পুরুলিয়ার দুই কিশোর গড়ল কোটি টাকার অনলাইন ব্র্যান্ড।
✅পুরুলিয়ার আদ্রার দুই কিশোর মাত্র ১৬ বছর বয়সে গড়ে তুলল কোটি টাকার অনলাইন ব্র্যান্ড ‘শুদ্ধ স্বাদ’। জানুন তাদের সাফল্যের অনুপ্রেরণামূলক গল্প।
১৬ বছরেই কোটি টাকার স্বপ্ন পূরণ! পুরুলিয়ার দুই কিশোরের অবিশ্বাস্য সাফল্যের গল্প ✨
👉 পুরুলিয়ার আদ্রা থেকে শুরু সাফল্যের যাত্রা
জীবনে সফল হতে হলে বড় হতে হয় না, বড় হতে হয় স্বপ্নে। তার জীবন্ত প্রমাণ পুরুলিয়ার আদ্রার জয়ন্ত কর্মকার ও কৈলাশ বাউরি। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তারা এমন এক উদ্যোগ শুরু করেছে, যা আজ সারা দেশে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
দুই কিশোর বন্ধু মিলে গড়ে তুলেছে অনলাইন ব্র্যান্ড ‘শুদ্ধ স্বাদ’, যেখানে বিক্রি হচ্ছে দেশের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি ঠেকুয়া।
ছোট্ট ঘর থেকে শুরু হওয়া এই ব্যবসা এখন পৌঁছে গেছে দেশের নানা প্রান্তে— বিহার, উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্রসহ একাধিক রাজ্যে।
👉 কিভাবে জন্ম নিল ‘শুদ্ধ স্বাদ’?
এই সাফল্যের গল্প শুরু হয়েছিল ছট পুজোর মিষ্টি স্মৃতি থেকে। ঠেকুয়া মূলত বিহার এবং উত্তর ভারতের ছট পুজোর একটি ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন।
সেই স্বাদের প্রতি ভালোবাসা থেকেই জয়ন্ত ও কৈলাশের মাথায় আসে ঠেকুয়াকে দেশজুড়ে জনপ্রিয় করার আইডিয়া।
তারা সিদ্ধান্ত নেয়—
✅ ঠেকুয়াকে শুধু উৎসবের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হবে না।
✅ এটিকে নতুন ভাবে স্ন্যাক্স হিসেবে ব্র্যান্ডিং করা হবে।
এভাবেই জন্ম নিল ‘শুদ্ধ স্বাদ’ ব্র্যান্ড।
👉 ১৬ বছর বয়সেই উদ্যোগপতি হওয়ার চ্যালেঞ্জ
ব্যবসা শুরু করার সময় তাদের সামনে নানা বাধা ছিল।
-
টাকা-পয়সার সমস্যা: বড় মূলধন ছাড়াই শুরু করতে হয়েছিল।
-
অভিজ্ঞতার অভাব: কিভাবে ব্র্যান্ড তৈরি করতে হয়, মার্কেটিং করতে হয়—এসবই শিখতে হয়েছে শূন্য থেকে।
-
পড়াশোনার চাপ: স্কুলের পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসা সামলানো ছিল চ্যালেঞ্জ।
তবুও তারা হাল ছাড়েনি। প্রতিদিন মাত্র ২-৩ ঘণ্টা সময় বের করে, নিজেরাই ঠেকুয়া বানানো, প্যাকেট করা এবং ডেলিভারি দেওয়ার কাজ শুরু করেছিল।
👉 মাত্র তিন মাসে সাফল্যের শিখরে!
