বরাবাজারে বেআইনি বাড়ি ভাঙল বন দফতরে।

পুরুলিয়ার বরাবাজারে বন দফতরের বড় অভিযান 🌳। কংসাবতী দক্ষিণ বন বিভাগের উদ্যোগে আগাঝোর মৌজায় বনভূমির উপর গজিয়ে ওঠা এক বেআইনি বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে। 

স্থানীয় যৌথ বন পরিচালন কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে এই অভিযান চালানো হয়। বন দফতর জানিয়েছে, বনভূমি দখল বা অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে তাদের কড়া নজরদারি চলবে। 

ডিএফও পূরবী মাহাত বলেন, বন ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণে এই ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

🌱 এই পদক্ষেপে এলাকাবাসীর সমর্থনও মিলেছে, যা পরিবেশ রক্ষায় নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। 🌿


barabazar bon doftor abhijan

🌳 বরাবাজারে বন দফতরের অভিযান বেআইনি বাড়ি ভাঙল আগাঝোরে

পুরুলিয়ার বরাবাজারে আবারও দৃঢ় পদক্ষেপ নিল বন দফতর। বৃহস্পতিবার দুপুরে কংসাবতী দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন বরাবাজার রেঞ্জের আগাঝোর মৌজায় এক বেআইনি বাড়ি ভেঙে ফেলে বন দফতরের দল। 

এই অভিযান কেবল একটি নির্মাণ ভাঙার ঘটনা নয়, এটি ছিল প্রকৃতি ও আইনের পক্ষে এক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান। 

গত কয়েক বছর ধরে পুরুলিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে বনভূমি দখল করে বসতবাড়ি তৈরির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যা পরিবেশ ও বন্যপ্রাণীর জন্য বিপজ্জনক। 🌿 এবার বন দফতর সেই অবৈধ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা পাঠাল।

অভিযানের দিন দুপুর থেকেই এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়। বনকর্মীরা এসে এলাকাটি ঘিরে ফেলেন এবং মেশিন এনে বাড়িটি ভেঙে ফেলেন। 

স্থানীয়রা এই দৃশ্য দেখে বুঝে নেন, বনভূমির জমি দখল আর সহ্য করা হবে না। উপস্থিত বনকর্মীরা জানান, বনভূমি হলো সরকারি সম্পদ, যা রক্ষা করা আমাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব। 

দখলদাররা যেভাবে গাছ কেটে ও জমি দখল করে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে, তা ভবিষ্যতের জন্য বড় বিপদ। 

তাই এই অভিযানের মাধ্যমে প্রশাসন স্পষ্ট করে দিল — বন রক্ষার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় নেই। 🌾


🏡 আগাঝোরে বেআইনি নির্মাণের শুরু ও তদন্তের বিবরণ

সূত্র অনুযায়ী, সিন্দরি বিটের অন্তর্গত আগাঝোর গ্রামে এক ব্যক্তি সম্প্রতি বনভূমির ভেতরে বাড়ি নির্মাণ শুরু করেন। প্রথমে কাজটি ছোট আকারে চললেও ধীরে ধীরে পাকা কাঠামো দাঁড়াতে শুরু করে। 

আশেপাশের মানুষরা বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলে স্থানীয় যৌথ বন পরিচালন কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি যাচাই করেন। দেখা যায়, বাড়ির অর্ধেক অংশ বনভূমির মধ্যে পড়েছে। তারা অবিলম্বে বন দফতরের বরাবাজার রেঞ্জ অফিসে খবর দেন। 🌱

বন দফতরের পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে একটি নোটিস পাঠানো হয় এবং তাকে জমির নথি পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। 

তদন্তে স্পষ্ট প্রমাণ মেলে যে, ওই এলাকা সরকারি বনভূমির অংশ এবং সেখানে কোনও ব্যক্তিগত নির্মাণ অনুমোদিত নয়। 

