বিজয়া সম্মেলনে তৃণমূলের জোয়ার পুরুলিয়ায় বিরোধী শিবিরে ভাঙন।

পুরুলিয়ার বিভিন্ন ব্লকে বিজয়া সম্মেলনে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক শক্তি দৃঢ় হচ্ছে। 

আড়শা, বরাবাজার, ঝালদা, রঘুনাথপুর, মানবাজার ও হুড়া— প্রতিটি এলাকায় একের পর এক নেতা-কর্মী ও পরিবার ঘাসফুল পতাকা হাতে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। 

বিরোধী শিবিরে ফাটল দেখা দিয়েছে, বিজেপি, কংগ্রেস ও সিপিএমের অনেক নেতা ও সমর্থক তৃণমূলে এসে অংশ নিয়েছেন। 

মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক, মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো, সন্ধ্যারানি টুডু সহ স্থানীয় নেতৃত্ব। 

এই সম্মেলন শুধু উৎসব নয়, বরং মানুষের আস্থা, ঐক্য ও উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে কাজ করছে। প্রাপ্ত নতুন সদস্যরা আশা করছেন, তৃণমূলই আনবে বাস্তব পরিবর্তন ও উন্নয়ন।


bijoya sammelon trinamool joar

🌸 বিজয়া সম্মেলনে তৃণমূলের জোয়ার পুরুলিয়ায় বিরোধী শিবিরে ভাঙন


🎉 উৎসবের আবহে রাজনীতির উচ্ছ্বাস

পুরুলিয়ার আকাশে এখন শুধু উৎসবের রঙ নয়, তার সঙ্গে মিশেছে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও আশার হাওয়া 🎊। 

বিজয়া সম্মেলনের নামেই বোঝা যায়, এটি আনন্দ ও মিলনের সময়, কিন্তু এবার তৃণমূল কংগ্রেস এই মিলন মঞ্চকে পরিণত করেছে রাজনৈতিক ঐক্যের উৎসবে। 

আড়শা থেকে বরাবাজার, ঝালদা থেকে রঘুনাথপুর, মানবাজার থেকে হুড়া— পুরুলিয়ার প্রতিটি প্রান্তেই একটিই চিত্র, বিরোধী শিবিরের ভাঙন আর তৃণমূলের নতুন শক্তি সঞ্চার।

তৃণমূলের তরুণ মুখ দেবাংশু ভট্টাচার্য, অভিজ্ঞ নেতা ও রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু, এবং মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো– এই সব জনপ্রিয় নেতাদের উপস্থিতিতে প্রতিটি বিজয়া সম্মেলন পরিণত হয়েছে মানুষের মেলায়। 

মঞ্চে ভেসে উঠছে ঘাসফুল পতাকার ঢেউ 🌿, বাজছে ঢাকের আওয়াজ, মুখে হাসি— মানুষের আশা যেন ফিরে এসেছে উন্নয়নের পথে।

তৃণমূলের এক স্থানীয় নেতা বলেন, “বিজয়া মানেই মেলবন্ধন। আমরা চাই মানুষ একসঙ্গে থাকুক, আর এই মিলনই হোক উন্নয়নের শক্তি।” 

উৎসবের মঞ্চে আনন্দের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে রাজনৈতিক বার্তা— ‘ঐক্যই শক্তি, উন্নয়নই লক্ষ্য’।


🏳️‍🌈 বাঘমুন্ডি থেকে ঝালদা যোগদানের ঢল

পুরুলিয়ার রাজনীতিতে নতুন অধ্যায় রচনা করছে একের পর এক বিজয়া সম্মেলন। বাঘমুন্ডি, ঝালদা–১ ও ঝালদা পুরসভা— এই তিনটি কেন্দ্রেই গত কয়েক দিনে বিরোধী দল থেকে শতাধিক নেতা-কর্মী ও পরিবার তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। 

অনুষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো, যিনি নতুনদের হাতে ঘাসফুল পতাকা তুলে দেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের উপস্থিতিতে।

এই অনুষ্ঠানগুলোতে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু, জেলা পরিষদ সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো, জেলা সভাপতি রাজীবলোচন সরেন, শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি উজ্জ্বল কুমার সহ অনেক বিশিষ্ট নেতা। 

