সরবড়ি সার্বজনীন দুর্গাপুজো খুঁটি পুজো সম্পন্ন হলো।
🎉পুরুলিয়ার সরবড়িতে সাড়ম্বরে সম্পন্ন হলো সার্বজনীন দুর্গাপুজোর খুঁটি পুজো। ঢাকের বাদ্যি, ভক্তিমুখর পরিবেশ ও বিশেষ থিম মণ্ডপে এবার দর্শনার্থীদের জন্য থাকছে চমক। জেনে নিন বিস্তারিত খবর।
🙏 উৎসবের সূচনা: খুঁটি পুজোর মাহাত্ম্য
নিতুড়িয়া অঞ্চলের সরবড়িতে প্রতিবছর দুর্গাপুজোর সূচনা হয় ঐতিহ্যবাহী খুঁটি পুজোর মাধ্যমে। ✨
হিন্দু ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, খুঁটি পুজো মানেই মণ্ডপ নির্মাণের সূচনা। ঢাকের কাঠি পড়া মানেই দেবী দুর্গার আগমনবার্তা পৌঁছে যায় প্রতিটি ঘরে ঘরে।
এই পুজোর অন্যতম বিশেষ দিক হলো—এখানে শুধু হিন্দু নয়, সব ধর্মের মানুষ একত্রিত হয়ে আনন্দ ভাগ করে নেন। 🕌⛪🕉️ এটি প্রকৃত অর্থেই সর্বধর্ম সমন্বয়ের এক অনন্য উদাহরণ।
🎉 সরবড়ি সার্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির উদ্যোগ
প্রতিবছরের মতো এবছরও সরবড়ি শিব মন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজিত হলো খুঁটি পুজো। উপস্থিত ছিলেন দুর্গাপুজো কমিটির সভাপতি পূর্ণচন্দ্র বাউরি, যিনি শিব মন্দিরে পূজা দিয়ে খুঁটি পুজোর সূচনা করেন।
তাঁর সঙ্গে ছিলেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সদস্যা সন্তোষি দত্ত বাউরি, এবং কমিটির অন্যান্য সদস্যরা।
সবাই মিলে গানে, ঢাকে, শঙ্খধ্বনিতে ভক্তিমুখর পরিবেশে শুরু করলেন এই বছরের ২২তম সরবড়ি সার্বজনীন দুর্গাপুজো।
🌸 সভাপতির বক্তব্য
পূর্ণচন্দ্র বাউরি বলেন—
“অন্যান্য বছরের মতো এবছরও আমরা সবার সহযোগিতায় পুজোর সূচনা করলাম। এবছর আমাদের থিম হলো প্রাচীন কাল্পনিক মন্দির। আশা করছি দর্শনার্থীরা দূর দূরান্ত থেকে আসবেন এবং মণ্ডপসজ্জা দেখে মুগ্ধ হবেন।”
তিনি আরও যোগ করেন—
“প্রতিবছরই আমরা রাজ্য সরকারের শারদ সন্মান পেয়েছি। এবছরও আমরা সেই পুরস্কারের প্রত্যাশা করছি। আমাদের লক্ষ্য হলো মানুষকে আরও সুন্দর ও ভিন্ন কিছু উপহার দেওয়া।”
🏛️ এবছরের বিশেষ থিম: প্রাচীন কাল্পনিক মন্দির
সরবড়ি সার্বজনীন দুর্গাপুজোর অন্যতম আকর্ষণ হলো চমকপ্রদ থিম। এবছরের থিম “প্রাচীন কাল্পনিক মন্দির”, যেখানে পুরাণ, ঐতিহ্য ও স্থাপত্যের সমন্বয় ঘটানো হচ্ছে।
এই থিমের মাধ্যমে কমিটি শুধু শিল্পকলা নয়, বরং ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির গৌরব ফুটিয়ে তুলতে চাইছে। দর্শনার্থীদের জন্য এটি হবে এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা।
🎶 পরিবেশের আবহ
ঢাকের বাজনা, শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি ও মানুষের উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছিল শিব মন্দির প্রাঙ্গণ। 🌺 শিশু থেকে বয়স্ক—সবাই সমানভাবে অংশ নিলেন এই খুঁটি পুজোয়।
সন্ধ্যায় স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলির পরিবেশনা ছিল অতিরিক্ত আকর্ষণ। গান, নাচ ও নাটকের মাধ্যমে দুর্গাপুজোর আবহ আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। 🎤💃
🤝 সর্বধর্ম সমন্বয়ের প্রতীক
এই পুজো শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মের সীমায় আবদ্ধ নয়। সরবড়ির মানুষ একে মিলনমেলা হিসেবে দেখেন।
হিন্দু, মুসলিম, আদিবাসী, খ্রিস্টান—সবাই মিলে দুর্গাপুজোকে লোকোৎসবে পরিণত করেন।
এটি প্রমাণ করে যে ধর্ম আলাদা হলেও আনন্দ একটাই—মা দুর্গার আগমন। 🌍❤️
🏆 পুরস্কারপ্রাপ্তির আশায়
পূর্বের মতো এবছরও সরবড়ি দুর্গাপুজো কমিটি রাজ্য সরকারের শারদ সন্মান অর্জনের প্রত্যাশায় আছে। 🏅
মণ্ডপসজ্জা, মূর্তি ও থিমের অভিনবত্ব এই কমিটিকে বারবার সম্মান এনে দিয়েছে। এবছরের থিমের মাধ্যমে আবারও তারা নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চলেছে।
🌐 পর্যটন ও অর্থনৈতিক দিক
সরবড়ির দুর্গাপুজো শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক নয়, এটি স্থানীয় অর্থনীতিরও বড় উৎস।
-
স্থানীয় শিল্পীরা কাজের সুযোগ পান।
-
হস্তশিল্প ও মণ্ডপ নির্মাণে গ্রামের মানুষ কর্মসংস্থান পান।
-
দূর দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা এসে স্থানীয় ব্যবসা যেমন খাবারের দোকান, হোটেল, পোশাকের দোকান প্রভৃতিতে উপার্জনের সুযোগ করে দেন।
এভাবে দুর্গাপুজো হয়ে ওঠে অর্থনৈতিক উন্নয়নেরও বাহক। 💰
✅ উপসংহার
সরবড়ি সার্বজনীন দুর্গাপুজো শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়—এটি হলো আনন্দ, ঐক্য ও সংস্কৃতির প্রতীক। 🌸
খুঁটি পুজোর মাধ্যমে দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা এখন সবার ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে। আগামী দিনে এই উৎসব হবে আরও জমজমাট, আরও বর্ণময়।