এরপর বন দফতর ফের একটি নোটিস পাঠিয়ে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নির্মাণ সরানোর নির্দেশ দেয়। কিন্তু সতর্কবার্তা উপেক্ষা করে ওই ব্যক্তি নির্মাণকাজ চালিয়ে যান। আইন অমান্য করার ফলে বন দফতর বাধ্য হয় অভিযানে নামতে।

এই ঘটনাটি দেখিয়ে দিল, এখনও অনেকেই বন আইনের কঠোরতা সম্পর্কে সচেতন নন। 

কিন্তু প্রশাসন এখন জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে, যা ভবিষ্যতে অবৈধ নির্মাণ রোধে কার্যকর হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। 🏡


🚜 নির্দেশ অমান্য করার পর বন দফতরের অভিযান

বৃহস্পতিবার দুপুরে বন দফতরের একাধিক আধিকারিক ও কর্মী নিয়ে আগাঝোরে অভিযান শুরু হয়। স্থানীয় যৌথ বন পরিচালন কমিটির সদস্যরা উপস্থিত থেকে বনকর্মীদের সহযোগিতা করেন। 

অভিযানের শুরুতেই জমি জরিপ করা হয় এবং বনভূমির সীমানা নির্ধারণ করা হয়। এরপর মেশিনের সাহায্যে বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলা হয়। 

এই সময় আশেপাশের মানুষরা ঘটনাস্থলে ভিড় করেন এবং বন দফতরের কঠোর পদক্ষেপকে সমর্থন জানান। 🌿
 

বন দফতরের এক কর্মী বলেন, “আমরা কাউকে শত্রু মনে করে ভাঙতে আসিনি। আমাদের লক্ষ্য শুধু বনভূমিকে মুক্ত করা।”

 তিনি আরও জানান, দফতর বারবার সতর্কবার্তা পাঠিয়েছিল, কিন্তু কেউ তা শোনেনি। তাই শেষ পর্যন্ত আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী অভিযানে নামতে হয়েছে।
 

অভিযান চলাকালীন কোনও বড় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। বরং স্থানীয় মানুষ বন দফতরের পাশে দাঁড়িয়েছেন। 

তারা জানিয়েছেন, যদি এভাবে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়, তবে বনভূমি দখলের প্রবণতা কমে যাবে। এই ঘটনাটি অন্যদের জন্যও সতর্কবার্তা হয়ে থাকবে।


🌿 ডিএফও পূরবী মাহাতের বক্তব্য ও প্রশাসনের অবস্থান

এই ঘটনার বিষয়ে কংসাবতী দক্ষিণ বন বিভাগের ডিএফও পূরবী মাহাত বলেন, “বন ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণে আমরা ধারাবাহিকভাবে অভিযান চালাচ্ছি। কেউ বেআইনি কাজ করলে ছাড় দেওয়া হবে না।” 

তিনি আরও জানান, বন দখল মানে শুধু আইনভঙ্গ নয়, এটি প্রকৃতির বিরুদ্ধে অপরাধ। কারণ বনভূমি ধ্বংস হলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়, জলবায়ু পরিবর্তন তীব্র হয় এবং বন্যপ্রাণীর বাসস্থান ধ্বংস হয়। 🌍 

তিনি বলেন, “আমরা চাই জনগণও আমাদের সহযোগী হোক। বনভূমি শুধু সরকারের নয়, এটি সবার সম্পদ।” 

তাই স্থানীয়দের সচেতন হওয়া জরুরি। বন দফতর আগামী দিনে আরও নজরদারি বাড়াবে এবং প্রতিটি রেঞ্জে বিশেষ টহল দল গঠন করা হবে।
 

তার এই বক্তব্যে বোঝা যায়, বন দফতর এখন কেবল শাস্তিমূলক পদক্ষেপেই সীমাবদ্ধ নয়, তারা দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণ কৌশলও নিচ্ছে। 

পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের দৃঢ় অবস্থানই ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক ফল দেবে। 🌾