তাঁরা সকলেই একস্বরেই বলেন, “মানুষ উন্নয়নের পাশে আছে, তাই ঘাসফুলের পাশে আছে।”

তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, বাঘমুন্ডি ব্লকে বিজেপি ও কংগ্রেস মিলিয়ে প্রায় ১০০ জন, ঝালদা–১ ব্লকে সিপিএম-সহ বিভিন্ন দলের ৩০টি পরিবার এবং ঝালদা পুরসভার এলাকায় বজরঙ দল ও বিজেপি মিলিয়ে আরও ৫০ জন কর্মী ও সমর্থক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। 

প্রত্যেকেই বলছেন, তাঁরা বিশ্বাস করেন তৃণমূলই পারবে তাঁদের জীবনের বাস্তব উন্নয়ন ঘটাতে।

নতুন সদস্যদের মধ্যে অনেকেই আবেগে বলেছেন, “আমরা বছরের পর বছর আশা করেছিলাম কিছু পরিবর্তনের, কিন্তু তা পাইনি। এখন মনে হচ্ছে, তৃণমূলের সঙ্গে থাকলে সত্যিই সেই পরিবর্তন আসবে।” 🌾


🌿 ইলু-জারগো ও সাঁতুড়িতে নতুন অধ্যায়

বুধবারেও একই ছবি দেখা গেল। ঝালদার ইলু-জারগো অঞ্চলে কংগ্রেস নেতা সন্তোষ মাহাতো সহ প্রায় ৩০টি পরিবার তৃণমূলে যোগ দেন। 

তাঁদের বক্তব্যে উঠে আসে উন্নয়নের বার্তা ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রত্যাশা। পাশাপাশি সাঁতুড়ি ব্লকে বিজেপি ও বামফ্রন্ট থেকে প্রায় ৫০ জন কর্মী ও সমর্থক ঘাসফুল পতাকা হাতে নেন।

এই অংশগ্রহণের ঢল শুধুমাত্র রাজনৈতিক পালাবদল নয়, এটি মানুষের আস্থার প্রতিফলন। 

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, “আমরা এখন এমন এক সরকারের পাশে দাঁড়াতে চাই যারা আমাদের বাস্তব সমস্যা শোনে, সমাধান দেয়।” 🌾

রঘুনাথপুর–১ ব্লকের বাবুগ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপির প্রাক্তন শক্তিকেন্দ্রপ্রধান শান্তশিব মুখোপাধ্যায়, এবং খাজুরা পঞ্চায়েতের সেনেড়া বুথের নির্দল সদস্য সাধনা মাজীও এবার তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। 

তাঁদের মতে, তৃণমূলের সংগঠন এখন অনেক বেশি শক্তিশালী ও সক্রিয়। মানুষের দরজায় দরজায় পৌঁছে যাচ্ছে সরকারের প্রকল্প, কাজের সুযোগ ও সামাজিক সহায়তা।

তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব জানিয়েছেন, “এই যোগদান কেবল রাজনৈতিক সাফল্য নয়, এটি মানুষের ভালোবাসার প্রতীক।” এই ধারা অব্যাহত থাকলে, আগামী নির্বাচনে তৃণমূলের শক্তি হবে আরও দৃঢ়।


🌻 মানবাজার, পুঞ্চা ও হুড়ায় তৃণমূলের নবজাগরণ

মানবাজার, পুঞ্চা ও হুড়া— এই তিনটি ব্লকেও এবার তৃণমূল কংগ্রেস আয়োজন করেছে বিশাল বিজয়া সম্মেলন। 

প্রতিটি মঞ্চেই মানুষের ভিড় উপচে পড়েছে। উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো, মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু, সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো এবং প্রাক্তন জেলা সভাপতি গুরুপদ টুডু

গুরুপদ টুডু বলেন, “মানবাজার বিধানসভা এলাকায় প্রায় ২০টি পরিবার ইতিমধ্যেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আগামী নির্বাচনের আগে আরও অনেকেই আসবেন। মানুষ এখন জানে, উন্নয়ন মানেই তৃণমূল।” 

তাঁর কথায় আশার সুর— এই সংগঠন কেবল ভোটের সময় নয়, সারাবছর মানুষের পাশে থাকে।

এই সম্মেলনগুলোতে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, স্থানীয় নৃত্য, গান— সবকিছু মিলিয়ে তৈরি হয়েছে উৎসবের আবহ 🎶। 

