এবিটিএ পুরুলিয়া সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ২০২৫।
🏆পুরুলিয়া জেলায় এবিটিএ মহকুমা স্তরের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা শেষ হলো। জেলার ২০টি ব্লক ও ৩টি পৌরসভা থেকে ২৭,০০০ প্রতিযোগীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি এক মহোৎসবে পরিণত হয়।
🌟 ২৭ হাজার প্রতিযোগীর অংশগ্রহণে এক মহোৎসব
পুরুলিয়া জেলাজুড়ে এবারের এবিটিএ মহকুমা স্তরের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা সত্যিই এক মহোৎসবে পরিণত হয়েছে।
জেলার ২০টি ব্লক ও ৩টি পৌরসভা মিলিয়ে প্রায় ২৫০টিরও বেশি বিদ্যালয় থেকে অংশ নেয় ২৭,০০০ প্রতিযোগী।
🎭 গান, আবৃত্তি, নৃত্য, নাটক, একাঙ্কিকা, চিত্রাঙ্কন, কুইজসহ মোট ১৪টি বিষয়ের ৩০টি বিভাগে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
ছাত্রছাত্রীদের মঞ্চে উঠে নিজেদের প্রতিভা প্রকাশ করতে দেখা গেছে অগণিত দর্শক-শ্রোতার সামনে।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ছোট ছোট শিশুরা যেমন উচ্ছ্বসিত ছিল, তেমনই বড়দের মধ্যে প্রতিযোগিতার আবেগও ছিল প্রবল। 🌈
📜 ইতিহাসের আলোয় এবিটিএর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা
এই প্রতিযোগিতা শুধু বিনোদনের জন্য নয়, এর রয়েছে এক ঐতিহাসিক তাৎপর্য।
👉 ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বরের কলঙ্কজনক ঘটনার পর গোটা দেশে যে বিষবাষ্প ছড়িয়েছিল, তার প্রতিরোধে ১৯৯৩ সাল থেকে এবিটিএ এই সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার সূচনা করে।
প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য ছিল —
-
ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সাংস্কৃতিক চেতনা গড়ে তোলা।
-
শিক্ষা জীবনের পাশাপাশি মানবিকতা ও সামাজিকতার বিকাশ ঘটানো।
-
আগামী দিনের সুনাগরিক তৈরি করা।
এখন ২০২৫ সালেও এই প্রতিযোগিতা অব্যাহত রয়েছে, যা প্রমাণ করে এবিটিএর সাংস্কৃতিক চেতনার প্রতি অকৃত্রিম অঙ্গীকার। 🙌
🎤 পুরস্কার বিতরণী মঞ্চের আবেগঘন পরিবেশ
চিত্তরঞ্জন উচ্চ বিদ্যালয়ে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমিতির জেলা ও মহকুমার বিশিষ্ট সদস্যরা।
📌 সভাপতিত্ব করেন –
-
পূর্ব মহকুমা শাখার সভাপতি তপন মাহাতো।
-
পশ্চিম মহকুমা শাখার সভাপতি হরপ্রসাদ পাত্র।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিবেকানন্দ চ্যাটার্জী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন —
👉 “শিক্ষার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ছাত্রছাত্রীদের চরিত্র গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এবিটিএ এই কাজ করে আসছে, এজন্য তাদের ধন্যবাদ।” 👏
সমিতির জেলা সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী উল্লেখ করেন যে, এই প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র একটি অনুষ্ঠান নয়, বরং সমাজের মধ্যে সংস্কৃতি ও শিক্ষার সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার একটি প্রচেষ্টা।
🎶 প্রতিযোগিতার বৈচিত্র্য
এবারের প্রতিযোগিতার অন্যতম আকর্ষণ ছিল এর বিষয়ভিত্তিক বৈচিত্র্য।
-
🎤 আবৃত্তি বিভাগে প্রতিযোগীরা আবেগঘন কবিতা পরিবেশন করে।
-
💃 নৃত্যে উঠে আসে বাংলার লোকনৃত্য থেকে আধুনিক নাচের সমাহার।
-
🎶 সঙ্গীতে রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতি থেকে আধুনিক গানও গাওয়া হয়।
-
🎭 নাটক ও একাঙ্কিকায় ফুটে ওঠে সমাজের বাস্তব চিত্র।
-
🎨 চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় ছাত্রছাত্রীরা পরিবেশ, স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে আধুনিকতার ছোঁয়া দিয়েছে।
এভাবে প্রতিটি বিভাগেই প্রতিযোগীরা প্রমাণ করেছে যে, তারা শুধু পড়াশোনায় নয়, সংস্কৃতিতেও সমান দক্ষ।
👥 অতিথি ও সংগঠকদের সক্রিয় ভূমিকা
প্রতিযোগিতার সাফল্যের পেছনে সমিতির কর্মীদের নিরলস পরিশ্রম ও নেতৃত্ব বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
📌 রঘুনাথপুর জি. ডি. ল্যান্ড হাই স্কুলে অনুষ্ঠিত হয় রঘুনাথপুর মহকুমা শাখার প্রতিযোগিতা, যেখানে অংশ নেয় ১৫০-এর বেশি প্রতিযোগী।
উপস্থিত ছিলেন –
-
জেলা সম্পাদক ব্যোমকেশ দাস।
-
কোষাধ্যক্ষ ফাল্গুনী কুন্ড।
-
জেলা সহসভানেত্রী মল্লিকা সান্যাল।
-
সহসভাপতি প্রণব নিয়োগী।
-
সম্পাদক অনির্বাণ সরকার।
-
সভাপতি ভারত পাল।
তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া এত বড় আয়োজন সফল হতো না। 🤝
📅 আগামী প্রতিযোগিতার দিকনির্দেশ
সমিতির জেলা সম্পাদক ঘোষণা করেছেন —
-
২৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে জেলা স্তরের প্রতিযোগিতা।
-
৩১ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতা।
এবারের প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে প্রবল উত্তেজনা ও প্রত্যাশা। সবাই অপেক্ষা করছে পরবর্তী ধাপে নিজেদের প্রতিভা দেখানোর জন্য। 🏅
🎉 উৎসবের আবহ
পুরুলিয়ার প্রতিটি প্রতিযোগিতা কেন্দ্রেই তৈরি হয়েছিল উৎসবমুখর পরিবেশ।
-
অভিভাবকরা সন্তানদের উৎসাহ দিতে ভিড় জমিয়েছিলেন।
-
শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের অনুপ্রাণিত করেছেন।
-
দর্শকরা করতালিতে মুখর করে তুলেছেন মঞ্চ।
অনুষ্ঠানের প্রতিটি মুহূর্ত যেন এক একটি স্মৃতি হয়ে থাকবে অংশগ্রহণকারীদের জীবনে। 🌟
🌍 সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার গুরুত্ব
এই প্রতিযোগিতা শুধু আনন্দের জন্য নয়, এর গভীরে রয়েছে একটি সামাজিক বার্তা।
-
ছাত্রছাত্রীরা মঞ্চে উঠে আত্মবিশ্বাস অর্জন করে।
-
প্রতিভা বিকাশের মাধ্যমে তাদের শিক্ষা আরও মানবিক ও সমৃদ্ধ হয়।
-
সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড সমাজে সম্প্রীতি, ঐক্য ও সহযোগিতার বার্তা ছড়ায়।
এবিটিএর এই প্রতিযোগিতা তাই শুধু একটি অনুষ্ঠান নয়, বরং এক সাংস্কৃতিক আন্দোলন।