শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবারে আনাড়া বাবা বানেশ্বর ধামে ভক্তদের ভীড়।
✍️শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবারে আনাড়া বাবা বানেশ্বর ধাম শিব মন্দিরে হাজারো ভক্তের সমাগম। পাড়া থানার কড়া নিরাপত্তা, তৃণমূল কংগ্রেসের ভান্ডারা ও পূর্ণ ভক্তিময় পরিবেশে মুখর হয়ে উঠলো পুরুলিয়া।
🌸 ভক্তির স্রোতে ভেসে গেল পাড়া
শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবার, ভোরের আলো ফোটার আগেই পাড়ার আনাড়া গ্রামে শুরু হয়েছিল ভক্তদের আগমন।
আনাড়া বাবা বানেশ্বর ধাম শিব মন্দিরে ঢল নামলো হাজারো শিবভক্তের ⛅। দূরদূরান্ত থেকে—পুরুলিয়া জেলা ছাড়াও বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা থেকে এসেছিলেন অসংখ্য মানুষ।
সবার মুখে একটাই ডাক — “হর হর মহাদেব” 🔔।
মন্দির চত্বরে তখন ধূপ-ধুনোর গন্ধ, ঘণ্টার ধ্বনি, শিবনামের জপ আর মানুষের ভক্তিময় মনোভাব এক অপূর্ব পরিবেশ তৈরি করেছিল।
🚔 নিরাপত্তায় কড়াকড়ি ও প্রশাসনিক উদ্যোগ
এত বিপুল জনসমাগম সামলাতে পাড়া থানার পুলিশের তরফে ছিল কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা 👮♂️।
মন্দির চত্বর ও সংলগ্ন এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়। যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছিল, যাতে ভক্তদের কোনো অসুবিধা না হয়।
পুলিশের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকরাও ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও ভক্তদের সাহায্যে সক্রিয় ছিলেন।
🍲 ভক্তি আর ভান্ডারা — সেবার অপর নাম
প্রতি বছরের মতো এবারও পাড়া ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মহাদেবপুর মোড়ে ভোর থেকেই শুরু হয়েছিল ভান্ডারা 🎉।
এখানে ভক্তদের জন্য ছিল গরম গরম লুচি, নিরামিষ তরকারি আর মিষ্টি পায়েস 🍛।
ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত কয়েক হাজার ভক্তকে এই প্রণালিতে খাওয়ানো হয়।
খাওয়ার পর ভক্তদের মুখে ফুটে উঠলো তৃপ্তির হাসি 😊 — অনেকেই বলছিলেন, “এখানে শুধু পেট ভরে না, মনও ভরে যায়।”
🌟 গণ্যমান্যদের উপস্থিতি
দিনটিকে আরও বিশেষ করে তুলেছিল বহু জনপ্রতিনিধি ও বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের আগমন —
-
🏛️ শ্রীমতি নিবেদিতা মাহাতো — পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি।
-
🏛️ সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় — সহকারী সভাধিপতি।
-
🏛️ উমাপদ বাউরী — প্রাক্তন বিধায়ক।
-
🌳 জয়মল ভট্টাচার্য — বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ।
-
📋 মনোজ সাহাবাবু — জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সম্পাদক।
-
🏡 দীপক কুম্ভকার — পাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি।
-
🤝 সেখ হাসিবুর রহমান — সহ সভাপতি।
-
🏗️ পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় — পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ।
-
⚡ পল্লব মিশ্র — বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ।
-
👩💼 জবা বাউরী — জেলা পরিষদের সদস্যা।
-
👩⚖️ সীমা বাউরি — মহিলা নেত্রী।
-
🤝 রিজওয়ান আহমেদ — সহ সভাপতি, পাড়া ব্লক তৃণমূল।
-
📢 প্রকাশ মুখার্জি — সংগঠক।
-
⚖️ মানিক বাউরী — সভাপতি, পাড়া ব্লক তৃণমূল এসসি-ওবিসি সেল।
-
🕌 সামিন আনসারী — সভাপতি, মাইনরিটি সেল।
-
🏛️ যজ্ঞেশ্বর বাউরী — সভাপতি, আনাড়া অঞ্চল তৃণমূল।
তাঁদের উপস্থিতি অনুষ্ঠানের মর্যাদা আরও বাড়িয়ে তোলে 🌈।
🏛️ আনাড়া বাবা বানেশ্বর ধামের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
আনাড়া বাবা বানেশ্বর ধাম শিব মন্দির বহু শতাব্দী পুরোনো। স্থানীয় কিংবদন্তি মতে, এখানে এক প্রাচীন শিবলিঙ্গ স্বয়ংভূ হয়ে উঠেছিল।
তখন থেকেই এলাকায় শিবভক্তদের জন্য এটি এক পবিত্র তীর্থক্ষেত্র।
বিশেষ করে শ্রাবণ মাসে এখানে পূজা দেওয়া মানে শুভফল, সুস্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধি লাভ হয় — এমনটাই বিশ্বাস 🙏।
🌍 স্থানীয় অর্থনীতি ও পর্যটন প্রভাব
প্রতি বছরের মতো এবারও হাজারো ভক্তের সমাগমে এলাকার ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে 💰।
ফুল, মালা, ধূপ, প্রসাদ, পানীয় জল, খাবার দোকান, গাড়ি ভাড়া — সব ক্ষেত্রেই লেনদেন বেড়েছে।
এছাড়া হোটেল ও লজ গুলোতেও পর্যটকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো 🏨।
📸 অনুষ্ঠানের রঙিন ঝলক
মন্দিরের প্রাঙ্গণে রঙিন পতাকা, ফুলের মালা, ধূপ-ধুনোর ধোঁয়া, ভক্তদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক — সব মিলিয়ে এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য তৈরি করেছিল।
বিকেল গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আরতি ও শিবনামে মুখর হয়ে ওঠে সমগ্র পরিবেশ 🔥।
💬 ভক্ত ও আয়োজকদের অনুভূতি
স্থানীয় ভক্ত রতন বাউরী জানান — “বছরের এই দিনটার জন্য আমরা অপেক্ষা করি। বাবা বানেশ্বরের পূজা দিয়ে যে শান্তি পাই, তা ভাষায় বোঝানো যায় না।”
ভান্ডারার একজন আয়োজক বলেন — “এটি শুধু খাওয়ানো নয়, এটি সেবা। ভক্তদের মুখে হাসি দেখাটাই আমাদের প্রাপ্তি।”
🛕 ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও উন্নয়ন
আয়োজকরা জানিয়েছেন, আগামী বছর থেকে ভক্তদের জন্য আরও বড় ভান্ডারা, শৌচাগার, পানীয় জল সরবরাহ এবং বিশ্রামাগার তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রশাসনও মন্দির চত্বরের উন্নয়নে পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছে।
🎯 সারমর্ম
শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবারে আনাড়া বাবা বানেশ্বর ধাম কেবল একটি পূজার স্থান নয় — এটি ভক্তি, সেবা, ঐতিহ্য ও মিলনমেলার প্রতীক।
পাড়া, পুরুলিয়ার এই ঐতিহাসিক মন্দিরে এমন আয়োজন শুধু ধর্মীয় নয়, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও রক্ষা করছে ❤️।
