বিজেপি বিধায়ক হামলার প্রতিবাদে পাড়া ব্লকে বিক্ষোভ।

বিজেপি বিধায়কদের উপর বিধানসভায় অমানবিক হামলার অভিযোগে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। 

এই ঘটনার প্রতিবাদে পাড়া ব্লকে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। 

পাহাড়ীগোড়া মোড় এবং পাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অনুষ্ঠিত হয় মিছিল, প্রতীকি পথ অবরোধ এবং টায়ার জ্বালানোর মতো কর্মসূচি। 

বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী নেতারা জানান, গণতন্ত্র রক্ষার জন্য এই লড়াই চলবে এবং ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন। 

পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিলেও রাজনৈতিক উত্তেজনা দীর্ঘক্ষণ বজায় থাকে। বিস্তারিত জানতে পড়ুন সম্পূর্ণ প্রতিবেদন।


bjp bidhayok hamla para block bikshov

📰 বিজেপি বিধায়ক হামলার প্রতিবাদে পাড়া ব্লকে বিক্ষোভ উত্তাল

📍 পাড়া, পুরুলিয়া:

পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে বৃহস্পতিবার ঘটে যাওয়া এক ঘটনা রাজ্যজুড়ে তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। 

বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কদের উপর হামলার অভিযোগকে কেন্দ্র করে সারা রাজ্যে ক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠেছে। 

বিজেপি দাবি করেছে, এই হামলা শুধুমাত্র শারীরিক আঘাত নয়, এটি গণতন্ত্রের উপর এক মারাত্মক আঘাত। 

বিধানসভা যেখানে নীতি ও শালীনতার প্রতীক হওয়ার কথা, সেখানে এমন অমানবিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহল পর্যন্ত হতবাক। 

হামলার অভিযোগ উঠেছে পাড়া বিধানসভার জনপ্রিয় নেতা চাঁদ বাউরী এবং শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের উপর। 

তাঁদের উপর যে ধরণের হেনস্থা ও আক্রমণ করা হয়েছে, তা রাজনৈতিক সৌজন্যের সীমা লঙ্ঘন করেছে। 

এই ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপি শুক্রবার পাড়া ব্লকে বিশাল বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয়। এলাকার মানুষজনও এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। 

পাহাড়ীগোড়া মোড় ও পাড়া বাসস্ট্যান্ডে জনসমাবেশে মুখরিত হয়ে ওঠে ক্ষোভ ও প্রতিবাদের স্লোগান। 

এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিজেপি জানিয়ে দেয় যে তারা পিছপা হবে না এবং গণতন্ত্র রক্ষার জন্য যেকোনও লড়াই করতে প্রস্তুত।


পাড়া ব্লকে উত্তাল জনতা ও বিক্ষোভের দৃশ্যপট

শুক্রবার বিকেল ঠিক পাঁচটা বাজতেই পাড়া ব্লকের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা জমায়েত হতে শুরু করেন। 

মন্ডল ৩ ও মন্ডল ৪ এর উদ্যোগে বিশাল কর্মসূচি সংগঠিত হয়। পাহাড়ীগোড়া মোড় এবং পাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিক্ষোভকারীরা প্রথমে মিছিল বের করেন। 

হাতে বিজেপির পতাকা, পোস্টার, প্ল্যাকার্ড – সর্বত্র শোনা যাচ্ছিল স্লোগান, "গণতন্ত্র বাঁচাও", "শাসক দলের অত্যাচার বন্ধ করো"। 

মিছিল শেষে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতীকি পথ অবরোধ শুরু হয়। ধোঁয়ায় ভরে যায় চারপাশের পরিবেশ, আর স্লোগানের গর্জনে কেঁপে ওঠে রাস্তা। 

বিক্ষোভকারীদের মতে, এই কর্মসূচি ছিল সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রথম ধাপ। তাঁদের দাবি, গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে শাসক দল। 

যদি এর বিরুদ্ধে এখনই আওয়াজ তোলা না হয়, তবে আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। 

পাহাড়ীগোড়া মোড়ের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন মন্ডল সভাপতি জয়দেব মন্ডল ও সাধারণ সম্পাদক দীনেশ চৌধুরী। 

