রঘুনাথপুরে নজরুল প্রয়াণ দিবস উদযাপন।

রঘুনাথপুরে শাঁকা হাইস্কুলে কবি নজরুল ইসলামের প্রয়াণ দিবস পালিত হল। আলোচনাসভা, আবৃত্তি, সংগীত ও নৃত্যের মাধ্যমে স্মরণ করা হল বিদ্রোহী কবিকে।


nazrul prayan dibas

নজরুল প্রয়াণ দিবস রঘুনাথপুরে পালিত: কবি স্মরণে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

📅 তারিখ: ২৯ আগস্ট
📍 স্থান: শাঁকা হাইস্কুল প্রাঙ্গণ, রঘুনাথপুর


💠 অনুষ্ঠানের সূচনা ও পরিবেশ

রঘুনাথপুরের আকাশে ছিল এক অনন্য আবেগময় পরিবেশ। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে শাঁকা হাইস্কুল প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় একটি স্মরণীয় অনুষ্ঠানের।

অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছিল রঘুনাথপুর মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর। সকাল থেকেই অনুষ্ঠানের আবহে ভরে উঠেছিল স্কুল চত্বর। 

প্রধান মঞ্চে সাজানো ছিল কবি নজরুলের প্রতিকৃতি, পাশে জ্বলছিল প্রদীপের আলো।

✔️ অনুষ্ঠানের সূচনা হয় মাল্যদান ও প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে।
✔️ উপস্থিত ছিলেন মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক সায়ন ঘোষ, স্থানীয় শিক্ষাবিদ, কবি, সাহিত্যপ্রেমী ও বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ।


💠 কবিকে স্মরণ – আলোচনাসভা ও বক্তব্য

অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল আলোচনাসভা, যেখানে বক্তারা নজরুলের জীবনদর্শন ও সাহিত্যকীর্তির উপর আলোকপাত করেন।

👉 বক্তাদের বক্তব্যে উঠে আসে কবির মানবতা, সাম্যবাদ ও বিদ্রোহী চেতনার বার্তা
👉 তারা বলেন, নজরুল শুধু কবি নন, তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িকতার প্রতীক এবং সমাজে সমতার কণ্ঠস্বর।

একজন বক্তার আবেগঘন উক্তি –

"নজরুল ছিলেন গানের স্রষ্টা, কবিতার বিদ্রোহী, আর মানুষের মুক্তির পথপ্রদর্শক। তাঁর চেতনা আজও আমাদের অনুপ্রাণিত করে।"


💠 আবৃত্তি, সংগীত ও নৃত্যের সমন্বয়ে সংস্কৃতি

কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করে –

🎤 নজরুলের গান
📖 কবিতা আবৃত্তি
💃 নৃত্য পরিবেশনা

শিশুদের কণ্ঠে যখন শোনা যায় "চল্ চল্ চল্", তখন উপস্থিত সবাই করতালিতে ভরে দেন মঞ্চ। দর্শকদের চোখে ছিল আনন্দের ঝিলিক, আবার কবির প্রয়াণের স্মরণে ছিল গভীর আবেগও।


💠 নজরুলের আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া

তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে –

"এই ধরনের উদ্যোগ নতুন প্রজন্মকে নজরুলের চেতনা ও আদর্শের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। কবির লেখা, তাঁর সংগ্রামী মনোভাব তরুণদের জীবন গঠনে সহায়ক হবে।"

✔️ এই আয়োজনের মাধ্যমে নজরুলের মানবতাবাদ, সমতার বার্তা ও দেশপ্রেম আবারও মানুষের হৃদয়ে জাগরিত হলো।
✔️ অনুষ্ঠান শেষে সবাই একবাক্যে প্রতিশ্রুতি নিলেন, নজরুলের চিন্তা ও চেতনা ভবিষ্যতেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে।


কাজী নজরুল ইসলাম: কেন তিনি আজও প্রাসঙ্গিক?

