পাড়া কৃষক বাজারে দুই দিনের পশুপালন প্রশিক্ষণ।
🐄🐓পাড়া কৃষক বাজারে আতমা প্রকল্পের উদ্যোগে শুরু হলো দুই দিনের পশুপালন প্রশিক্ষণ।
২৫ জন চাষিকে শেখানো হলো আধুনিক পশুপালন, রোগ প্রতিরোধ ও আয় বৃদ্ধির কৌশল — যা গ্রামীণ অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিচ্ছে।
🐄🐓পাড়ায় চাষিদের জন্য পশুপালন প্রশিক্ষণ
🌾 পাড়া, পুরুলিয়া:
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে পাড়া কৃষক বাজার প্রাঙ্গণে এক ভিন্ন ধরনের ব্যস্ততা চোখে পড়ে।
আতমা প্রকল্পের উদ্যোগে এখানে শুরু হলো দুই দিনের পশুপালন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা 🐄🐓।
প্রশিক্ষণে অংশ নিলেন দুবড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মোট ২৫ জন চাষি।
তাদের চোখে মুখে ছিল শেখার আগ্রহ, ভবিষ্যতের প্রতি আস্থা, আর আত্মনির্ভরশীল হওয়ার প্রত্যয়।
🎯 প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য
এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার প্রধান লক্ষ্য ছিল চাষিদের —
-
পশুপাখির রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা পদ্ধতি শেখানো 🩺
-
আধুনিক পশুপালন কৌশল তুলে ধরা 🐄
-
পশুপালন থেকে আয় বৃদ্ধির উপায় বোঝানো 💰
-
গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করা 📈
আয়োজকরা জানান, অনেক সময় পশুপাখির রোগ চিহ্নিত করতে দেরি হওয়ায় বড় ক্ষতি হয়। এই প্রশিক্ষণ সেই ক্ষতি রোধে বড় ভূমিকা নেবে।
📚 প্রশিক্ষণের বিষয়বস্তু
প্রশিক্ষণে চাষিদের শেখানো হয়েছিল —
-
রোগ নির্ণয়ের প্রাথমিক ধাপ 🧪
-
জ্বর, ক্ষুধামন্দা, অস্বাভাবিক আচরণ চিহ্নিত করা।
-
পশুর চলাফেরা ও খাওয়ার অভ্যাস পর্যবেক্ষণ।
-
-
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা 🛡️
-
সময়মতো টিকাকরণ।
-
পরিচ্ছন্ন গোয়ালঘর রক্ষা।
-
সুষম খাদ্য প্রদান।
-
-
আধুনিক পশুপালন কৌশল 🐂
-
বৈজ্ঞানিক খাদ্য প্রস্তুত।
-
প্রজনন ব্যবস্থাপনা।
-
বাজারজাতকরণের আধুনিক পদ্ধতি।
-
-
আয় বৃদ্ধির উপায় 💹
-
দুধ, ডিম, মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি।
-
স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি শহরে বিক্রির কৌশল।
-
পশুপণ্যের প্রক্রিয়াজাতকরণ।
-
👨🌾 চাষিদের অভিজ্ঞতা ও প্রতিক্রিয়া
প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া কৃষক গণেশ মাহাতো বলেন —
"আমরা এতদিন শুধু ফসলের দিকে মন দিতাম। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি, সঠিক পদ্ধতিতে পশুপালন করেও অনেক ভালো আয় করা যায়।"
কৃষাণী বীণা দেবী জানান —
"গৃহস্থালির কাজের ফাঁকে আমি ছাগল ও মুরগি পালন করি। এখানে এসে শিখলাম কীভাবে তাদের অসুখ আগে থেকে ধরা যায় এবং কীভাবে কম খরচে ভালো খাবার দেওয়া যায়।"
📜 উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশিষ্টদের উপস্থিতি
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন —
-
দীনবন্ধু সর্দার — মুখ্য কৃষি অধিকর্তা, পাড়া ব্লক।
-
অনিক বিশুই — বি এল ডি ও, পাড়া ব্লক।
-
সেখ হাসিবুর রহমান — সহ-সভাপতি, পাড়া পঞ্চায়েত সমিতি।
-
কৃষি দফতরের আধিকারিক প্রদীপ মাহাতো ও সৌমেন গোপ।
-
অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তি ও স্থানীয় কৃষি কর্মীরা।
তাঁরা সকলেই পশুপালনকে গ্রামীণ অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে উল্লেখ করেন।
🌱 গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রশিক্ষণের প্রভাব
বিশেষজ্ঞদের মতে, পশুপালন থেকে আয় বৃদ্ধি গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বড় ভূমিকা রাখে। উদাহরণস্বরূপ —
-
একটি গাভী বছরে গড়ে ৩০% বেশি দুধ উৎপাদন করতে পারে যদি সঠিক খাদ্য ও পরিচর্যা দেওয়া হয়।
-
ছাগল ও মুরগির ক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বাড়লে আয় দ্বিগুণ হতে পারে।
📊 এই ধরনের প্রশিক্ষণ চাষিদের বাজারে প্রতিযোগিতামূলক হতে সাহায্য করবে এবং বেকারত্ব হ্রাস করবে।
💬 আয়োজকদের বক্তব্য
আয়োজকদের তরফে জানানো হয়েছে —
"আমরা চাই, পাড়া ব্লকের প্রতিটি চাষি শুধু ফসল নয়, পশুপালন থেকেও আয় করুক। আগামী দিনেও এই ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চলবে, যাতে গ্রামীণ অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হয়।"
📌 FAQ
প্রশ্ন ১: পাড়া কৃষক বাজারে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তর: এই প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য ছিল চাষিদের পশুপাখির রোগ প্রতিরোধ, আধুনিক পশুপালন কৌশল, এবং পশুপালন থেকে আয় বৃদ্ধির পদ্ধতি শেখানো।
প্রশ্ন ২: প্রশিক্ষণে কতজন চাষি অংশ নিয়েছেন?
উত্তর: দুবড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মোট ২৫ জন চাষি এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেছেন।
প্রশ্ন ৩: প্রশিক্ষণে কী ধরনের বিষয় শেখানো হয়েছে?
উত্তর: রোগ চিহ্নিতকরণ, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা, টিকাকরণ, সুষম খাদ্য প্রদান, আধুনিক প্রজনন ব্যবস্থা এবং বাজারজাতকরণের পদ্ধতি শেখানো হয়েছে।
প্রশ্ন ৪: উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কারা উপস্থিত ছিলেন?
উত্তর: উপস্থিত ছিলেন দীনবন্ধু সর্দার (মুখ্য কৃষি অধিকর্তা), অনিক বিশুই (বি এল ডি ও), সেখ হাসিবুর রহমান (সহ-সভাপতি), কৃষি দফতরের আধিকারিক প্রদীপ মাহাতো ও সৌমেন গোপ প্রমুখ।
প্রশ্ন ৫: এই প্রশিক্ষণ গ্রামীণ অর্থনীতিতে কীভাবে প্রভাব ফেলবে?
উত্তর: সঠিক পশুপালন পদ্ধতি চাষিদের আয় বৃদ্ধি করবে, উৎপাদনশীলতা বাড়াবে এবং স্থানীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে।
প্রশ্ন ৬: ভবিষ্যতে কি এই ধরনের প্রশিক্ষণ হবে?
উত্তর: হ্যাঁ, আয়োজকরা জানিয়েছেন যে আগামী দিনেও এই ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে।