অযোধ্যাপাহাড়ে বস্ত্র বিতরণে আনন্দের উৎসব।

অযোধ্যাপাহাড়ে দুর্গাপুজোর উৎসবের মাঝে ছড়িয়ে পড়ল মানবিকতার উষ্ণতা। 

কুশল ভারত গ্রুপ এবং ওয়েবস্টার সার্ভিসের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো ‘উৎসবে ওরাও হাসুক’ নামের বিশেষ কর্মসূচি। 

এই আয়োজনে স্থানীয় আদিবাসী পরিবারগুলিকে দেওয়া হলো নতুন বস্ত্র, আর সঙ্গে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়। 

দুর্গাপুজোর আনন্দে পাহাড়ি মানুষদের সামিল করার এই প্রয়াসে হাসি ফুটল শতাধিক পরিবারের মুখে। 

হিলটপের অনন্য দুর্গাপুজোর আবহে এমন মানবিক পদক্ষেপ পাহাড়ের সৌন্দর্যের পাশাপাশি মানুষের হৃদয়কেও ছুঁয়ে গেল। জানুন এই অনন্য উদ্যোগের সম্পূর্ণ খবর।


ajodhya pahar bastro bitoron

🏔️ অযোধ্যাপাহাড়ে বস্ত্র বিতরণে আনন্দের উৎসবের ছোঁয়া

পুরুলিয়ার অযোধ্যাপাহাড় মানেই প্রকৃতির কোলে এক টুকরো স্বর্গ। পাহাড়, ঝরনা, সবুজ বনানী—সব মিলিয়ে পর্যটকদের কাছে এটি এক স্বপ্নের জায়গা। 

বিশেষ করে দুর্গাপুজোর সময় এই পাহাড়ে ভিড় জমে পর্যটকে। কিন্তু উৎসবের এই আলো অনেক সময় পাহাড়ের আদিবাসী গ্রামগুলোতে পৌঁছায় না। এবার সেই ছবিটাই বদলালো এক মহতী উদ্যোগে।


🎉 উৎসবের নামে এক অনন্য কর্মসূচি – ‘উৎসবে ওরাও হাসুক’

দুর্গাপুজো শুধু শহরেই নয়, গ্রামের প্রতিটি কোণেও আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। কিন্তু পাহাড়ের চূড়ায় বসবাসকারী আদিবাসী পরিবারগুলোর কাছে নতুন পোশাকের আনন্দ প্রায়ই অপ্রাপ্তি হয়ে থাকে। 

এই বাস্তবতাকে বদলানোর জন্য শনিবার এক অসাধারণ পদক্ষেপ নিল কুশল ভারত গ্রুপ এবং ওয়েবস্টার সার্ভিসের সোসাইটি। 

তারা আয়োজন করল ‘উৎসবে ওরাও হাসুক’ নামের একটি বিশেষ কর্মসূচি।

এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ছিল আদিবাসী পরিবারগুলিকে উৎসবের আনন্দে সামিল করা। শুধুমাত্র দান নয়, ছিল মমতার ছোঁয়া। 

অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এলাকার প্রতিটি আদিবাসী পরিবারকে নতুন বস্ত্র উপহার দেওয়া হয়, যাতে তাদের দুর্গাপুজোও হয়ে ওঠে আনন্দময়।


❤️ স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও মানবিকতার ছোঁয়া

এই কর্মসূচি শুধুমাত্র বস্ত্র বিতরণেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত হয়েছিল স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির। 

পাহাড়ি গ্রামগুলোতে সাধারণত স্বাস্থ্য পরিষেবা খুবই সীমিত। তাই এই উদ্যোগ ছিল সত্যিই প্রশংসনীয়। স্থানীয় আদিবাসী মানুষজনের রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন সাধারণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।

স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি শিশুদের জন্যও ছিল বিশেষ যত্ন। পুষ্টি বিষয়ক পরামর্শ দেওয়া হয়, যাতে আগামী দিনে তারা আরও সুস্থ ও সবলভাবে বড় হতে পারে।


👔 নতুন বস্ত্রে হাসি ফুটল পাহাড়ি মুখে

অনুষ্ঠানের সবচেয়ে আবেগঘন মুহূর্ত ছিল যখন পাহাড়ি পরিবারগুলোর হাতে তুলে দেওয়া হলো নতুন বস্ত্র। 