অনুষ্ঠানে বক্তারা শুধু নজরুলকে স্মরণই করেননি, বরং তাঁর প্রাসঙ্গিকতা নিয়েও আলোচনা করেছেন।

🔹 বিদ্রোহী কবি ও সমাজ পরিবর্তনের কণ্ঠস্বর

নজরুলের কলমে উঠে এসেছে –

✔️ সাম্য ও ন্যায়বিচারের ডাক
✔️ ধর্মনিরপেক্ষতার বার্তা
✔️ অত্যাচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ

আজকের দিনে যখন সমাজে বিভাজন ও হিংসার আগুন জ্বলছে, তখন নজরুলের কবিতা যেন আশার আলো দেখায়।


নজরুলের প্রতি শ্রদ্ধা – আবেগে ভরা মুহূর্ত

অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বাজানো হয় নজরুলের গান – "ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এল খুশির ঈদ", যা শুনে অনেকের চোখে জল এসে যায়।

শিক্ষার্থীদের আবৃত্তি ও গান অনুষ্ঠানকে করে তোলে প্রাণবন্ত। কবির প্রতিকৃতির সামনে দাঁড়িয়ে উপস্থিত সবাই এক মুহূর্ত নীরবতা পালন করেন।


💠 আগামী দিনের বার্তা

অনুষ্ঠান শেষে সবার কণ্ঠে একটাই প্রতিশ্রুতি –

"আমরা নজরুলকে শুধু স্মরণ করব না, তাঁর আদর্শকে জীবনে ধারণ করব।"

✔️ তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে ভবিষ্যতেও এ ধরনের অনুষ্ঠান হবে বলে জানানো হয়েছে।


নজরুল প্রয়াণ দিবস উদযাপন: সাংস্কৃতিক পরিচয়ের অঙ্গ

নজরুল শুধু সাহিত্যিক নন, তিনি ছিলেন আমাদের সংস্কৃতির প্রাণ। 

✔️ তাঁর গান আমাদের শেখায় অসাম্প্রদায়িকতা
✔️ তাঁর কবিতা আমাদের দেয় সংগ্রামের অনুপ্রেরণা
✔️ তাঁর জীবন আমাদের শেখায় ভালোবাসা ও মানবতার শক্তি

আজকের অনুষ্ঠানে সেই বার্তাই নতুন করে ছড়িয়ে পড়ল রঘুনাথপুরে।


📌 অনুষ্ঠানের বিশেষ দিকগুলো এক নজরে

✅ মাল্যদান ও প্রদীপ প্রজ্বালন দিয়ে সূচনা।
✅ আলোচনাসভায় নজরুলের জীবনদর্শন ও আদর্শের উপর আলোকপাত।
✅ শিক্ষার্থীদের কবিতা আবৃত্তি, সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনা।
✅ স্থানীয় শিক্ষাবিদ, সাহিত্যপ্রেমী ও বিশিষ্ট নাগরিকদের উপস্থিতি।
✅ তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে আগামী প্রজন্মের কাছে নজরুলের আদর্শ পৌঁছে দেওয়ার বার্তা।


শেষ কথা

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম শুধু একজন সাহিত্যিক নন, তিনি ছিলেন স্বাধীনতা, সাম্য, মানবতা এবং ভালোবাসার প্রতীক। 

তাঁর গান, কবিতা এবং সৃষ্টিশীল চিন্তা আমাদের জাতির সম্পদ। আজকের প্রয়াণ দিবসে রঘুনাথপুরের এই অনুষ্ঠান প্রমাণ করে, সময় যতই বদলাক না কেন, নজরুলের আদর্শ আজও সমান প্রাসঙ্গিক।

👉 নজরুলের চেতনা যদি আমরা নিজেদের জীবনে ধারণ করতে পারি, তবে সমাজে সত্যিকারের মানবতা ও সমতার আলো ছড়িয়ে পড়বে। 

রঘুনাথপুরের এই উদ্যোগ তাই শুধু এক দিনের অনুষ্ঠান নয়, বরং আগামী প্রজন্মের জন্য এক মহান বার্তা।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url