মানবাজার গ্রামে রাস্তার অভাবে চরম দুর্ভোগ।

মানবাজারের গোবরদা ও কোলডিহা গ্রামে রাস্তার অভাবে অসুস্থদের ডুলিতে বহন, শিক্ষার সংকট ও সামাজিক সমস্যায় গ্রামবাসী বিপর্যস্ত।


manbazar rasta abhab


মানবাজারের গ্রামে রাস্তার অভাব – স্বাধীনতার পরেও একই চিত্র 🚧

দেশ স্বাধীন হয়েছে বহু দশক আগে, কিন্তু মানবাজার ১ নম্বর ব্লকের গোবরদা ও কোলডিহা গ্রাম আজও স্বাধীনতার স্বাদ পুরোপুরি পায়নি। 

কারণ, গ্রামে প্রবেশের জন্য পাকা রাস্তা নেই। গ্রামবাসীরা আজও ক্ষেতের আলকে রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করছে। 

প্রধান সড়ক থেকে গ্রামে ঢুকতে প্রায় দুই কিলোমিটার পথ পেরোতে হয় এই সংকীর্ণ আলের উপর দিয়ে।

এভাবে যাতায়াত শুধু কষ্টকর নয়, বিপজ্জনকও। বর্ষাকালে কাদা আর জলের কারণে চলাফেরা একেবারেই দুর্বিষহ হয়ে যায়। 

কৃষিজমির উপর দিয়ে চলাচলের কারণে ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়। গ্রামবাসীরা বারবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন, কিন্তু শুধু আশ্বাস মিলেছে, কাজ হয়নি।

৭৫ বছরেরও বেশি সময় পার হয়েছে স্বাধীনতার, তবুও এই গ্রাম দুটি আজও অবহেলিত। গ্রামবাসীর প্রশ্ন—“কোথায় সেই উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি?”


প্রতিশ্রুতি ছিল অনেক কিন্তু কেন হলো না রাস্তা 🛤️

ভোটের সময় এলেই রাজনৈতিক নেতারা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেন। তারা বলেন, “রাস্তা হবে, সব সমস্যার সমাধান হবে।” কিন্তু ভোট শেষে সেই প্রতিশ্রুতি মিলিয়ে যায়।

এই গ্রামগুলিতে বহুবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী এসেছেন। তারা গ্রামবাসীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন, আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। গ্রামের মানুষ এখন আর কথায় বিশ্বাস করে না। 

তাদের বক্তব্য—
👉 “শুধু প্রতিশ্রুতি শুনতে শুনতে কান পচে গেছে, কিন্তু রাস্তা আজও হয়নি।”

গ্রামবাসীরা এখন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি এবারও রাস্তা না হয়, তারা ব্লক অফিস ঘেরাও করবেন। এই ক্ষোভের কারণ খুবই যৌক্তিক, কারণ রাস্তা ছাড়া গ্রামে উন্নয়ন সম্ভব নয়।


প্রতিদিনের যাতায়াতে দুর্ভোগ ক্ষেতের আলই একমাত্র রাস্তা 😩

গ্রামবাসীরা প্রতিদিন ক্ষেতের আলের উপর দিয়ে হেঁটে যান। বর্ষাকালে সেই আল পিচ্ছিল হয়ে যায়, শুকনো মৌসুমে ধুলোয় ভরে যায়। ছোট বাচ্চাদের স্কুলে যেতে হয় এই বিপজ্জনক পথে।

প্রধান সড়ক থেকে গ্রামে প্রবেশের জন্য দুই কিলোমিটার দীর্ঘ আলের রাস্তা পেরোতে হয়। গৃহস্থালির কাজ, বাজার করা, চিকিৎসা—সব ক্ষেত্রেই এই কষ্ট ভোগ করতে হয়।

কৃষকরা বলেন, “আমাদের জমি নষ্ট হচ্ছে, আবার হাঁটতেও অসুবিধা।” শুধু তাই নয়, রাতের অন্ধকারে এই পথে চলাফেরা আরও ঝুঁকিপূর্ণ।


জরুরি অবস্থায় ভয়ঙ্কর চিত্র অসুস্থদের ডুলিতে বয়ে নিয়ে যাওয়া 🛏️

এই রাস্তার অভাবের সবচেয়ে বড় কষ্টের চিত্র দেখা যায় জরুরি সময়ে।

  • কোনও মানুষ হঠাৎ অসুস্থ হলে

  • প্রসূতি মহিলাদের হাসপাতালে নিতে হলে

গাড়ি আসতে পারে না। বাধ্য হয়ে গ্রামবাসীরা খাটের উপর ডুলি বানিয়ে অসুস্থকে বহন করে নিয়ে যান প্রধান রাস্তা পর্যন্ত।

গ্রামের মহিলারা বলেন, “হাসপাতালে পৌঁছাতে পৌঁছাতে অনেক সময় রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।”

দুই কিলোমিটার ডুলি করে নিয়ে যাওয়া শুধু কষ্টকর নয়, বিপজ্জনকও। জীবন-মরণ পরিস্থিতি তৈরি হয় প্রতিদিন।


শিক্ষার ক্ষেত্রে বড় বাধা স্কুলে যেতে শিশুদের দুর্ভোগ 📚

গ্রামে কোনও প্রাইমারি স্কুল নেই। ফলে ছোট বাচ্চাদের প্রতিদিন বাইরে গিয়ে পড়তে হয়। সেই যাত্রা সহজ নয়। সংকীর্ণ আলের রাস্তা পেরিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে হয়।

বর্ষাকালে পরিস্থিতি আরও খারাপ। কাদা মেখে পড়তে যাওয়া, ভিজে বই নিয়ে ফিরতে আসা—এটাই বাস্তব। 

এর ফলে অনেক বাচ্চা নিয়মিত স্কুলে যেতে পারে না। অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন, কারণ এর প্রভাব পড়ছে শিক্ষার মানের উপর।

শিক্ষার উন্নতির জন্য যেমন শিক্ষক দরকার, তেমনই দরকার নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা। কিন্তু এখানে সেই মৌলিক প্রয়োজনটাই নেই।


বিয়ের সম্বন্ধ ভেঙে যাচ্ছে সামাজিক সমস্যা বেড়েই চলেছে 💔

গ্রামের মহিলারা জানিয়েছেন, রাস্তার অভাবে বিয়ের সম্বন্ধ হচ্ছে না। পাত্রপক্ষ রাস্তার অবস্থা দেখে বিয়ে ভেঙে দিচ্ছে।

অনেক পরিবার বলেন, “পাকা রাস্তা না থাকলে ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।” এই সমস্যার কারণে গ্রামের তরুণ-তরুণীদের বিয়ে আটকে যাচ্ছে, যা বড় সামাজিক সমস্যার রূপ নিয়েছে।

এখন শুধু রাস্তা নয়, রাস্তা নিয়ে গ্রামের সম্মানও প্রশ্নের মুখে।


গ্রামবাসীর ক্ষোভ ও দাবি এবার আর আশ্বাস নয় কাজ চাই 🔥

গ্রামের মানুষ আর প্রতিশ্রুতি শুনতে চায় না। তারা সরাসরি বলেছে—
👉 “রাস্তা না হলে এবার আমরা আন্দোলনে নামব।”

মহিলারা ব্লক অফিস ঘেরাওয়ের হুমকি দিয়েছেন। তাদের মতে, রাস্তা না থাকলে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সমাজ—কোনও ক্ষেত্রেই উন্নয়ন সম্ভব নয়।


প্রশাসনের বক্তব্য আশ্বাস দেওয়া হলেও প্রশ্ন রয়ে গেল 🏢

মানবাজার ১ নম্বর ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক দেবাশীষ ধর জানিয়েছেন,
“বিষয়টি আমার নজরে আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করি শীঘ্রই সমাধান হবে।”

কিন্তু গ্রামবাসীর প্রশ্ন—“এতদিন কেন কিছু হলো না?”


উপসংহার উন্নয়নের আলো কখন জ্বলবে 🌟

রাস্তা শুধু যাতায়াতের মাধ্যম নয়, এটি জীবনের সঙ্গে যুক্ত মৌলিক প্রয়োজন। রাস্তা ছাড়া স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অর্থনীতি—কোনও ক্ষেত্রেই উন্নতি সম্ভব নয়।

গ্রামবাসীর দাবি ন্যায্য। এখন দেখার বিষয়—এইবার কি সত্যিই রাস্তা হবে, নাকি আবারও প্রতিশ্রুতিই থেকে যাবে?


কি করা উচিত এখন?

✔ অবিলম্বে পাকা রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করা দরকার
✔ ব্লক প্রশাসনের সরাসরি তদারকি নিশ্চিত করা
অস্থায়ী কাঠের সেতু বা রাস্তার ব্যবস্থা যতক্ষণ না পাকা রাস্তা হয়।
✔ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা সহজলভ্য করার জন্য সুবিধা বাড়ানো দরকার


আজকের পুরুলিয়া – পুরুলিয়ার সব খবর এক জায়গায়!

👉 তাজা সংবাদ, স্থানীয় আপডেট আর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে থাকুন সবসময় আমাদের সাথেই।

"আপনার মতামত জানাতে নিচে Comment করুন ✅ আর খবরটি সবাইকে জানাতে Share করতে ভুলবেন না 🔄!" 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url