সবাইকে চমকে দিয়ে, মাত্র তিন মাসের মধ্যে তাদের ব্যবসা পৌঁছে যায় কয়েক লক্ষ টাকার টার্নওভারে।
✅ প্রতিদিন ১০০-রও বেশি প্যাকেট ঠেকুয়া দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হচ্ছে।
✅ তাদের লক্ষ্য এখন আরও বড়— এক বছরে এক কোটি টাকার ব্যবসা করা।
এটি প্রমাণ করে, বয়স নয়, স্বপ্ন আর পরিশ্রমই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।
👉 সোশ্যাল মিডিয়াই তাদের সাফল্যের হাতিয়ার
জয়ন্ত ও কৈলাশ খুব বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ব্যবহার করেছে সোশ্যাল মিডিয়ার শক্তি।
-
ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে ঠেকুয়ার ছবি ও ভিডিও পোস্ট করে তারা গ্রাহকদের আকর্ষণ করেছে।
-
হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে অর্ডার নেওয়া শুরু হয়েছে।
-
গ্রাহকদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে তারা গল্প শেয়ার করেছে—কিভাবে ঠেকুয়া তৈরি হয়, কেন এটি বিশেষ।
এই স্ট্র্যাটেজিই তাদের এনে দিয়েছে বিশাল সাফল্য।
👉 এখন তাঁদের সঙ্গে ১৫ জনের টিম
শুরুতে তারা ছিল শুধু দু’জন। কিন্তু চাহিদা বাড়তে থাকায়, এখন তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রায় ১৫ জন সমবয়সী বন্ধু। এর ফলে শুধু নিজেরাই নয়, তারা আরও অনেক কিশোরের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছে।
👉 কেন ‘শুদ্ধ স্বাদ’ এত জনপ্রিয় হলো?
এর পিছনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে—
✅ দেশীয় স্বাদ ও ঐতিহ্য – ঠেকুয়া অনেকের শৈশবের স্মৃতি জাগিয়ে তোলে।
✅ হাইজিনিক প্যাকেজিং – সবকিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে তৈরি করা হয়।
✅ সাশ্রয়ী দাম – মানের সঙ্গে কোনো আপস নেই।
✅ অনলাইন ডেলিভারি – ঘরে বসেই অর্ডার করা যায়।
👉 জয়ন্ত ও কৈলাশের বার্তা তরুণদের জন্য
এই দুই কিশোরের সাফল্যের গল্প আমাদের শেখায়—
✨ স্বপ্ন দেখো, পরিশ্রম করো, সাফল্য আসবেই।
✨ বড় কিছু করতে চাইলে বয়স কোনো বাধা নয়।
✨ সোশ্যাল মিডিয়ার সঠিক ব্যবহার করলেই ব্যবসায় সাফল্য সম্ভব।
📢 অনুপ্রেরণার মূল শিক্ষা:
-
ছোট উদ্যোগও বড় হতে পারে।
-
প্রথাগত জিনিসকেও নতুনভাবে উপস্থাপন করলে বাজারে জায়গা হয়।
-
নিজের এলাকার বিশেষ পণ্যকে দেশের বাজারে পরিচিত করা যায় সঠিক পরিকল্পনায়।
👉 ভবিষ্যতের পরিকল্পনা
জয়ন্ত ও কৈলাশ চান, ‘শুদ্ধ স্বাদ’কে একটি জাতীয় ব্র্যান্ডে পরিণত করতে।
তাদের লক্ষ্য—
✅ ঠেকুয়া ছাড়াও আরও দেশীয় স্ন্যাক্স যুক্ত করা।
✅ অনলাইন মার্কেটপ্লেসে (Amazon, Flipkart) পণ্য বিক্রি করা।
✅ দেশের বাইরে এক্সপোর্ট শুরু করা।
🎯 শেষকথা
পুরুলিয়ার এই দুই কিশোর দেখিয়ে দিল—
👉 গ্রামে থেকেও বড় স্বপ্ন দেখা যায়।
👉 শিক্ষার পাশাপাশি উদ্যোগপতি হওয়া সম্ভব।
👉 পরিশ্রম, আইডিয়া ও ডিজিটাল শক্তি মিলে সাফল্য নিশ্চিত।
তাদের গল্প হাজারো তরুণ-তরুণীকে অনুপ্রাণিত করবে, যারা আজ নতুন কিছু শুরু করার স্বপ্ন দেখছে।
🔥 তুমি কি প্রস্তুত নিজের স্বপ্নকে বাস্তব করতে?