অন্যদিকে পাড়া বাসস্ট্যান্ডে ছিলেন মন্ডল সভাপতি শিব শম্ভু বাউরী, জেলা কমিটির সদস্য টোটন মুখার্জি, স্বপন রায়, খোকন বাউরী, জেনারেল সেক্রেটারি সহদেব বাউরী এবং আরও অনেক বিজেপি নেতা-কর্মী। তাঁদের বক্তব্য অনুযায়ী, এই আন্দোলন কেবল শুরু, আগামী দিনে আরও বৃহত্তর কর্মসূচি দেখা যাবে।


🔍 বিধানসভায় হামলার অভিযোগ এবং রাজনীতির রণক্ষেত্র

এই ঘটনার নেপথ্যে কী? বিজেপির দাবি অনুযায়ী, বৃহস্পতিবারের হামলা ছিল একেবারেই পরিকল্পিত। 

শাসক দলের তরফ থেকে বিরোধী কণ্ঠস্বরকে দমন করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে। 

বিধানসভা, যা রাজ্যের গণতন্ত্রের অন্যতম প্রধান মঞ্চ, সেখানে বিরোধী দলের বিধায়কদের উপর আক্রমণ চালানো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য এক লজ্জাজনক অধ্যায়। 

বিজেপি নেতাদের মতে, এই হামলার মধ্য দিয়ে রাজ্যের সরকার তাদের প্রকৃত চেহারা প্রকাশ করেছে। 

বিরোধী দলনেতা সহ পাঁচজনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে, যা আরও এক ধাপ বিতর্ক বাড়িয়েছে। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতির সমীকরণ আরও জটিল হতে চলেছে। 

বিজেপি এই ইস্যুকে সামনে রেখে আগামী দিনে শাসক দলের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলতে চাইবে। 

অন্যদিকে শাসক দল এই অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা যুক্তি দিচ্ছে। তবে সাধারণ মানুষ মনে করছে, গণতন্ত্রের মধ্যে যদি বিরোধী দলের নেতারাও নিরাপদ না থাকেন, তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?


🚧 পথ অবরোধ, যানজট ও সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া

বিক্ষোভের অংশ হিসেবে পাহাড়ীগোড়া মোড় এবং পাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করা হয়। 

এই অবরোধের জেরে প্রায় আধঘণ্টার জন্য যান চলাচল সম্পূর্ণভাবে ব্যাহত হয়। রাস্তায় আটকে পড়ে বহু যানবাহন, যাত্রীদের মধ্যে দেখা দেয় চরম ভোগান্তি। 

তবে বিজেপি কর্মীদের মতে, সাধারণ মানুষ তাঁদের এই আন্দোলনের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন, কারণ এটি কেবল একটি দলের আন্দোলন নয়, এটি গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই। 

পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয় এবং ধীরে ধীরে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। 

তবুও রাজনৈতিক উত্তেজনা এতটাই তীব্র ছিল যে এলাকা জুড়ে দীর্ঘ সময় ধরে চাঞ্চল্য বজায় থাকে। 

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন যে, তাঁরা গণতন্ত্রের পক্ষে হওয়ায় এই প্রতিবাদকে সমর্থন করেছেন, যদিও যানজটের কারণে কিছুটা অসুবিধা হয়েছে।


📢 নেতাদের বক্তব্য এবং ভবিষ্যতের আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উপস্থিত নেতারা স্পষ্ট জানিয়েছেন যে এই আন্দোলন কেবল শুরু। 

তাঁদের দাবি, হামলার সঙ্গে জড়িত সকলকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে এবং বিধানসভায় ঘটে যাওয়া ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। 

যদি তা না হয়, তবে আগামী দিনে আরও বৃহত্তর কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে। নেতারা আরও বলেছেন যে, গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে জনগণকে রাস্তায় নামতেই হবে। 

বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা যে দৃঢ় সংকল্প নিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন, তা বোঝায় যে তাঁদের পিছু হটার কোনও সুযোগ নেই।

রাজনৈতিক মহলের মতে, এই ঘটনা রাজ্যজুড়ে বিজেপিকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে পারে।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url