বদলি হলেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক ড. রজত নন্দা।
পুরুলিয়ার প্রশাসনে বড় পরিবর্তন! বদলি হলেন পুরুলিয়ার জেলা শাসক ড. রজত নন্দা, যিনি নতুন দায়িত্ব নিচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পর্যটন দফতরে ডিরেক্টর পদে।
তাঁর স্থলাভিষিক্ত হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন ২০১৪ ব্যাচের আইএএস অফিসার সুধীর কোন্থাম, যিনি এর আগে হলদিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটির সিইও হিসেবে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন।
ড. নন্দার সময়কালে পুরুলিয়া জেলায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে।
নতুন জেলা শাসক সুধীর কোন্থামের নেতৃত্বে প্রশাসনিক কাজে আরও গতি আসবে বলে আশা করছে জেলার মানুষ। এই পরিবর্তন পুরুলিয়ার উন্নয়নে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
📰 বদলি হলেন পুরুলিয়ার জেলা শাসক — দায়িত্ব নিলেন সুধীর কোন্থাম
পুরুলিয়া জেলার প্রশাসনে বড় পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। বদলি হলেন পুরুলিয়ার জেলা শাসক (ডি.এম) ড. রজত নন্দা, যিনি দীর্ঘদিন ধরে জেলার উন্নয়ন, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং জনসংযোগের ক্ষেত্রে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পর্যটন দফতরে ডিরেক্টর পদে যোগ দিচ্ছেন।
তাঁর স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন ২০১৪ ব্যাচের আইএএস অফিসার সুধীর কোন্থাম, যিনি এতদিন হলদিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটির সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
এই পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের অন্দরে এক মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
একদিকে বিদায়ী জেলা শাসক ড. নন্দার নিষ্ঠা, সৎ প্রশাসন এবং উন্নয়নমুখী কাজের প্রশংসা করছেন সাধারণ মানুষ ও কর্মকর্তারা, অন্যদিকে নতুন জেলা শাসকের দায়িত্বগ্রহণকে স্বাগত জানাচ্ছেন অনেকেই।
সবাই আশা করছেন, এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই পুরুলিয়ার উন্নয়ন যাত্রা আরও গতি পাবে।
পুরুলিয়া জেলার মতো সংবেদনশীল ও ভৌগোলিকভাবে বৈচিত্র্যময় অঞ্চলে একজন দক্ষ প্রশাসকের ভূমিকা অপরিসীম, আর তাই এই বদলি প্রশাসনিক ও জনজীবন দুই ক্ষেত্রেই তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
🌟 ড. রজত নন্দার পুরুলিয়ায় অবদান
ড. রজত নন্দা পুরুলিয়ায় দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই জেলার উন্নয়নমুখী কাজের ধারায় নতুন দিশা এনেছিলেন।
তিনি বিশ্বাস করতেন যে “একজন প্রশাসকের সাফল্য কেবল অফিসের চার দেওয়ালে সীমাবদ্ধ নয়, তা নির্ভর করে মানুষের জীবনে প্রকৃত পরিবর্তন আনতে পারার ওপর।”
এই বিশ্বাস থেকেই তিনি জেলার অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে একাধিক যুগান্তকারী প্রকল্প হাতে নেন।
তাঁর নেতৃত্বে পুরুলিয়ায় প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং গতিশীলতার নতুন অধ্যায় শুরু হয়। সরকারি কাজের প্রক্রিয়া সহজতর করতে তিনি তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ান এবং সাধারণ মানুষের অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য নিয়মিত জনসুনানি আয়োজন করেন।
তাঁর অন্যতম বড় সাফল্য ছিল জেলার প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন।
নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন করে তিনি স্থানীয় সমস্যাগুলি শুনতেন, সমাধানের পথে বাস্তব পদক্ষেপ নিতেন। এই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি তাঁকে জনগণের খুব কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছিল।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “ড. নন্দা জেলার উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। তাঁর কর্মদক্ষতা ও সততা পুরুলিয়ার মানুষ অনেকদিন মনে রাখবে।”
