দেবেন মাহাতো মেডিক্যালে ইন্ডোর পরিষেবা সরানো স্থগিত।
পুরুলিয়া সদর হাসপাতাল থেকে ইন্ডোর পরিষেবা হাতোয়াড়া সরানোর সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত। নাগরিকদের আন্দোলনে মিলল সাফল্য। পুরুলিয়া সদর হাসপাতাল বাঁচাও নাগরিক মঞ্চের দাবি আরও জোরদার হবে।
পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের ইন্ডোর পরিষেবা হাতোয়াড়া স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত আপাতত থমকে গেল নাগরিক আন্দোলনের জোরে।
দীর্ঘদিন ধরে পুরুলিয়ার মানুষ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ ও আওয়াজ তুলছিলেন, সেই নাগরিকদেরই সংগ্রামের জয় ধরা দিল এই স্থগিতাদেশে।
শিশু, স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগ ছাড়া অন্য সব ইন্ডোর পরিষেবা স্থানান্তরের বিরুদ্ধে মানুষের ঐক্যবদ্ধ অবস্থানকে বড় সাফল্য হিসেবে দেখছে পুরুলিয়া সদর হাসপাতাল বাঁচাও নাগরিক মঞ্চ।
গত ৩ নভেম্বর পুরুলিয়া ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে আয়োজিত নাগরিক কনভেনশন থেকেই গঠিত হয় এই নাগরিক মঞ্চ।
সেখানেই স্পষ্ট দাবি তোলা হয়েছিল—পুরুলিয়া সদর হাসপাতাল ক্যাম্পাসকে আরও উন্নীত করে পূর্ণাঙ্গ জেলা হাসপাতাল করা হোক।
পাশাপাশি হাতোয়াড়ায় সরানোর পরিকল্পনা সম্পূর্ণ বাতিল করার জোরালো প্রস্তাব রাখা হয়।
নাগরিকেরা জানিয়েছিলেন, শহরের মানুষ থেকে দূরে স্থানান্তর করলে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য পরিষেবায় বিরাট সমস্যা তৈরি হবে।
এছাড়াও দাবি ওঠে, হাতোয়াড়ায় দ্রুত পূর্ণাঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল চালু করা হোক।
অন্যদিকে মানবাজার এবং ঝালদায় মহকুমা হাসপাতাল চালুর বিষয়ে আরও তৎপরতা দাবি করেন বাসিন্দারা।
এইসব গুরুত্বপূর্ণ দাবিগুলি ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (IMA) পুরুলিয়া শাখা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে জমা দিয়েছে।
৮ নভেম্বর নাগরিক মঞ্চের প্রতিনিধিরা দেবেন মাহাতো গভর্মেন্ট মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে স্থানান্তর সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার আবেদন জানান।
তাদের যুক্তি ছিল—এটি শুধুমাত্র পুরুলিয়ার নয়, গোটা জেলার জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে যুক্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
নাগরিক মঞ্চের সদস্য ও বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ অসীম সিনহা জানিয়েছেন, এই অর্জনে তারা উৎসাহিত হলেও আন্দোলন এখানেই থামবে না।
পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের উন্নতি, ঝালদা ও মানবাজারে মহকুমা হাসপাতাল দ্রুত চালুর দাবিতে তাঁরা আরও বৃহত্তর জনআন্দোলন গড়ে তুলবেন।
তাঁর কথায়, “জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে পুরুলিয়ার মানুষের এই ঐক্যই আমাদের শক্তি। পরিষেবা যাতে সাধারণ মানুষের নাগালে থাকে, তার জন্য আন্দোলন আরও জোরদার হবে।”
পুরুলিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের উদ্বেগ ও দাবির মুখে প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত স্থগিত হওয়া নিঃসন্দেহে নাগরিকদের একটি বড় সাফল্য।
এখন মানুষের আশা—এবার বাস্তবে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করতে কার্যকরী পদক্ষেপই হবে প্রশাসনের পরবর্তী পথ।