👮‍♂️ কারা উপস্থিত ছিলেন অভিযানে এবং স্থানীয় প্রতিক্রিয়া

বৃহস্পতিবারের অভিযানে উপস্থিত ছিলেন বিভাগের এডিএফও সমীর বোস, বরাবাজার রেঞ্জ আধিকারিক হীরক সিনহা, আরও কয়েকজন বনকর্মী এবং স্থানীয় যৌথ বন পরিচালন কমিটির সদস্যরা। 

অভিযানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রশাসন শান্তিপূর্ণভাবে কাজ সম্পন্ন করে। বন দফতর জানিয়েছে, তারা ভবিষ্যতে আরও কঠোর নজরদারি চালাবে যাতে কেউ বনভূমিতে দখল না করতে পারে।

অন্যদিকে, স্থানীয় মানুষ এই পদক্ষেপে খুশি। একজন বাসিন্দা বলেন, “বনভূমি বাঁচানো মানে আমাদের জীবন বাঁচানো। দফতর ঠিক কাজ করেছে।” আরেকজন বলেন, “যারা ভাবছে সরকার কিছু করবে না, তারা আজ বুঝে গেছে — আইন সবার জন্য সমান।” 🌿

এই প্রতিক্রিয়াগুলি বোঝায় যে সাধারণ মানুষও এখন বন রক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে শুরু করেছেন। 

আগে যেখানে অনেকেই নীরব থাকতেন, এখন তারা বন সংরক্ষণে সরব হচ্ছেন। প্রশাসনের সঙ্গে জনগণের এই সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরও কার্যকর ভূমিকা নেবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে।


🌍 বনভূমি দখল রোধে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

পুরুলিয়া জেলায় বন দখল রোধে বন দফতর ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন প্রতিটি রেঞ্জে বিশেষ নজরদারি দল কাজ করছে, যারা বনভূমির উপর ড্রোন নজরদারি করছে। 

পাশাপাশি স্থানীয় গ্রামগুলিতে সচেতনতামূলক প্রচার চলছে, যাতে কেউ বেআইনি দখল বা গাছ কাটার সঙ্গে যুক্ত না হন।

ডিএফও পূরবী মাহাত জানিয়েছেন, আগামী দিনে বনভূমি সংরক্ষণে আরও প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। “বনভূমি কেবল গাছের সমষ্টি নয়, এটি জল, মাটি, প্রাণ ও মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত,” — তাঁর এই কথাই প্রমাণ করে প্রশাসন কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে পরিবেশ সুরক্ষায়। 🌱

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে যদি প্রশাসন ও জনগণ একসঙ্গে কাজ করে, তবে পুরুলিয়ার বনভূমিগুলি আবার সবুজে ঢেকে উঠবে। 

বন সংরক্ষণ শুধু সরকারের কাজ নয়, এটি প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব। তাই সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে — কারণ বন বাঁচলে তবেই প্রকৃতি বাঁচবে, আর প্রকৃতি বাঁচলে তবেই মানুষ বাঁচবে। 🌿


📊 সারসংক্ষেপ

বিষয় বিবরণ
অভিযানের স্থান বরাবাজার রেঞ্জ, আগাঝোর মৌজা
অভিযানের কারণ বনভূমিতে বেআইনি বাড়ি নির্মাণ
দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগ কংসাবতী দক্ষিণ বন বিভাগ
প্রধান আধিকারিক ডিএফও পূরবী মাহাত
সহযোগী দল এডিএফও সমীর বোস, রেঞ্জার হীরক সিনহা, JFMC সদস্যরা
ফলাফল বেআইনি বাড়ি ভাঙা ও বনভূমি উদ্ধার

🌿 শেষ কথা:

বরাবাজারের এই অভিযান কেবল আইন প্রয়োগ নয়, এটি প্রকৃতির প্রতি দায়বদ্ধতার প্রতীক। 

বনভূমি বাঁচানো মানে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবন বাঁচানো। তাই আসুন, সকলে মিলে প্রতিজ্ঞা করি — “বন বাঁচাও, দেশ বাঁচাও।” 🇮🇳


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url