সুশান্ত মাহাতোর উদ্যোগে মিটল ঝালদায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল।
ঝালদায় তৃণমূল কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের গোষ্ঠী কোন্দল কি অবশেষে মিটে গেল?
সোমবারের ঝালদা বিজয়া সম্মিলনীতে বাঘমুন্ডির বিধায়ক সুশান্ত মাহাতোর নেতৃত্বে এক ঐক্যের সুরে মিললেন সব পক্ষের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।
বহু বছরের বিরোধ, অভিমান ও ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ভুলে এক ছাতার তলায় এসে দাঁড়ালেন পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়াল, শহর সভাপতি সোমনাথ কর্মকারসহ দলের সকলে।
উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী মলয় ঘটক ও অন্যান্য জেলা নেতৃত্ব। তাঁদের বার্তা— ঐক্যেই শক্তি, বিভেদে ক্ষতি। এই ঘটনাকে ঝালদার রাজনীতির ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। 💚
📰 ঝালদায় তৃণমূলের মিলনমেলা সুশান্ত মাহাতোর উদ্যোগে মিটল পুরনো কোন্দল 💚
ঝালদার রাজনীতির আকাশে আজ যেন এক নতুন সূর্যোদয় হয়েছে। 🌅 দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দলে দীর্ণ এই শহর সোমবার যেন ফিরে পেল ঐক্যের নতুন সুর।
বহুদিন ধরে ঝালদা পুরসভা রাজনীতিতে যে বিভাজন, বিরোধ এবং প্রতিযোগিতা তৃণমূলের ভিত দুর্বল করেছিল, সেই অন্ধকার ভেদ করেই সোমবারের বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে একত্রিত হলেন সব পক্ষের নেতারা।
বাঘমুন্ডির বিধায়ক সুশান্ত মাহাতোর ডাকে সাড়া দিয়ে ঝালদার সব গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীরা হাজির হন এই কর্মসূচিতে।
আর সেই মুহূর্তেই যেন প্রমাণ হল— ইচ্ছে থাকলে রাজনৈতিক দূরত্বও কমে আসে। সুশান্তের সুরে এক নতুন আশার সুর শোনা গেল ঝালদায়।
দীর্ঘদিনের বিভেদ, অভিমান আর ক্ষমতার টানাপোড়েন ভুলে একত্রে বসেছেন নেতারা। এই ঘটনাকে অনেকেই ঝালদা রাজনীতির ইতিহাসে এক "টার্নিং পয়েন্ট" বলে অভিহিত করছেন।
💬 ঝালদার পুরনো গোষ্ঠী কোন্দলের ইতিহাস ও তার প্রভাব
ঝালদা পুর শহরের রাজনীতি বহু বছর ধরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত। একদিকে পুরপ্রধান শিবির, অন্যদিকে শহর তৃণমূল সভাপতির অনুগামীদের দল— এই দুই শিবিরের দ্বন্দ্ব রাজনীতির পাশাপাশি সংগঠনকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
একে অপরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ, সন্দেহ, এবং অভিযোগের পর্ব চলেছে বছরের পর বছর। এর ফলস্বরূপ, তৃণমূলের সংগঠন তলানিতে নেমেছিল।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই এলাকার তৃণমূলের ভরাডুবি যেন সেই বিভেদেরই প্রতিচ্ছবি। পুরসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি দল।
নানা জোট-তত্ত্বের অঙ্ক কষে পুরসভার কুর্সি দখল করতে হয়েছে, এবং একাধিকবার পুরপ্রধানের চেয়ার বদল হয়েছে।
এই বিশৃঙ্খলা ও পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা দলের কর্মীদের মনোবল কমিয়ে দিয়েছিল।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বহুবার বলেছেন— যদি ঝালদা সংগঠন ঐক্যবদ্ধ না হয়, তবে ভবিষ্যতে বড় ক্ষতি হতে পারে।
