুনাথপুর গ্রামরক্ষী বাহিনী, পাড়া জবড়রা, পাড়ার আনাড়া চাপুড়ি, রঘুনাথপুর তাঁতিপাড়া ষোলআনা এবং নিতুড়িয়া দুবেশ্বরী কোলিয়ারি।
প্রতিটি পুজোর উদ্বোধন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি আধিকারিকদের উপস্থিতিতে হয়।
এখানে দুর্গাপুজো শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি সামাজিক মিলন ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উৎসব।
স্থানীয় মানুষ, শিল্পী ও কমিটি মিলে প্যান্ডেল সাজানো, আলোকসজ্জা, শিল্পকর্ম ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে। 🪔
শিশু, যুবক, বৃদ্ধ সকলেই এই আনন্দের অংশীদার হন। পুজোর পরিবেশ শান্তিপূর্ণ ও সুরক্ষিত রাখতে পুলিশ প্রশাসন এবং কমিটি সবরকম প্রস্তুতি নেয়।
এই পর্যায়ের উদ্বোধন স্থানীয় মানুষদের মধ্যে উৎসবের আবেগকে নতুন মাত্রা দিয়েছে, যা ডিজিটাল যুগে ভার্চুয়াল উদ্বোধনের মাধ্যমে আরও বিস্তৃত হয়েছে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে উদ্বোধিত ১০টি দুর্গাপুজো
দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ১০টি পুজোর উদ্বোধন করা হয়। এগুলো হলো জয়পুর আটাকল চক সার্বজনীন, বোরো সার্বজনীন, আঁকরো সার্বজনীন, মানবাজার যোগাশ্রম, পুঞ্চা যুগলিডি, বলরামপুর সরাইপাড়া, পুরুলিয়া রেনিরোড দেবীমেলা, পুরুলিয়া সূর্যসেন পল্লী, পুরুলিয়া চকবাজার ষোলআনা এবং নিতুড়িয়ার সরবড়ি সার্বজনীন।
প্রতিটি পুজোর সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, কমিটি ও সরকারি কর্মকর্তা উপস্থিত থাকেন। তারা নিশ্চিত করেন যে উৎসব শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদে হবে। 👮♂️
প্রতিটি পুজোর প্যান্ডেল, আলোকসজ্জা ও সাংস্কৃতিক আয়োজন স্থানীয় শিল্পী ও কমিটির সৃজনশীলতার প্রতিফলন।
স্থানীয় মানুষদের আনন্দ উপভোগ এবং পারিবারিক মিলন নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসন সর্বদা প্রস্তুত থাকে।
এই পর্যায়ে দুর্গাপুজোর আবেগ ও উচ্ছ্বাস পুরো জেলায় ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিটি প্যান্ডেলে পরিবারের সবাই মিলিত হয়ে উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করে, যা সামাজিক সংহতি ও ঐতিহ্যকে আরও দৃঢ় করে।
স্থানীয় প্রতিক্রিয়া ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা
বেলগুমার সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো বলেন,
"দুর্গাপুজো বাংলার সর্বজনীন উৎসব। জঙ্গলমহলের প্রত্যেক ঘরে ঘরে আজ আনন্দের আলো পৌঁছে যাক, এটাই আমাদের কামনা।" ✨
জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,
"উৎসবকে ঘিরে নিরাপত্তার সবরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ যাতে নির্ভয়ে উৎসব উপভোগ করতে পারেন, তার জন্য পুলিশ প্রশাসন সর্বদা সতর্ক।" 🚓
এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা স্থানীয় মানুষদের আনন্দে নিরাপদে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে। দুর্গাপুজোর সময় পুলিশ ও প্রশাসন সক্রিয় থাকায়, শিশুরা, যুবক ও বৃদ্ধরা নিরাপদ পরিবেশে উৎসব উপভোগ করতে পারে।
স্থানীয় প্রশাসন এবং কমিটি মিলিত হয়ে প্রতিটি পুজোর সুষ্ঠু ও সুন্দর আয়োজন নিশ্চিত করেছে।
পুরুলিয়ার দুর্গাপুজোর বৈশিষ্ট্য
পুরুলিয়ার দুর্গাপুজো শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও সামাজিক মিলনের উৎসব।
প্রতিটি পুজো কমিটি স্থানীয় শিল্পী, হাতে তৈরি প্যান্ডেল, আলোকসজ্জা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উৎসব উদযাপন করে। 🎨
-
পুজোর সময় স্থানীয় খাবার ও মিষ্টি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়
-
শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই অংশ নেয় সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৃত্য ও গানের মেলা
-
স্থানীয় শিল্পী ও হস্তশিল্পীদের পণ্য প্রদর্শনের জন্য হ্যান্ডিক্রাফ্ট মেলা অনুষ্ঠিত হয়
এই আয়োজনের মাধ্যমে স্থানীয় অর্থনীতি ও কমিউনিটির সংহতি বৃদ্ধি পায়। প্রতিটি প্যান্ডেল ও অনুষ্ঠান স্থানীয় সংস্কৃতির অনন্য দিক তুলে ধরে।
ডিজিটাল যুগে ভার্চুয়াল উদ্বোধনের গুরুত্ব
আজকের দিনে ভার্চুয়াল উদ্বোধন প্রথাগত পদ্ধতির সাথে প্রযুক্তি মেলানোর মাধ্যমে দুর্গাপুজোকে আরও সহজ, নিরাপদ এবং বিস্তৃত করেছে।
-
দূর থেকে সব পুজোর একসাথে উদ্বোধন সম্ভব।
-
করোনা বা অন্যান্য ঝুঁকির সময়ও উৎসবের আনন্দ সকলের ঘরে পৌঁছায়।
-
ডিজিটাল মাধ্যমে দেশের অন্য অংশের মানুষও অংশ নিতে পারে 💻।
ভার্চুয়াল উদ্বোধনের মাধ্যমে দুর্গাপুজোর ঐতিহ্য বজায় রেখে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সবাইকে উৎসবে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
উপসংহার
পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলে এবারের দুর্গাপুজো উদযাপিত হয়েছে আনন্দ, মিলন ও ভক্তির সঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভার্চুয়াল উদ্বোধন উৎসবকে আরও বিশেষ করেছে। 😍
উৎসবের সময় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের নজরদারি নিশ্চিত করেছে যে প্রতিটি মানুষ নিরাপদে আনন্দ উপভোগ করতে পারবে।
স্থানীয় কমিটি, জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষ মিলিত হয়ে শারদোৎসবের আনন্দ ছড়িয়ে দিয়েছেন।
প্রতিটি বাড়ি, প্রতিটি প্যান্ডেল আজ আনন্দের আলোয় ঝলমল করছে। দুর্গাপুজো শুধু ধর্মীয় নয়, এটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, সামাজিক মিলন ও কমিউনিটির শক্তির প্রতীক। 🪔💛