নিতুড়িয়ায় সাবস্টেশন ঘিরে বিক্ষোভে ৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন গ্রাম।
⚡😡পুরুলিয়ার নিতুড়িয়ায় সাবস্টেশনের সামনে গ্রামবাসীর বিক্ষোভে ৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণ, মানুষের ক্ষোভ, প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ সমাধান জানুন বিস্তারিত।
🌩️ ঘটনার শুরু: হঠাৎ উত্তেজনা গোবাগ সাবস্টেশনে
📅 তারিখ: ১২ আগস্ট ২০২৫
📍 স্থান: নিতুড়িয়া, পুরুলিয়া, পশ্চিমবঙ্গ
মঙ্গলবার সকাল প্রায় ১১টার দিকে হঠাৎ করেই নিতুড়িয়া ব্লকের গোবাগ বিদ্যুৎ বিভাগের সাবস্টেশনের সামনে মানুষের ভিড় জমতে শুরু করে।
কয়েক মিনিটের মধ্যে গোবাগ, রামকানালী সহ আশেপাশের গ্রামের শতাধিক মানুষ একত্রিত হয়ে তীব্র বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।
তাদের মূল অভিযোগ— ⚡ বারবার বিদ্যুৎ চলে যাওয়া, লোডশেডিং, এবং দপ্তরের উদাসীনতা।
স্থানীয়দের মতে, পাশের এলাকার বিদ্যুতের লোড তাদের লাইনে চাপিয়ে দেওয়ায় এই সমস্যা আরও তীব্র হয়েছে।
😠 গ্রামবাসীর ক্ষোভ: "বারবার অভিযোগ করেও সমাধান নেই"
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সমস্যায় তারা একাধিকবার বিদ্যুৎ দপ্তরে অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু ফলাফল?
শুধু প্রতিশ্রুতি, বাস্তব সমাধান একবারও আসেনি।
এক বিক্ষোভকারীর কথায়—
"আমরা প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল ঠিকমতো দিই। কিন্তু বিনিময়ে পাচ্ছি শুধু অন্ধকার আর গরমে কষ্ট। এভাবে আর কতদিন চলবে?"
🏢 বিদ্যুৎ দপ্তরের প্রতিক্রিয়া
ঘটনার খবর পৌঁছানোর পর রঘুনাথপুর বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মকর্তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে আসেন। তারা প্রথমে আন্দোলনকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন এবং জানান যে সমস্যার সমাধান প্রক্রিয়াধীন।
কিন্তু উত্তপ্ত পরিস্থিতি এত সহজে ঠান্ডা হয়নি। মানুষ স্পষ্ট জানিয়ে দেন—
"এবার আশ্বাস নয়, সমাধান চাই।"
🏛️ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ
বিক্ষোভ থামাতে নিতুড়িয়া ব্লকের বিডিও প্রবীর কুমার সিনহা ঘটনাস্থলে আসেন।
তিনি বিক্ষোভকারীদের সামনে স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দেন—
"অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা হবে।"
এই প্রতিশ্রুতির পর আন্দোলনকারীরা ধীরে ধীরে বিক্ষোভ প্রত্যাহার করেন। তবে, অনেকের মুখেই ছিল অবিশ্বাসের ছাপ—
"এই প্রতিশ্রুতি কতদিন স্থায়ী হবে?"
🕔 পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন: জীবনে থমকে গেল গতি
প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে নিতুড়িয়া ও আশপাশের গ্রামগুলো বিদ্যুৎহীন ছিল। এর ফলে একাধিক ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়—
-
🏢 প্রশাসনিক কার্যালয়: বিদ্যুৎ না থাকায় কম্পিউটার ও নথিপত্রের কাজ বন্ধ।
-
🏥 হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র: চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ফ্যান বন্ধ থাকায় রোগীদের চরম অসুবিধা।
-
🏭 কারখানা ও শিল্পাঞ্চল: উৎপাদন থেমে যায়, কর্মীরা অলস বসে থাকতে বাধ্য।
-
🏠 গৃহস্থালি জীবন: গরমে ছোটো শিশু ও বৃদ্ধদের অবস্থা কাহিল।
এক গৃহবধূর ক্ষোভ—
"গরমে ঘরে বসে থাকা যায় না, আবার বাইরে গেলে রোদে পুড়ে যাই। বিদ্যুৎ ছাড়া জীবন দুর্বিষহ।"
📊 সমস্যার মূল কারণ (গ্রামবাসীদের মতে)
| কারণ | বিস্তারিত |
|---|---|
| অতিরিক্ত লোড চাপানো | পাশের এলাকার বিদ্যুৎ লাইন এই লাইনে যুক্ত হওয়ায় ওভারলোড হয়। |
| অবকাঠামোর অভাব | সাবস্টেশন আপগ্রেডের কাজ হয়নি। |
| রক্ষণাবেক্ষণের ঘাটতি | সমস্যার মেরামত সময়মতো হয় না। |
| গরমের প্রভাব | তীব্র গরমে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বিভ্রাট বাড়ছে। |
🔍 বিশ্লেষণ: কেন এই সমস্যা বারবার হচ্ছে?
গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের বড় কারণ হল অপর্যাপ্ত অবকাঠামো ও লোড ম্যানেজমেন্টের অভাব।
অনেক সময় পাশের এলাকার অতিরিক্ত লোড একই লাইনে চাপিয়ে দেওয়া হয়, ফলে লাইনে ওভারলোড হয়ে বিদ্যুৎ চলে যায়।
এছাড়া জরুরি ভিত্তিতে সাবস্টেশন আপগ্রেড, পুরনো যন্ত্রাংশ বদল, এবং আলাদা লাইনের ব্যবস্থা না হলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে।
🗣️ স্থানীয়দের দাবিসমূহ
-
সাবস্টেশনের তাত্ক্ষণিক আপগ্রেড।
-
আলাদা বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ।
-
দ্রুত অভিযোগ সমাধান ব্যবস্থা।
-
গ্রীষ্মকালে বিশেষ লোড ম্যানেজমেন্ট পরিকল্পনা।
🌟 শেষ কথা
বিদ্যুৎ কেবল আলো জ্বালানোর জন্য নয়—এটি এখন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অপরিহার্য। প্রশাসন ও বিদ্যুৎ দপ্তরের উচিত দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা, যাতে সাধারণ মানুষ আর কষ্টে না থাকে।
