পড়ুয়া ১৬২, শিক্ষক মাত্র একজন।
পুরুলিয়ার বরাবাজার ব্লকের ডিগারডি নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ে ১৬২ পড়ুয়ার জন্য মাত্র একজন শিক্ষক। স্কুলের শিক্ষা ব্যবস্থায় চরম সংকট। কবে মিলবে সমাধান? পড়ুন বিস্তারিত।
পুরুলিয়া জেলার বরাবাজার ব্লকের ডিগারডি নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের চিত্র এখন অত্যন্ত চিন্তার। এখানে মোট পড়ুয়ার সংখ্যা ১৬২ জন, কিন্তু শিক্ষক মাত্র একজন।
সেই একজন শিক্ষক দিয়েই চলছে সমস্ত পঠন-পাঠন, মিড-ডে-মিলের তদারকি, প্রশাসনিক কাজসহ প্রতিদিনের স্কুল কার্যক্রম।
স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়টি বহুদিন ধরেই শিক্ষক সংকটে ভুগছে। বহু শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের একসঙ্গে বসিয়ে ক্লাস নেওয়া ছাড়া কোনো পথ খোলা নেই।
কখনো এক ঘরে পাঠদান, আবার কখনো অন্য ঘরে গিয়ে পড়াতে হয়। একই সঙ্গে মিড-ডে-মিলের কাজও নজর রাখতে হয় সেই একমাত্র শিক্ষককেই। ফলে শিক্ষার মানের উপর বড় চাপ পড়ছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক বামাপদ বাউরি জানান, তিনি ২০২৪ সালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেই সময় সেখানে আর একজন শিক্ষক ছিলেন।
দুজন শিক্ষক নিয়ে তখনও কোনোরকমে পড়াশোনা চলছিল। কিন্তু গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সেই শিক্ষক বদলি হয়ে যান। এরপর থেকে তিনিই একাই ১৬২ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে স্কুল সামলাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, “এতো ছাত্রছাত্রী নিয়ে একা সামলানো খুব কঠিন। কখনো বাচ্চারা নিজেদের মধ্যে মারামারি করে, কখনো দুর্ঘটনা ঘটে। সব সামলাতে আমার সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তবুও চেষ্টা করছি যেন পড়াশোনা বন্ধ না হয়।”
অন্যদিকে গ্রামবাসীরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, দুজন শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও পরিস্থিতি কঠিন ছিল, আর এখন একজন দিয়ে কীভাবে একটি পুরো স্কুল চালানো সম্ভব? শিক্ষক অফিসিয়াল কাজে স্কুলের বাইরে গেলে পুরো স্কুলই থেমে যায়।
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, জেলায় এক শিক্ষক বিশিষ্ট বিদ্যালয়গুলির তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
অন্যান্য স্কুল থেকে সারপ্লাস শিক্ষক এনে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। যদিও কয়েকটি সংগঠন তালিকা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে, ফলে তালিকা পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে।
অতএব, শিক্ষক সংকট সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এই বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের উন্নত শিক্ষা অধরাই রয়ে যাচ্ছে। এখন সকলের একটাই আশা— খুব দ্রুত আরও শিক্ষক নিয়োগ হোক এবং শিশুদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত হোক।
