পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামে মোবাইল স্বাস্থ্য পরিষেবা শুরু।

পুরুলিয়ার ছয়টি বিধানসভায় শুরু হলো মোবাইল মেডিক্যাল ইউনিট পরিষেবা। আধুনিক সরঞ্জামসহ সরকার পরিচালিত এই পরিষেবা পৌঁছবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রবিহীন এলাকায়।

purulia mobile health service

পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামে এবার সরাসরি পৌঁছে যাচ্ছে চিকিৎসা পরিষেবা। রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর নতুনভাবে শুরু করল ‘দুয়ারে হাসপাতাল’ নামের মোবাইল স্বাস্থ্য ইউনিট পরিষেবা। 

কয়েক বছর আগে জঙ্গলমহলে ভ্রাম্যমাণ স্বাস্থ্য পরিষেবা চালু হলেও মাঝপথে তা বন্ধ হয়ে যায়। এবার আরও পরিকল্পিতভাবে এবং সরকারি তত্ত্বাবধানে ফের শুরু হল এই পরিষেবা।

প্রথম দফায় পুরুলিয়ার ছ’টি বিধানসভা—বান্দোয়ান, বাঘমুন্ডি, বলরামপুর, জয়পুর, কাশিপুর ও পাড়া—এই পরিষেবার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার হুড়ার বিশপুরিয়া থেকে এই প্রকল্পের সূচনা করেন রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু। 

পাশাপাশি বান্দোয়ান, বাঘমুন্ডি ও পাড়ার আরও কয়েকটি এলাকাতেও উদ্বোধন হয় মোবাইল ইউনিটের।

এই স্বাস্থ্য ভ্যানগুলিতে থাকবে আধুনিক যন্ত্রপাতি, ছোট ল্যাব টেস্টের সুবিধা, মা ও শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা এবং সাধারণ রোগের চিকিৎসা। 

সোম থেকে শনিবার সকাল ৯:৩০টা থেকে শুরু হবে পরিষেবা। কোথায় ক্যাম্প বসবে, তা এক মাস আগেই জানিয়ে দেওয়া হবে।

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ অশোক বিশ্বাস জানান, যেসব এলাকায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই বা ডাক্তার নেই—সেই জায়গাগুলিই অগ্রাধিকার পাবে। ক্যাম্প পরিচালনার দায়িত্ব পঞ্চায়েত নেবে। 

ওষুধ সরবরাহ, নজরদারি ও পরিচালনার জন্য জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধান থাকবে। ভ্যানে জিপিএস থাকায় পুরো পরিষেবা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

তবে এই প্রকল্প নিয়ে কিছু প্রশ্নও উঠছে। যুব তৃণমূল নেতা অভয় মাহাতো জানান, ১৭টি ব্লকের জন্য মাত্র ৮টি মোবাইল ভ্যান যথেষ্ট নয়। রঘুনাথপুর মহকুমা বাদ পড়ায় অসন্তোষ বাড়ছে। 

পাশাপাশি ড্রাইভার, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ও ল্যাব টেকনিশিয়ানসহ বহু পদ খালি থাকায় পরিষেবা স্বাভাবিকভাবে চালানো কতটা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

তাঁর অভিযোগ, গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে কর্মী তুলে মোবাইল ইউনিটে পাঠানো হলে সেখানে প্রতিদিন যে ১৫০–২০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন, তাঁদের পরিষেবা ব্যাহত হবে। 

অনেক সময় ক্যাম্পে রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও হাসপাতালে চিকিৎসা চাপ বেশি থাকে। সব মিলিয়ে আশা ও সংশয়ের মাঝেই শুরু হল পুরুলিয়ার ‘দুয়ারে হাসপাতাল’ উদ্যোগ। 

এবার দেখার, এই পরিষেবা সত্যি কি মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য পৌঁছে দিতে পারে, নাকি আগের প্রকল্পের মতো মাঝপথেই থমকে যাবে।

Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url