তাই এই দীর্ঘস্থায়ী গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটিয়ে ঐক্যের বার্তা দেওয়া ছিল সময়ের দাবি। সেই দাবিই সোমবার পূরণ হলো, যখন একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে হাসলেন পুরনো প্রতিদ্বন্দ্বীরা।
🌿 সুশান্ত মাহাতোর নেতৃত্বে ঐক্যের নতুন অধ্যায়
বাঘমুন্ডির বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো এবার হয়ে উঠলেন ঝালদার রাজনীতিতে ঐক্যের কারিগর।
তিনি বুঝেছিলেন, গোষ্ঠী কোন্দল থাকলে সংগঠন শক্তিশালী হবে না, আর সংগঠন দুর্বল হলে ভোটে জয় আসবে না।
সেই উপলব্ধি থেকেই তিনি ঝালদার নেতৃত্বকে এক ছাতার তলায় আনার উদ্যোগ নেন।
তাঁর নেতৃত্বে কয়েক দফা বৈঠক হয়, যেখানে পুরপ্রধান, শহর সভাপতি, এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
তাঁর শান্ত, সংযত অথচ দৃঢ় মনোভাবই ধীরে ধীরে দলীয় সদস্যদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনে।
স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা বলছেন, “সুশান্ত দাদার মধ্যস্থতা না থাকলে এই ঐক্য সম্ভব হত না।”
সোমবারের বিজয়া সম্মিলনীতে তাঁর উপস্থিতি যেন ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠল।
রাজনীতির চিরাচরিত বিভেদ পেরিয়ে তিনি দেখালেন, একতা মানে শুধু রাজনৈতিক সুবিধা নয়— একতা মানে মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা, উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি।
তাঁর এই উদ্যোগে ঝালদা শহরে যেন নতুন আশার বাতাস বইছে। 🌾
🕊️ বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে মিলনের উৎসব ও মানুষের উচ্ছ্বাস
সোমবারের বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ঝালদা পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়াল, উপ পুরপ্রধান সুদীপ কর্মকার, শহর তৃণমূল সভাপতি সোমনাথ কর্মকারসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী।
সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয় ছিল— একসময়ের বিরোধীরা এখন পাশাপাশি বসেছেন, কথা বলছেন, হাসছেন।
উপস্থিত ছিলেন বহু সাধারণ নাগরিক, যাঁরা এই পরিবর্তনের সাক্ষী হলেন।
মহিলাদের উপস্থিতিও ছিল উল্লেখযোগ্য, যা দেখিয়ে দেয় সাধারণ মানুষের মধ্যে কতটা আগ্রহ তৈরি হয়েছে এই নতুন ঐক্যের প্রতি।
পুরো অনুষ্ঠানে ছিল আনন্দ, উচ্ছ্বাস আর পারস্পরিক সম্মানের পরিবেশ।
বিজয়ার এই শুভক্ষণে একে অপরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে দলীয় কর্মীরা বললেন, “এবার আর বিভেদ নয়, এবার ঐক্য।”
মঞ্চের সাজ, তৃণমূলের পতাকা, আর সুশান্ত মাহাতোর উদ্দীপনাময় বক্তৃতা— সব মিলিয়ে ঝালদা শহর যেন ভেসে উঠেছিল সবুজ-সাদা রঙের মিলনমেলায়। 🌺
🗣️ মলয় ঘটকের কড়া বার্তা বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে ও উন্নয়নচিত্রের প্রশংসা
এই ঐতিহাসিক দিনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শ্রম, আইন ও বিচারবিভাগীয় মন্ত্রী মলয় ঘটক। তাঁর বক্তব্য ছিল সরাসরি ও দৃঢ়।
তিনি বলেন, “শুধুমাত্র বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতেই আজ বাঙালিদের ওপর অত্যাচার চলছে। মানুষ এখন সত্য জানে, তাই বিজেপির বিভেদ আর ধাপ্পাবাজির রাজনীতি বেশিদিন টিকবে না।”