এছাড়া তিনি সরকারি অফিসগুলির কাজের গতি বাড়াতে এবং দুর্নীতি রোধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছিলেন।
তিনি বিশ্বাস করতেন— ‘ভালো প্রশাসন মানেই স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা।’ তাঁর সময়কালে পুরুলিয়ার উন্নয়ন প্রকল্পগুলিতে সেই নীতিই স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছিল।
👨💼 পুরুলিয়ার নতুন জেলা শাসক সুধীর কোন্থাম
নতুন জেলা শাসক সুধীর কোন্থাম রাজ্যের প্রশাসনিক দপ্তরে ইতিমধ্যেই এক দক্ষ, পরিশ্রমী ও মাটির মানুষ হিসেবে পরিচিত।
তিনি ২০১৪ ব্যাচের আইএএস অফিসার এবং পূর্ব মেদিনীপুরে দায়িত্ব পালনকালে দক্ষ প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ও মাঠ পর্যায়ের কাজের জন্য প্রশংসিত হয়েছিলেন।
হলদিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটির সিইও হিসেবে তিনি শিল্পায়ন ও পরিকাঠামো উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন।
তাঁর অভিজ্ঞতা ও কর্মনিষ্ঠা পুরুলিয়ার মতো জেলা পরিচালনায় এক বড় সম্পদ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সুধীর কোন্থাম পুরুলিয়ায় যোগদানের পর জেলার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিকাঠামো, কৃষি ও পর্যটন খাতে বিশেষ জোর দিতে চান।
তিনি নিজেও এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে “পুরুলিয়ার মতো একটি সম্ভাবনাময় জেলার উন্নয়নে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”
তাঁর কাজের ধারা মূলত মাঠভিত্তিক — অর্থাৎ কাগজে কলমে নয়, বাস্তব পরিদর্শনের মাধ্যমে সমস্যা চিহ্নিত ও সমাধানের প্রয়াস।
প্রশাসনিক মহল মনে করছে, তাঁর অভিজ্ঞতা পুরুলিয়াকে আগামী দিনে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে পারে।
পুরুলিয়ার মতো সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বৈচিত্র্যময় জেলায় তাঁর আগমন প্রশাসনের প্রতি মানুষের আস্থা আরও দৃঢ় করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
💬 প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া ও জেলার মানুষের অভিব্যক্তি
পুরুলিয়ার জেলা শাসকের এই পরিবর্তনে প্রশাসনিক অন্দরে ও সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
অনেকেই ড. রজত নন্দার মতো জনমুখী অফিসারকে হারানোর আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন।
তাঁর সময়কালে পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প নতুন গতি পেয়েছিল, সরকারি সেবার মানও উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছিল।
সাধারণ মানুষের অভিযোগ নিষ্পত্তির দ্রুত ব্যবস্থা, সরকারি নথিপত্রের ডিজিটালাইজেশন এবং দপ্তরগুলিতে কর্মসংস্কৃতির পরিবর্তন — এইসব উদ্যোগ তাঁকে এক বিশেষ জায়গায় পৌঁছে দিয়েছিল।
অন্যদিকে, নতুন জেলা শাসক সুধীর কোন্থামকে ঘিরে প্রত্যাশার পারদও সমান উচ্চে।
স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বক্তব্য, “সুধীর কোন্থাম একজন কর্মঠ ও বাস্তববাদী প্রশাসক। তিনি মাঠে কাজ করতে পছন্দ করেন এবং সাধারণ মানুষের সমস্যার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকেন।”
সামাজিক মাধ্যমে পুরুলিয়ার মানুষও তাঁর যোগদানকে স্বাগত জানিয়েছেন।
কেউ লিখেছেন, “Welcome Sudhir Kontham Sir, hope you will take Purulia forward with the same passion!” আবার কেউ লিখেছেন, “Dr. Nanda Sir, we will miss your simplicity and dedication.”
