থ্যালাসেমিয়া নিয়ে সচেতনতা ও রক্তদান শিবির।

🩸থ্যালাসেমিয়া নিয়ে সচেতনতা ছড়াতে পুরুলিয়ার নিস্তারিণী কলেজে রোটারি ক্লাবের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো রক্তদান ও থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষার শিবির। 

ছাত্রীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে তৈরি হলো মানবিকতার অনন্য উদাহরণ।


thalasemia sachetanata o raktdan shibir

📚থ্যালাসেমিয়া নিয়ে সচেতনতা শিবির ও রক্তদান

❓ থ্যালাসেমিয়া কী এবং কেন এত গুরুতর?

থ্যালাসেমিয়া একটি জিনগত (genetic) রক্তের রোগ, যা একজন ব্যক্তি পিতামাতার থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পায়। এই রোগে শরীরে স্বাভাবিক হারে হিমোগ্লোবিন তৈরি হয় না। 

ফলে রক্তাল্পতা, দুর্বলতা, এবং গুরুতর শারীরিক জটিলতা দেখা যায়। এই রোগের প্রধান দুটি ধরন হলো – থ্যালাসেমিয়া মেজর ও থ্যালাসেমিয়া মাইনর

👉 থ্যালাসেমিয়া মেজর হলে রোগীকে নিয়মিত রক্ত নিতে হয়।

👉 থ্যালাসেমিয়া মাইনর হলে রোগ ধরা পড়ে না, কিন্তু পরবর্তী প্রজন্মে মেজর রূপে প্রকাশ পেতে পারে।

🧬 তাই বিয়ের আগে এই রোগের পরীক্ষা না করিয়ে থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তা হতে পারে মারাত্মক বিপজ্জনক।


🎯 পুরুলিয়ার নিস্তারিণী কলেজে সচেতনতামূলক শিবির

পুরুলিয়ার নিস্তারিণী মহিলা মহাবিদ্যালয়ে শনিবার এক বিশেষ দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকল। রোটারি ক্লাব, পুরুলিয়া-র উদ্যোগে সেখানে অনুষ্ঠিত হলো থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা ও রক্তদান শিবির। এই শিবিরে ছিল –

✅ শিক্ষামূলক আলোচনা।
✅ বিনামূল্যে থ্যালাসেমিয়া টেস্ট।
✅ রক্তদান কর্মসূচি।
✅ সচেতনতা মূলক পরামর্শ ও হেলথ চেকআপ।

👩‍⚕️ কলেজের মোট ১১৩ জন ছাত্রী এই শিবিরে অংশ নেন এবং নিজেরা পরীক্ষা করান থ্যালাসেমিয়ার জন্য।

🗣️ একজন ছাত্রী জানান:

“আমরা আগে জানতামই না থ্যালাসেমিয়া কতটা ভয়ংকর হতে পারে। আজকের এই শিবির আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। আমরা নিজেরা পরীক্ষা করালাম এবং ঠিক করেছি, নিজেদের গ্রামে গিয়ে সবাইকে সচেতন করব।”


🩸 রক্তদান: জীবনদানের এক মহান উদ্যোগ

এই শিবিরে শুধু থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা নয়, ছিল রক্তদান কর্মসূচিও

ছাত্রীরা খুবই উৎসাহের সঙ্গে অংশ নেন। মোট ৩৫ পাউচ রক্ত সংগৃহীত হয়, যা পরবর্তী সময়ে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য জীবনদায়ী হতে চলেছে।

❤️ এই উদ্যোগ প্রমাণ করে, যুব সমাজ কেবল নিজেদের জন্য নয়, সমাজের জন্যও কতটা সচেতন এবং দায়িত্ববান।


🔎 কী বললেন রোটারি ক্লাবের সম্পাদক?

রোটারি ক্লাব, পুরুলিয়ার সম্পাদক দীনেশ মল বলেন –

“আমরা থ্যালাসেমিয়া ও পেলভিক ক্যান্সার বিষয়ে লাগাতার সচেতনতা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি। এই ধরনের শিবিরে ছাত্রীরা যে ভাবে অংশ নিচ্ছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে সচেতনতা কিভাবে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে।”

🔄 তিনি জানান, এই ধরনের উদ্যোগ আগামী দিনেও চলবে এবং আরও কলেজ ও বিদ্যালয়েও এই সচেতনতা ছড়ানো হবে।


🧠 থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে করণীয়:

✅ ১. বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া টেস্ট করানো

জীবনসঙ্গী নির্বাচনের আগে দুই পক্ষের থ্যালাসেমিয়া রিপোর্ট জানা খুবই জরুরি।

✅ ২. নিয়মিত সচেতনতামূলক শিবির

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গ্রাম পঞ্চায়েত ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে নিয়মিত এই ধরনের শিবির করা দরকার।

✅ ৩. স্কুল-কলেজে থ্যালাসেমিয়া বিষয়ে পাঠ অন্তর্ভুক্ত

যত অল্প বয়স থেকে এই বিষয়ে জ্ঞান দেওয়া যায়, ততই উপকার।

✅ ৪. ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্প বাড়ানো

থ্যালাসেমিয়া রোগীদের নিয়মিত রক্তের প্রয়োজন হয়। তাই সমাজের তরফে রক্তদানের অভ্যাস গড়ে তোলা দরকার।


💬 স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিক্রিয়া

👵 সাবিত্রী দাস (অভিভাবক):

“মেয়েগুলো কতটা সচেতন হলো দেখে ভালো লাগল। এই শিক্ষা ওদের ভবিষ্যতেও কাজে লাগবে।”

🧑‍🏫 অধ্যাপিকা রুমা ঘোষ (শিক্ষিকা):

“এই প্রোগ্রাম শুধু মেডিকেল টেস্ট নয়, ছাত্রছাত্রীদের মানবিক দায়িত্ববোধ তৈরি করলো। রোটারি ক্লাবকে ধন্যবাদ জানাই।”


📌 উপসংহার

এই দিনের শিবির ছিল শুধুমাত্র একটি স্বাস্থ্য শিবির নয়, বরং একটি সামাজিক আন্দোলনের সূচনা

ছাত্রীরা যে ভাবে নিজেরা এগিয়ে এসে রক্তদান করলেন, পরীক্ষা করালেন ও ভবিষ্যতে সচেতনতা ছড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিলেন, তা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক।

🕊️ থ্যালাসেমিয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায় সচেতনতা।

📢 সমাজের প্রতিটি স্তরে যদি এই সচেতনতা ছড়ানো যায়, তাহলে ভবিষ্যতে এই রোগের প্রভাব অনেকটাই কমবে।


🌟 আজকের পুরুলিয়া-র পক্ষ থেকে নিস্তারিণী কলেজের ছাত্রীদের জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।

🔁 এই ধরনের উদ্যোগ আরও ছড়িয়ে পড়ুক জেলার প্রতিটি কোণে।


📌 আপনার মতামত আমাদের জানাতে ভুলবেন না। আরও এমন খবর পেতে আমাদের পেজটি ফলো করুন।
📤 আপনি চাইলে এই প্রতিবেদন শেয়ারও করতে পারেন সামাজিক মাধ্যমে।


✍️ লেখা ও সম্পাদনা: আজকের পুরুলিয়া সংবাদ টিম।
📸 ছবি কৃতিত্ব: নিস্তারিণী মহিলা মহাবিদ্যালয়।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url