গাছের আশ্রম: পুরুলিয়ার কাঁটাডি গ্রামে অভিষেক ঘটকের সবুজ বিপ্লব।

🌱কলকাতার প্রাক্তন ছাত্র অভিষেক ঘটক গড়ে তুলেছেন পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামে "গাছের আশ্রম"। 

শতাধিক প্রজাতির গাছ নিয়ে গড়ে উঠেছে এই সবুজ সংগ্রহশালা। পড়ুন এক অনন্য পরিবেশ আন্দোলনের কাহিনি।🌿


gacher ashrom purulia kantadi abhishek ghatok

🌿 ছোটবেলার স্বপ্ন, মাটির টান আর সবুজের টানে তৈরি গাছের আশ্রম 🌳

"📖 লেখাপড়া করে যে, গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে" — আমরা সবাই এই প্রবাদ শুনেছি। কিন্তু এক্ষেত্রে গল্পটা ঠিক তার উল্টো। 

🎓 কলকাতার নামকরা প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র অভিষেক ঘটক স্বেচ্ছায় ত্যাগ করেছেন শহরের আরাম-আয়েশ, চাকরি বা গ্ল্যামার নয় বরং বেছে নিয়েছেন গাছের সঙ্গে জীবন কাটানো।

তিনি পাড়ি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের এক প্রান্তিক জেলা পুরুলিয়ার আরশা ব্লকের কাঁটাডি গ্রামে 🌾, যেখানে গড়ে তুলেছেন "🌳 গাছের আশ্রম" নামে এক দুর্দান্ত বৃক্ষ সংগ্রহশালা।


🌱 একক প্রচেষ্টায় গড়ে উঠছে জীববৈচিত্র্যের স্বর্গ 🦋

🔬 অভিষেক বাবু জানিয়েছেন, এই আশ্রমে ইতিমধ্যে ১০০টিরও বেশি গাছের প্রজাতি এবং ১০০০+ চারা স্থান পেয়েছে। 

নিজের হাতে মাটি খুঁড়ে গাছ বসানো থেকে শুরু করে জঙ্গল পরিষ্কার, জৈব সার তৈরির কাজ পর্যন্ত সবই করছেন নিজে।

💧 স্থানীয় মানুষদের সহায়তায় বসানো হয়েছে জল পাম্প, বিদ্যুৎ সংযোগ, এমনকি থাকার ব্যবস্থা। একে বলা যায় প্রকৃত সমষ্টিগত প্রয়াস

🧑‍🔬 তাঁর এই আশ্রমটি তিনি উৎসর্গ করেছেন বাংলার উদ্ভিদ গবেষক, ছাত্রছাত্রী ও প্রকৃতিপ্রেমীদের উদ্দেশে, যাতে তারা এসে শেখে, দেখে, ও বোঝে — প্রকৃতি রক্ষার মর্ম।


🌍 কেন দরকার এমন সবুজ সংগ্রহশালা? 🤔

🗣️ আমাদের প্রশ্নের উত্তরে অভিষেক বাবু বলেন —

“পুরুলিয়া ধীরে ধীরে তার জীববৈচিত্র্য হারাচ্ছে, প্রাণী ও উদ্ভিদের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে এখানকার বাস্তুতন্ত্রে। বাস্তুতন্ত্র দুর্বল হলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানুষই।”

🔥 তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আগামী দিনে বিশ্ববাসীর সামনে আসতে চলেছে সবচেয়ে বড় প্রাণহানি, আর এর একমাত্র উত্তর গাছ

🦜 বিভিন্ন রকম গাছ, পোকামাকড়, পাখি, পশু — এদের অস্তিত্ব রক্ষা করেই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। তাই তো গাছ লাগানোই তাঁর জীবনের মূল মন্ত্র হয়ে উঠেছে।


