পুরুলিয়ায় মমতার মন্তব্যে সেনা অপমানের অভিযোগে বিজেপির প্রতিবাদ।
পুরুলিয়ার পাড়া ব্লকে বিজেপির তীব্র আন্দোলন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে।
অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী ভারতীয় সেনাবাহিনীকে অপমান করেছেন। বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছে, সেনাবাহিনী দেশের গর্ব—তাদের অসম্মান করা মানে দেশের সম্মান খাটো করা।
এই ইস্যুতে পাহাড়ীগোড়া মোড় ও আনাড়া বাসস্ট্যান্ডে আয়োজন করা হয় স্ট্রিট কর্নার সভা ও মিছিল।
নেতারা দাবি করেছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে, না হলে রাজ্যজুড়ে আরও তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
এই কর্মসূচি শুধুমাত্র রাজনৈতিক লড়াই নয়, জাতীয় গর্ব রক্ষার আন্দোলন হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
পাড়ায় সেনাবাহিনী অপমানের অভিযোগে বিজেপির তীব্র আন্দোলন
পুরুলিয়ার পাড়ায় মঙ্গলবার বিকেল থেকে শুরু হয় তীব্র রাজনৈতিক উত্তেজনা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীকে অপমান করার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।
বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক মন্তব্য সেনাবাহিনীর মর্যাদাকে খাটো করেছে।
সেনাবাহিনী দেশের গর্ব—এই বার্তাকে সামনে রেখে রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদের ডাক দেয় বিজেপি, এবং তারই অঙ্গ হিসেবে পাড়া ব্লকে আয়োজন করা হয় একাধিক সভা ও মিছিল।
বিকেল পাঁচটা নাগাদ শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষ থেকে বিজেপি কর্মী—সকলের ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
পাহাড়ীগোড়া মোড়ে যখন সভা শুরু হয়, তখন স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা।
“সেনাবাহিনী আমাদের গর্ব, অপমান চলবে না”— এই স্লোগান যেন প্রতিবাদের প্রধান ভাষা হয়ে ওঠে।
বিজেপি নেতারা স্পষ্ট বার্তা দেন যে সেনাবাহিনীর সম্মান রক্ষার জন্য যেকোনও আন্দোলনে তারা শেষ পর্যন্ত লড়বেন।
এই কর্মসূচি কেবল একটি রাজনৈতিক প্রতিবাদ নয়, বরং দেশপ্রেমের আবেগে ভরপুর এক জনসমাগমে পরিণত হয়েছিল।
মানুষজন হাতে বিজেপির পতাকা, গলায় স্লোগান নিয়ে এগিয়ে এসে জানিয়ে দেন যে সেনাদের অপমান তাঁরা কোনওভাবেই মেনে নেবেন না।
📍 মিছিল ও সমাবেশ: পাড়ার পাহাড়ীগোড়া মোড়ে জমজমাট প্রতিবাদ
বিজেপির মন্ডল ৩-এর পক্ষ থেকে প্রথমে মন্ডল কার্যালয় থেকে একটি বিশাল মিছিল বের হয়।
মিছিলের শৃঙ্খলা, স্লোগান, এবং মানুষের অংশগ্রহণ দেখে বোঝা যাচ্ছিল যে এই প্রতিবাদ বিজেপির কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
মিছিলের শুরুতেই উপস্থিত ছিলেন মন্ডল সভাপতি জয়দেব মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক দীনেশ চৌধুরী, এবং মহিলা নেত্রী জোসনা বাউরী।
তাঁদের সঙ্গে ছিলেন জেলার গুরুত্বপূর্ণ নেতা তপন বাউরী, যিনি পরে সভায় মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন।
মিছিলটি গ্রামের রাস্তা ঘুরে শেষমেষ পৌঁছায় পাহাড়ীগোড়া মোড়ে, যেখানে রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে মানুষ স্লোগানে যোগ দেন।
“ভারতীয় সেনা আমাদের প্রাণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমা চাই”— এই স্লোগানে আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে ওঠে।
সভায় বক্তারা একাধিক বিষয় তুলে ধরেন। তাঁদের বক্তব্যে স্পষ্ট ছিল যে বিজেপি এই ইস্যুতে কোনওরকম ছাড় দেবে না।