তিনি আরও বলেন, “লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের জনপ্রিয়তা দেখে দেশের অনেক রাজ্য সেটি অনুকরণ করতে বাধ্য হয়েছে। এটা প্রমাণ করে আমাদের রাজ্য কতটা এগিয়ে।”
তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট ছিল— উন্নয়নমূলক প্রকল্পই মানুষের মন জয় করেছে, আর সেটাই দলের শক্তি।
তিনি ঝালদার তৃণমূলের ঐক্যের প্রশংসা করে বলেন, “এই ঐক্যই আমাদের ভবিষ্যতের পথ। ঐক্য থাকলে কোনো শক্তিই আমাদের হারাতে পারবে না।”
তাঁর বক্তৃতা শেষে করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে সভা প্রাঙ্গণ।
🏛️ পুরসভা রাজনীতিতে ঐক্যের প্রভাব ও ভবিষ্যতের ইঙ্গিত
ঝালদা পুরসভায় গত কয়েক বছরে নেতৃত্ব বদলের নাটক চলেছিল অবিরাম। কখনও পুরপ্রধান বদল, কখনও বোর্ড ভেঙে নতুন জোট— ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে তৃণমূল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
কিন্তু এই বিজয়া সম্মিলনীর পর মানুষ যেন আবার আশ্বস্ত হচ্ছেন।
পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়াল নিজে বলেন, “কারও মনে কী আছে তা আগে বলা যায় না, কিন্তু সবাই যদি একসঙ্গে কাজ করে, আমরা নিশ্চিতভাবে আবার এই আসন জিতব।”
তাঁর বক্তব্যে ছিল আত্মবিশ্বাস, আবার সতর্কতাও। তিনি স্পষ্ট জানালেন— “এটা কোনো ওয়ার্ডের ভোট নয়, এটা বাঘমুন্ডি বিধানসভা, এখানে দলীয় ঐক্যই জয়ের চাবিকাঠি।”
তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে অন্যান্য নেতারাও একই বার্তা দিলেন— “ভোটে জেতার জন্য নয়, মানুষের উন্নয়নের জন্য ঐক্য চাই।”
এই সমন্বয় যদি বাস্তব রূপ নেয়, তবে তৃণমূল শুধু ঝালদায় নয়, পুরো পুরুলিয়া জেলাতেই আরও শক্ত ভিত গড়ে তুলবে।
🌾 বিজয়ার শুভক্ষণে নতুন বার্তা ঐক্যেই শক্তি বিভেদে ক্ষতি
বিজয়া মানেই মেলবন্ধনের সময়, পুরনো অভিমান ভুলে মিলনের উৎসব। ঠিক তেমনই এই বিজয়া সম্মিলনী যেন ঝালদার তৃণমূলের জন্য এক নবজন্মের প্রতীক।
সভা শেষে এক কর্মী বলেন, “আজ মনে হচ্ছে, আমরা সত্যিই এক পরিবারের সদস্য।” এমন আবেগঘন দৃশ্য ঝালদা অনেক দিন দেখেনি।
দলের নেতাদের চোখে-মুখে ছিল একটাই প্রতিজ্ঞা— “এবার ঐক্যের জয় হোক।”
রাজনীতির মঞ্চে যেখানে বিভেদ প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা, সেখানে এমন মিলন এক বিরল দৃশ্য।
এই ঐক্য শুধু রাজনীতির কৌশল নয়, এটি মানুষের আস্থা ফেরানোর প্রয়াসও বটে।
মানুষের বিশ্বাস ফিরে পেলে রাজনীতি আরও মানবিক হয়, এবং তৃণমূল সেটাই প্রমাণ করতে চাইছে।
🌿 শেষ কথা ঝালদার রাজনীতিতে মিলনের আলো টিকে থাকুক
ঝালদার রাজনীতি বহুবার দেখেছে ভাঙন, অভিমান ও ক্ষমতার লড়াই। কিন্তু এদিনের ঐক্য যেন অন্ধকার ভেদ করে নতুন পথ দেখাল।
সুশান্ত মাহাতোর নেতৃত্বে এই ঐক্যের সুর যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে তা শুধু ঝালদার নয়, পশ্চিমাঞ্চলের রাজনীতির ভবিষ্যৎ পাল্টে দিতে পারে।
তৃণমূলের কর্মীরা আজ একটাই কথা বলছেন— “আমরা একসঙ্গে লড়ব, একসঙ্গে জিতব।” এই ঐক্যই হতে পারে ভবিষ্যতের ভিত্তি। 🌸
