পুরুলিয়ায় ই-কেওয়াইসি প্রতারণায় মহিলার ৪ লক্ষ টাকা উধাও।

📢এক ফোনে ই-কেওয়াইসি আপডেটের নামে পুরুলিয়ায় মহিলার অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা উধাও। জানুন বিস্তারিত ও সাবধানতার উপায়।


purulia e kyc scam


📢 পুরুলিয়ায় ই-কেওয়াইসি প্রতারণা: এক ফোন কলেই উধাও ৪ লক্ষ টাকা!

ডিজিটাল ব্যাংকিং আজ আমাদের জীবনের অংশ। অথচ এই সুবিধাই এখন প্রতারণার অস্ত্র হয়ে উঠছে। 

সম্প্রতি পুরুলিয়ার হুড়া থানার বড়গ্রাম গ্রামে ঘটেছে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা—ফোনে ই-কেওয়াইসি আপডেটের নামে একজন মহিলার অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা চুরি হয়ে গেল!

এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও সামনে এল একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন—আমরা কতটা সচেতন?


🧐 কিভাবে ঘটল এই প্রতারণা?

১২ আগস্ট ভুক্তভোগীর মায়ের মোবাইলে একটি অজানা নম্বর থেকে ফোন আসে। অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি নিজেকে ব্যাংকের কর্মী বলে পরিচয় দেয় এবং জানায় যে, ই-কেওয়াইসি আপডেট না করলে অ্যাকাউন্ট ব্লক হয়ে যাবে।

প্রতারক হোয়াটসঅ্যাপে একটি অ্যাপ ইনস্টল করার লিঙ্ক পাঠায় এবং PAN, Aadhaar সহ সব তথ্য দিতে বলে। সরল মনে মহিলা সমস্ত তথ্য দিয়ে দেন।

এরপর কী হয়? মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে তার অ্যাকাউন্ট থেকে ₹৩,৯৭,৯৪৩ টাকা উধাও!


⚠️ কেন এই ধরনের প্রতারণা বাড়ছে?

বাংলায় বলা হয়—“সুযোগ থাকলে চোরও দেবতা হয়ে যায়।” ডিজিটাল ব্যাংকিং যত বেড়েছে, তত বেড়েছে সাইবার অপরাধ। কারণ:

সচেতনতার অভাব: অনেকেই জানেন না ব্যাংক কখনও ফোনে তথ্য চায় না।
অতিরিক্ত বিশ্বাস: “ব্যাংক কর্মী” পরিচয় পেলে অনেকে প্রশ্ন করেন না।
টেকনোলজির অপব্যবহার: প্রতারকরা ভুয়ো অ্যাপ, ফিশিং লিঙ্ক ব্যবহার করে।
দ্রুত সমাধানের লোভ: “অ্যাকাউন্ট ব্লক” কথায় আতঙ্কিত হয়ে ভুল করেন।

সতর্ক না হলে আগামী দিনে আরও বড় বিপদ আসতে পারে!


📌 ব্যাংক আসলেই কি ফোনে ই-কেওয়াইসি চায়?

এখানেই মূল ফাঁদ! কোনও ব্যাংক কখনও ফোনে বা হোয়াটসঅ্যাপে আপনার PAN, Aadhaar, OTP বা PIN চায় না। 

ই-কেওয়াইসি কেবলমাত্র:
ব্যাংকের অফিসিয়াল ব্রাঞ্চে
✔ অথবা ব্যাংকের অফিশিয়াল মোবাইল অ্যাপ / ওয়েবসাইটে করা হয়।

যদি কেউ ফোনে বলে যে আপনার অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে, তা ১০০% প্রতারণা।


🔍 পুলিশ কী বলছে?

অভিযোগের পর হুড়া থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। 

তারা বলছে—

"প্রতারকের নম্বর ও টাকা যে অ্যাকাউন্টে গেছে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। সবাইকে অনুরোধ করছি এমন কল পেলে সঙ্গে সঙ্গে রিপোর্ট করুন।"


✅ কিভাবে বাঁচবেন এই প্রতারণা থেকে?

এই ধরনের প্রতারণা এড়াতে ৭টি সোনার নিয়ম মেনে চলুন:

  1. ব্যাংক কখনও ফোনে ই-কেওয়াইসি বা OTP চায় না।

  2. অজানা অ্যাপ ইনস্টল করবেন না।

  3. PAN, Aadhaar, ATM PIN কাউকে বলবেন না।

  4. প্রতারণামূলক কল পেলে সঙ্গে সঙ্গে কেটে দিন।

  5. ব্যাংকের অফিসিয়াল হেল্পলাইন নম্বরে কল করুন।

  6. UPI বা পেমেন্ট অ্যাপে স্ক্রিন শেয়ার করবেন না।

  7. সাইবার ক্রাইম হেল্পলাইন (১৯৩০)-এ রিপোর্ট করুন।


📊 পরিসংখ্যান যা জানলে অবাক হবেন!

২০২৩ সালে ভারতে ৯০,০০০-এর বেশি ব্যাংকিং ফ্রড হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে প্রতি মাসে গড়ে ১,০০০-এর বেশি অভিযোগ।
UPI ও KYC ফ্রড সবচেয়ে বেশি ঘটে।

এটি প্রমাণ করে যে প্রতারকরা দিন দিন আরও সক্রিয় হচ্ছে।


🧠 বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:

✔ “সচেতনতা বাড়ানোই একমাত্র উপায়। স্কুল থেকে শুরু করে প্রতিটি গ্রামে সাইবার সিকিউরিটি ওয়ার্কশপ হওয়া দরকার।” – সাইবার এক্সপার্ট

✔ “ব্যাংক কখনও ফোনে ব্যক্তিগত তথ্য চায় না।” – স্টেট ব্যাংক অফিসার


❓ FAQ (প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন):

১. ই-কেওয়াইসি কি নিরাপদ?
হ্যাঁ, যদি অফিসিয়াল ব্যাংক অ্যাপ বা শাখা থেকে করা হয়। ফোন বা হোয়াটসঅ্যাপে নয়।

২. আমি যদি তথ্য দিয়ে ফেলি, কী করব?
তৎক্ষণাৎ ব্যাংকের হেল্পলাইনে ও ১৯৩০ নম্বরে ফোন করুন।

৩. পুলিশ কি টাকা ফেরত দিতে পারে?
তদন্তের মাধ্যমে কিছু ক্ষেত্রে টাকা ফেরত পাওয়া যায়, তবে তা সময়সাপেক্ষ।

৪. এই ধরনের কল এলে কী করব?
কথা না বাড়িয়ে কেটে দিন এবং নম্বরটি রিপোর্ট করুন।


💬 শেষ কথা (উপসংহার):

পুরুলিয়ার এই ঘটনা আমাদের শেখায়—ডিজিটাল যুগে যতই সুবিধা থাকুক, সচেতন না হলে বিপদ।
একটি ভুলে আপনার সঞ্চয় মুহূর্তে শেষ হয়ে যেতে পারে। 

তাই: 

নিজে সতর্ক হোন।
অন্যকে সচেতন করুন।
এই পোস্টটি শেয়ার করুন যাতে আরও মানুষ বাঁচতে পারে।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url