সাধারণ মানুষও নেতাদের কথায় সায় দিয়ে জানান যে সেনাবাহিনীকে অসম্মান করা মানে গোটা দেশের সম্মান ক্ষুণ্ণ করা।
সভা শেষে সবাই প্রতিশ্রুতি দেন যে আগামী দিনেও আন্দোলন আরও তীব্র করা হবে।
🔍 আনাড়া বাসস্ট্যান্ডে সমান্তরাল সভা ও রাজ্য নেতাদের উপস্থিতি
একই সময়ে পাড়া মন্ডল চার-এর পক্ষ থেকেও আরেকটি প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় আনাড়া বাসস্ট্যান্ডে।
এই সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্য নেতা বিকাশ ব্যানার্জি সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন চরন বাউরী, শিব শম্ভু বাউরী, টোটন মুখার্জি, জয়দেব গঁরাই, স্বপন রায় এবং খোকন বাউরী।
প্রত্যেকেই এক সুরে জানিয়েছেন যে সেনাবাহিনীর অসম্মান তাঁরা কোনওভাবেই বরদাস্ত করবেন না। বক্তাদের বক্তব্য ছিল অত্যন্ত কড়া।
তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করে বলেন, সেনাবাহিনীকে অপমান করা মানে দেশের নিরাপত্তার স্তম্ভকে খাটো করা।
এই সভাতেও ছিল একই দৃশ্য—মানুষজন পতাকা হাতে, স্লোগানে মুখর। অনেকেই এই প্রতিবাদকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক লড়াই হিসেবে দেখছেন না, বরং জাতীয় গর্বের ইস্যু হিসেবে দেখছেন।
নেতারা ঘোষণা করেন যে এই আন্দোলন এখানে থামবে না, আগামী দিনে জেলাজুড়ে প্রতিটি ব্লকে এই ইস্যুতে আরও সভা ও মিছিল করা হবে।
তাঁদের ভাষণে স্পষ্ট ছিল দৃঢ়তা এবং সেনাবাহিনীর মর্যাদা রক্ষার প্রতিশ্রুতি।
🗣️ বিজেপি নেতাদের বক্তব্যে ক্ষোভ ও দৃঢ়তা
সভায় উপস্থিত নেতারা একে একে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন। তপন বাউরী বলেন, “সেনারা সীমান্তে জীবন বাজি রেখে দেশের জন্য লড়ছেন।
তাঁদের নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করা মানে দেশের মর্যাদা খাটো করা।” জয়দেব মন্ডল আরও একধাপ এগিয়ে বলেন, “বিজেপি চুপ করে থাকবে না। প্রয়োজনে রাস্তায় নেমে লড়াই করবে। সেনাবাহিনীর সম্মান রক্ষার জন্য আমাদের আন্দোলন চলবে।”
বক্তারা দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রীকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় রাজ্যজুড়ে তীব্র প্রতিবাদ গড়ে তোলা হবে।
নেতাদের বক্তব্যে স্পষ্ট ছিল যে সেনাবাহিনীর সম্মান রক্ষা তাঁদের কাছে রাজনৈতিক এজেন্ডার ঊর্ধ্বে।
তাঁরা এই লড়াইকে দেশের সম্মান রক্ষার লড়াই হিসেবে তুলে ধরেন।
সভার শেষে বিজেপি নেতারা ঘোষণা করেন, আগামী দিনে আরও বৃহত্তর কর্মসূচি নেওয়া হবে, যেখানে সাধারণ মানুষকে নিয়ে গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
📅 ভবিষ্যতের পরিকল্পনা: আন্দোলন আরও তীব্র হবে
প্রতিবাদ কর্মসূচির শেষে বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, এই আন্দোলন কোনওভাবেই এখানেই থেমে থাকবে না।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে আরও তীব্র আন্দোলনের প্রস্তুতি চলছে। জেলার প্রতিটি ব্লকে সভা, মিছিল, প্রচারসভা হবে।
প্রয়োজনে জেলা সদরেও মহামিছিল করা হবে। বিজেপি নেতারা ঘোষণা করেন যে সেনাবাহিনীকে অসম্মান করার মতো ঘটনা তাঁরা বরদাস্ত করবেন না।
সাধারণ মানুষকে এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করার জন্যও বিজেপি একাধিক প্রচার চালাবে। নেতারা দাবি করেন, এই আন্দোলন কেবল রাজনৈতিক নয়, জাতীয় গর্বের সঙ্গে যুক্ত।
তাই প্রত্যেক দেশপ্রেমিক মানুষের উচিত এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা। বিজেপি নেতৃত্বের মতে, সেনাদের মর্যাদা রক্ষা করা প্রত্যেক ভারতবাসীর কর্তব্য।
সেই কর্তব্য পালনে তারা কোনওরকম আপস করবে না।
