পুরুলিয়ার ছাত্রীরা কর্তব্যরত মানুষদের হাতে রাখির ভালোবাসা বেঁধে দিল।
🎉রাখি বন্ধনের দিনে কর্তব্যরত মানুষদের হাতে রাখি বেঁধে ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিল পুরুলিয়ার BSS সেন্ট্রাল পাবলিক স্কুলের ছাত্রীরা। পড়ুন অনন্য এই মানবিক গল্প।
🎉 কর্তব্যরত মানুষদের হাতে ভালোবাসার সুতো
পুরুলিয়া, ৯ আগস্ট —
রাখি বন্ধন 💫— এক এমন উৎসব যা শুধু সুতো নয়, হৃদয়ের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে। ভাই-বোনের সম্পর্কের এই পবিত্র দিনে যখন অনেকেই পরিবারের কাছে ফিরে গিয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন।
তখনও কেউ কেউ থাকে দায়িত্বে — যাদের কর্মক্ষেত্র থেকে ছুটি নেওয়ার সুযোগ হয় না।
পুরুলিয়ার এক দল স্কুলছাত্রী সেই দায়িত্বে নিয়োজিত মানুষদের জন্য এনে দিল এক অনন্য উপহার — রাখির ভালোবাসা ❤️।
🕊️ রাখি বন্ধনের আসল মানে
রাখি বন্ধন শুধুমাত্র এক টুকরো সুতো নয়। এটি এক প্রতিশ্রুতি, এক বিশ্বাস, এক ভালোবাসার প্রতীক। 💌
প্রথা অনুযায়ী, বোন ভাইয়ের হাতে রাখি বেঁধে তার দীর্ঘায়ু, সুস্বাস্থ্য ও সুরক্ষার কামনা করে। ভাইও প্রতিশ্রুতি দেয় যে, যেকোনো পরিস্থিতিতে সে বোনকে রক্ষা করবে।
কিন্তু আজকের সমাজে রাখি বন্ধনের এই আবেগ শুধু ভাই-বোনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি হয়ে উঠেছে সম্প্রীতি, মৈত্রী ও সৌভ্রাতৃত্বের প্রতীক। 🙌
🏫 পুরুলিয়ার স্কুলের বিশেষ উদ্যোগ
পুরুলিয়া শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত BSS সেন্ট্রাল পাবলিক স্কুল 🎓— এখানকার শিক্ষক-শিক্ষিকারা এবং ছাত্রীরা আট বছর ধরে পালন করে আসছে এক অনন্য প্রথা।
শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক সোমনাথ ব্যানার্জী বলেন—
"আমাদের প্রধান শিক্ষক প্রসেনজিৎ রায়ের উদ্যোগে ২০১৮ সাল থেকে আমরা রাখি বন্ধন উৎসবকে আলাদা মাত্রা দিচ্ছি।"
প্রতি বছর রাখি বন্ধনের দিনে, কয়েকজন শিক্ষক ও ছাত্রীরা বেরিয়ে পড়ে শহরের রেলস্টেশন, হাসপাতাল, ট্রাফিক পয়েন্ট এবং অন্যান্য কর্মস্থলে কর্তব্যরত মানুষদের হাতে রাখি পরাতে।
🚶♀️ এ বছরের রাখি যাত্রা
এই বছর সকাল সকাল রওনা হন তিনজন শিক্ষক এবং প্রায় কুড়ি জন ছাত্রী। 🎒
তাদের লক্ষ্য ছিল—
-
রেলস্টেশনের কর্মীরা 🚉
-
হাসপাতালের নার্স ও চিকিৎসাকর্মী 👩⚕️
-
ট্রাফিক পুলিশ 🚦
-
অন্যান্য দায়িত্বে থাকা মানুষরা।
মোট শতাধিক কর্তব্যরত ব্যক্তির হাতে রাখি পরিয়ে দেয় তারা। প্রতিটি রাখির সাথে ছিল মিষ্টি হাসি, উষ্ণ শুভেচ্ছা আর কৃতজ্ঞতার স্পর্শ।
💬 শিক্ষকদের অনুভূতি
সোমনাথ ব্যানার্জী আরও জানান—
"আমরা চাই আমাদের ছাত্রছাত্রীরা শুধু বই নয়, জীবনের বড় পাঠও শিখুক — মৈত্রী, সহমর্মিতা আর একে অপরকে পাশে থাকার শিক্ষা।"
এই ভাবনা থেকেই প্রতি বছর এমন কর্মসূচি নেয় স্কুল। শিশুদের চোখে আনন্দ, দায়িত্বশীলতার বীজ বপন করে এই অভিজ্ঞতা।
🌍 সমাজে এর গুরুত্ব
আজকের ব্যস্ত জীবনে, উৎসবের দিনেও অনেককে দায়িত্ব পালন করতে হয়। যেমন—
-
ট্রাফিক পুলিশ 🚔
-
ডাক্তার ও নার্স 🏥
-
ট্রেন চালক ও কর্মীরা 🚆
-
সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা 📰
তাদের জন্য এই ধরনের উদ্যোগ কেবল একটি প্রতীকী উৎসব নয়, বরং এক বিশাল আবেগ ও সম্মান প্রদর্শন। ❤️