🌻 কাঁটাডি গ্রামে সবুজ বিপ্লবের বাস্তব ছবি 🎥

🗓️ ২০২০ সালে প্রথমবার কাঁটাডিতে এসে অভিষেক বাবু দেখেছিলেন ধূসর, শুকনো এক প্রান্তর। আজ সেই একই জায়গা রূপ নিয়েছে এক সবুজ অরণ্যে। 🌳🌼

🌿 গাছের ছায়া, পাখির ডাক, পোকামাকড়ের গুঞ্জন — যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে এই এলাকা। এটি শুধুমাত্র একটি আশ্রম নয়, একে বলা যায় জীবনের পাঠশালা


🤝 স্থানীয় মানুষের সাড়া এবং সমর্থন 👏

🏘️ কাঁটাডি গ্রামের স্থানীয় মানুষজন ও সমাজকর্মীরা অভিষেক বাবুর কাজের প্রশংসা করেছেন।

🎤 কেউ কেউ বলেছেন,

“এই ধরনের মানুষ আমাদের সমাজে সত্যিই বিরল। উনি শুধু গাছ লাগাচ্ছেন না, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের ভবিষ্যৎও তৈরি করছেন।”

👥 বাংলা ও ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের পরিবেশপ্রেমীরা এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন, পরামর্শ দিচ্ছেন, সাহায্য করছেন।


🛑 প্রশাসনের নজর কি পড়বে এই প্রকল্পে? 🧐

অভিষেক বাবুর মতে,

“যদি প্রশাসন এগিয়ে আসে, তাহলে এই গাছের সংগ্রহশালা পুরুলিয়া তথা বাংলার মানচিত্রে এক অনন্য নিদর্শন হয়ে উঠতে পারে।”

🏛️ এটি হতে পারে এক মডেল প্রকল্প, যেখানে শিক্ষার সঙ্গে পরিবেশ সচেতনতা, গবেষণা ও সমাজসেবাকে একসঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে।


💬 কিছু প্রশ্ন, কিছু উত্তর (FAQs) ❓

❓ এই গাছের আশ্রমে কী ধরনের গাছ আছে?

🟢 বাংলার স্থানীয় প্রজাতির পাশাপাশি ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আনা হয়েছে দুর্লভ প্রজাতির গাছ যেমন — শাল, মহুয়া, আমলকি, কাঁকর, বহেরা, বনলেবু ইত্যাদি।

❓ আশ্রমে কী ঘুরে দেখা যায়?

👣 দর্শনার্থীরা গাছের প্রজাতি চিনতে পারেন, পরিবেশ সম্পর্কে জানতে পারেন এবং স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজও করতে পারেন।

❓ স্কুল বা কলেজের ছাত্রছাত্রীরা কীভাবে যুক্ত হতে পারে?

🎓 শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চাইলে এখানে এক্সকারশন, বটানিক্যাল স্টাডি ট্যুর বা স্বেচ্ছাসেবক প্রোগ্রামের আয়োজন করতে পারে।

❓ অভিষেক বাবুর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

📈 আরও গাছ লাগানো, আশ্রমে একটি গবেষণাগার তৈরি, এবং পরিবেশ শিক্ষায় কাজ করার ইচ্ছা আছে তাঁর।


🔚 উপসংহার: সবুজেই আগামী 🌍💚

অভিষেক ঘটক নিজ হাতে গড়ে তুলেছেন একটি আদর্শ সবুজ আন্দোলনের পথ। "গাছের আশ্রম" শুধু একটি প্রকল্প নয়, এটি একটি চেতনার নাম — যেখানে প্রকৃতি, মানুষ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একসাথে পথ হাঁটে।

🌿 আমরা যদি এমন উদ্যোগকে উৎসাহ দিই, তাহলে হয়তো আগামী পৃথিবীটা হবে একটু বেশিই সবুজ, একটু বেশিই সুন্দর।


এই ধরণের মানুষ আর তাঁদের উদ্যোগ নিয়েই গড়ে উঠতে পারে একটি প্রকৃত সবুজ সমাজ


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url