শিশুদের মুখে খুশির হাসি, মায়েদের চোখে আনন্দের অশ্রু—সব মিলিয়ে পরিবেশ হয়ে উঠেছিল উচ্ছ্বাসে ভরা। 

অনেক শিশু প্রথমবার নতুন পোশাক পেল পুজোর আগে, আর সেটাই তাদের কাছে ছিল এক বিশাল উপহার।

কুশল ভারত গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নরেশ আগারওয়াল আবেগভরে বলেন—

“উৎসব মানেই আনন্দ, আর সেই আনন্দে কাউকে বাদ দেওয়া যায় না। পাহাড়ের মানুষও হাসুক, তাদের জীবনেও আনন্দের আলো পৌঁছাক—সেই লক্ষ্যেই এই আয়োজন।”


🏞️ অযোধ্যাপাহাড়ে দুর্গাপুজোর বিশেষত্ব

অযোধ্যাপাহাড় শুধু প্রকৃতির জন্যই নয়, দুর্গাপুজোর জন্যও বিখ্যাত। এখানকার হিলটপে হয় পাহাড়ের উপরের একমাত্র দুর্গাপুজো। 

প্রতি বছর পুজোর সময়ে হাজার হাজার পর্যটক আসেন এই অনন্য পুজো দেখতে। 

কিন্তু স্থানীয় আদিবাসী পরিবারগুলো সেই জাঁকজমকের বাইরে থেকে যায়। তাই এবারের এই কর্মসূচি সত্যিই নজিরবিহীন।


🌍 পর্যটন উন্নয়ন ও সামাজিক দায়িত্ব

নরেশ আগারওয়াল আরও বলেন—

“অযোধ্যাপাহাড়ে পর্যটন যত উন্নত হচ্ছে, ততই আমাদের দায়িত্ব বাড়ছে। শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়, এখানকার মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতেও আমাদের এগিয়ে আসতে হবে।”

তাঁর এই বক্তব্য স্পষ্ট করে যে এই কর্মসূচি শুধুমাত্র একদিনের আয়োজন নয়, বরং পাহাড়ি মানুষদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী সামাজিক উদ্যোগের সূচনা।


কর্মসূচির মূল আকর্ষণগুলো এক নজরে

✔️ নতুন বস্ত্র বিতরণ – প্রতিটি আদিবাসী পরিবারের জন্য নতুন পোশাক।
✔️ স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির – সাধারণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পরামর্শ।
✔️ শিশুদের জন্য বিশেষ যত্ন – পুষ্টি সচেতনতার প্রচার।
✔️ মমতার ছোঁয়া – উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি।


🧡 মানবিকতার বার্তা ছড়িয়ে দিল একদিনের অনুষ্ঠান

আজকের দুনিয়ায় যেখানে সবাই নিজের আনন্দ নিয়েই ব্যস্ত, সেখানে এই ধরনের উদ্যোগ মানবিকতার নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। 

দুর্গাপুজো শুধু বিলাসিতা নয়, সেটি হোক আনন্দ ভাগ করার উৎসব—এই বার্তাই পৌঁছে দিল এই কর্মসূচি।

এই আয়োজন প্রমাণ করল যে সামান্য সহানুভূতিই অনেক বড় হাসি ফুটিয়ে তুলতে পারে। 

পাহাড়ি গ্রামগুলোর ছোট ছোট মুখগুলো আজ যে আনন্দে ভরে উঠেছিল, সেটাই হলো আসল উৎসবের সার্থকতা।


🌟 শেষকথা – পাহাড়ে ছড়িয়ে পড়ুক আনন্দের আলো

অযোধ্যাপাহাড়ের এই উদ্যোগ শুধু এক দিনের আনন্দ নয়, এটি এক প্রতিশ্রুতি—পাহাড়ের মানুষও সমান আনন্দে থাকুক। 

কুশল ভারত গ্রুপ এবং ওয়েবস্টার সার্ভিসের এই প্রয়াস সত্যিই প্রশংসনীয়।

ভবিষ্যতে এমন আরও কর্মসূচি হলে পাহাড়ের জীবন বদলাবে, আর দুর্গাপুজো সত্যিই হয়ে উঠবে “সবার পুজো”


Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url