গ্রামের মানুষদের মুখে হাসি, শিশুদের হাতে পতাকা, নারীদের চোখে গর্ব— যেন রাজনীতি ছুঁয়ে যাচ্ছে মানুষের জীবনের প্রতিটি দিক।

তৃণমূলের বার্তা স্পষ্ট— রাজনীতি মানে শুধু ক্ষমতা নয়, মানুষের সঙ্গে মিশে কাজ করা। এবং সেই বার্তাই মানুষ আজ মন থেকে গ্রহণ করছে।


🗣️ নেতৃত্বের আত্মবিশ্বাস ও মানুষের আস্থা

তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, “বিজয়া সম্মেলনের মঞ্চ এখন শুধু উৎসব নয়, এটি আমাদের সংগঠনের ভিত্তি মজবুত করার জায়গা।” 

তাঁদের দাবি, পুরুলিয়ার প্রতিটি ব্লকে এখন তৃণমূলের উপস্থিতি ক্রমেই বেড়ে চলেছে।

এক জেলা নেতা বলেন, “মানুষ বুঝে গেছে, তৃণমূলই একমাত্র দল যারা উন্নয়ন করতে পারে। বিরোধীরা শুধু সমালোচনা করে, কিন্তু মাঠে নেমে মানুষের জন্য কাজ করে না।” 

তিনি আরও বলেন, “এই সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা প্রতিটি গ্রামে পৌঁছে যাচ্ছি। মানুষকে বোঝাচ্ছি কীভাবে সরকার তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।”

মানুষের মধ্যেও সেই আত্মবিশ্বাস স্পষ্ট। অনেক গ্রামবাসী বলছেন, এখন আর রাজনীতি মানেই ঝগড়া নয়, বরং সহযোগিতা ও উন্নয়নের প্রতীক। 

সরকারের প্রকল্প যেমন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, ১০০ দিনের কাজ, রূপশ্রী, এইসব কর্মসূচি তাঁদের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। 🌼


❤️ মানুষের অনুভূতি ও সামাজিক বার্তা

বিজয়া সম্মেলনের এই ধারাবাহিক অনুষ্ঠানে শুধুমাত্র রাজনৈতিক উচ্ছ্বাস নয়, তার সঙ্গে মিশেছে মানুষের আবেগ ও একতার শক্তি। 

পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোয় মানুষ নিজের সমস্যার কথা, দাবিদাওয়া, আশা–আকাঙ্ক্ষা সরাসরি জানাচ্ছেন নেতাদের কাছে। এই সংলাপই তৈরি করছে নতুন আস্থা।

একজন মহিলা বলেন, “আগে আমরা ভাবতাম নেতারা কেবল শহরের মানুষদের জন্য কাজ করেন। কিন্তু এখন দেখছি, গ্রামের মেয়েদেরও সম্মান, কাজ ও সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।”

তৃণমূলের নেতারা এই আবেগকে মূল্য দিচ্ছেন। তাঁরা বিশ্বাস করেন, মানুষই দলের আসল শক্তি। এই সম্মেলন তাই শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি মানবিক সংযোগের প্রতীক 💚।


🔍 বিশ্লেষণ ও উপসংহার

বিশ্লেষকদের মতে, পুরুলিয়ার বিজয়া সম্মেলন এখন তৃণমূলের রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হয়ে উঠেছে। 

উৎসবের পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে দল পৌঁছে যাচ্ছে গ্রামাঞ্চলে, নতুন মুখদের টানছে নিজের দলে। বিরোধীদের মধ্যে হতাশা দেখা যাচ্ছে, কারণ তাঁরা মাঠে উপস্থিতি হারাচ্ছেন।

তৃণমূল এখন বুঝিয়ে দিচ্ছে, রাজনীতি মানে শুধু বক্তৃতা নয়, মানুষের পাশে থাকা। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ঘাসফুল শিবির প্রমাণ করেছে, তারা এখন আগের চেয়েও বেশি ঐক্যবদ্ধ ও সক্রিয়।

শেষ পর্যন্ত বলা যায়, পুরুলিয়ার মাটিতে বিজয়া সম্মেলন আজ এক নতুন গল্প বলছে— বিজয়ের গল্প, ঐক্যের গল্প, মানুষের আশার গল্প 🌸।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url