এইসব প্রতিক্রিয়াই প্রমাণ করছে, পুরুলিয়ার মানুষ এখন প্রশাসনের ধারাবাহিক উন্নয়ন ও সেবার মান ধরে রাখার আশায় দিন গুনছে।
এই বদলি শুধু প্রশাসনিক নয়, মানুষের আবেগ ও প্রত্যাশার সঙ্গেও গভীরভাবে যুক্ত হয়ে উঠেছে।
📈 পুরুলিয়ার উন্নয়ন সম্ভাবনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
পুরুলিয়া জেলা পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম পশ্চাদপদ জেলা হলেও, এখানে উন্নয়নের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
পাহাড়, অরণ্য, হ্রদ, ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি এবং পর্যটনের অনন্য সংমিশ্রণ পুরুলিয়াকে রাজ্যের এক সম্ভাবনাময় জেলা হিসেবে গড়ে তুলেছে।
নতুন জেলা শাসক সুধীর কোন্থাম এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে বিশেষভাবে আগ্রহী বলে জানা গিয়েছে।
তিনি জেলার পর্যটন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতের সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা নিতে চলেছেন।
পর্যটন ক্ষেত্রে পুরুলিয়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে রাজ্য ও জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হবে, যাতে স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থানও বাড়ে।
অন্যদিকে, ড. নন্দার রেখে যাওয়া প্রশাসনিক ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে সুধীর কোন্থাম জেলার গ্রামীণ অর্থনীতি আরও শক্তিশালী করতে চান।
উন্নত পরিকাঠামো, স্বচ্ছ শাসন ও সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ — এই তিন স্তম্ভে তিনি নতুন উন্নয়নের মডেল দাঁড় করাতে চান।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সরকারি পরিষেবার মানোন্নয়ন, নারী স্বনির্ভরতা এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য আর্থিক সহায়তা — এই দিকগুলিতে প্রশাসন নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারে।
পুরুলিয়ার মানুষ তাই এখন আশায় বুক বেঁধে আছে — নতুন জেলা শাসকের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসন আরও মানবিক, কর্মদক্ষ ও প্রযুক্তিনির্ভর হবে।
🙏 বিদায়ী ও আগত জেলা শাসককে ঘিরে আবেগ ও শুভেচ্ছা
পুরুলিয়ার প্রশাসনিক এই বদলি শুধুমাত্র অফিসিয়াল নয়, এর মধ্যে আছে এক আবেগঘন বিদায় এবং নতুন সূচনার প্রতিশ্রুতি।
সামাজিক মাধ্যমে পুরুলিয়ার বাসিন্দারা ড. রজত নন্দাকে ধন্যবাদ জানিয়ে পোস্ট করছেন।
কেউ লিখেছেন, “আপনার সময় পুরুলিয়া নতুনভাবে উন্নয়নের স্বাদ পেয়েছিল, ধন্যবাদ নন্দা স্যার।” আবার অন্য কেউ লিখেছেন, “Welcome Sudhir Kontham Sir, we believe Purulia’s future is bright under your leadership.”
পুরুলিয়ার মানুষ জানে, প্রশাসনের পরিবর্তন মানেই নতুন আশা, নতুন পরিকল্পনা এবং নতুন দৃষ্টিভঙ্গি।
তাই বিদায়ী জেলা শাসককে শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে বিদায় জানাতে জানাতে, তারা নতুন জেলার শাসককে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছে।
এই আবেগের মধ্যেই লুকিয়ে আছে পুরুলিয়ার মানুষের উন্নয়নমুখী মানসিকতা ও প্রশাসনের প্রতি আস্থা।
পুরুলিয়া জেলা দীর্ঘদিন ধরে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও, প্রশাসনিক নেতৃত্বের পরিবর্তন এখানকার অগ্রগতির পথে এক নতুন অধ্যায় খুলে দিয়েছে।
এখন সময়ই বলবে, সুধীর কোন্থামের নেতৃত্বে পুরুলিয়া কতটা এগিয়ে যায়, তবে জেলা জুড়ে যে আশাবাদের পরিবেশ তৈরি হয়েছে — সেটাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সাফল্য।

