পুরুলিয়া পুরসভা ভাঙার সম্ভাবনা?
নোংরা-অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতি, জল ও নিকাশির সমস্যা নিয়ে রাজ্যের শো-কজ নোটিশে চাপে পুরুলিয়া পুরসভা। ৭ দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা চাইলো সরকার।
পুরুলিয়া শহরে বর্তমানে তীব্র প্রশাসনিক উত্তেজনা। রাজ্যের নগরোন্নয়ন ও পৌর দপ্তর সরাসরি শো-কজ নোটিশ পাঠিয়েছে পুরুলিয়া পুরসভাকে।
অভিযোগ— শহরের মানুষের ন্যূনতম পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রেও নাকি ব্যর্থ কাউন্সিলাররা। তাই প্রশ্ন উঠেছে, পুরুলিয়া পুরবোর্ড ভেঙে দেওয়া হবে কি?
জানা গেছে, চলতি মাসের ৩ তারিখে শহরের সাধারণ বাসিন্দারা গণস্বাক্ষর-সহ একটি অভিযোগপত্র জমা দেন দপ্তরে।
সেই অভিযোগে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে— শহরে নিকাশি ব্যবস্থা ভয়াবহ, নিয়মিত জল সরবরাহ নেই, সাফাই ব্যবস্থাও অত্যন্ত খারাপ।
রাস্তাঘাটে সর্বত্র আবর্জনা ছড়িয়ে রয়েছে, ফলে বাড়ছে দুর্গন্ধ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি। অভিযোগ যাচাই করে দপ্তর দাবি করেছে— বেশ কিছু অসঙ্গতির প্রমাণ মিলেছে।
ঠিক তার পরেই পশ্চিমবঙ্গ পৌর আইন ১৯৯৩–এর ৪৩১(১) ধারায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ১৯ নভেম্বর দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির সই করা সেই নোটিশ পৌঁছেছে পুরুলিয়া পুরসভায়।
নিয়ম মেনে প্রতিটি কাউন্সিলারের হাতে সেই চিঠি তুলে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের সাত দিনের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে— কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তাঁদের বিরুদ্ধে?
এই ঘটনার পরই উত্তেজনা ছড়িয়েছে পুরসভা চত্বরে। জানা গেছে, আগামী সোমবার কাউন্সিলারদের বিশেষ বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানেই নির্ধারিত হবে সরকারের শো-কজের জবাব।
রাজনৈতিক মহলেও জল্পনার ঝড়। অনেকেই বলছেন, আসল লক্ষ্য নাকি পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি।
তাঁর বিকল্প নেই বলে সরাসরি তাঁকে অপসারণ কঠিন, তাই হয়তো বোর্ড ভেঙে প্রশাসক বসাতে চাইছে সরকার। তবে নবেন্দু মাহালি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
শো-কজ নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়েছে— শহরের বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা আবর্জনার কারণে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া বিস্তারের ঝুঁকি বেড়েছে। ফলে কার্যত চাপে পড়েছেন পুরবোর্ডের শীর্ষ আধিকারিক থেকে সাধারণ কাউন্সিলাররা।
আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই পরিষ্কার হবে— পুরুলিয়া শহরের পুরবোর্ড টিকে থাকবে, না কি প্রশাসনিক কর্তৃত্বে আসবে নতুন পরিবর্তন।
