আম্পিয়ারিং হতে পারে দুর্দান্ত ক্যারিয়ার!
🏏পুরুলিয়ায় তিন দিনের আম্পিয়ারিং কর্মশালায় জানালেন আন্তর্জাতিক আম্পায়ার ফ্র্যান্সিস গোমস — আম্পায়ারিং হতে পারে ক্রিকেট প্রেমীদের জন্য একটি লাভজনক ও সম্মানজনক ক্যারিয়ার। বিস্তারিত পড়ুন এই অনন্য উদ্যোগ সম্পর্কে।🌟
🔰 সূচনা
আমরা সাধারণত ক্রিকেট বললেই ভাবি ব্যাটসম্যান, বোলার আর ফিল্ডারের কথা। কিন্তু এই খেলার পেছনে যে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে — সেটা হল আম্পায়ারিং।
এই গুরুত্বপূর্ণ পেশাটি সম্পর্কে আমাদের সমাজে সচেতনতা তুলনামূলকভাবে কম। অথচ, ক্রিকেট খেলার সঠিক পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য আম্পায়ারদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সেই অবজ্ঞাত পেশাকে সামনে তুলে আনতেই টি-রেক্স ক্রিকেট একাডেমি আয়োজিত একটি অনন্য তিন দিনের আম্পায়ারিং কর্মশালা শুরু হয়েছে পুরুলিয়ায়।
আর এই কর্মশালার নেতৃত্বে রয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আম্পায়ার ফ্র্যান্সিস গোমস।
🏟️ কর্মশালার আয়োজন ও উদ্দেশ্য
পুরুলিয়ার ঝর্ণা রিসোর্ট-এ অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই কর্মশালাটি, যেখানে উপস্থিত ছিলেন —
👤 ফ্র্যান্সিস গোমস – আন্তর্জাতিক আম্পায়ার।
👤 জয়ন্ত মিত্র – জেলার প্রবীণ ও সম্মানিত ক্রিকেটার।
👤 অরূপ চৌধুরী – স্থানীয় ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব।
👤 গৌরব সিং – জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি।
👤 ঈশান কুন্ডু – সম্পাদক, টি-রেক্স ক্রিকেট একাডেমি।
এই কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে —
✅ ক্রিকেটের নিয়ম ও ব্যাকরণ শেখানো।
✅ আম্পায়ারিং-কে পেশা হিসেবে তুলে ধরা।
✅ হাতে-কলমে রিয়েল টাইম প্রশিক্ষণ দেওয়া।
✅ তরুণ প্রজন্মকে খেলাধুলার নতুন ক্যারিয়ার অপশন দেখানো।
🌍 অংশগ্রহণকারীরা কারা?
পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন ব্লক থেকে ছেলেরা অংশ নিয়েছে। এছাড়াও চক্রধরপুর, বোকারো, ও ঝাড়খণ্ড-এর বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও তরুণ-তরুণীরা এসে এই কর্মশালায় যোগ দিয়েছে।
তাদের মধ্যে অনেকেই প্রথমবারের মতো জানছে যে আম্পায়ারিং থেকেও একটি পূর্ণাঙ্গ ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব — শুধু খেলোয়াড় হিসেবেই নয়, ক্রিকেটকে ভালোবেসে তার ভিন্ন ভিন্ন শাখাতেও যুক্ত থাকা যায়।
📢 ফ্র্যান্সিস গোমস কী বললেন?
ফ্র্যান্সিস গোমস তার বক্তব্যে বলেন —
🎤 “অনেকেই ভাবে ক্রিকেট মানেই খেলোয়াড় হওয়া, কিন্তু আম্পায়ারিংও একটি দারুণ ক্যারিয়ার হতে পারে। আজকের দিনে একজন দক্ষ আম্পায়ার প্রতি সিজনে প্রায় ₹২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন। এটা কোনও চাকরির থেকে কম নয়।”
তিনি আরও বলেন —
“আমরা যেমন প্লেয়ার ট্রেনিং করি, ঠিক তেমনই আম্পায়ারদেরও ট্রেনিং প্রয়োজন। মাঠে দাঁড়িয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া, খেলোয়াড়দের আচরণ নিয়ন্ত্রণ, ও ক্রিকেট আইনের যথাযথ প্রয়োগ — সব কিছুই শিখতে হয়। এটা সময় ও মনোযোগ দাবি করে, তবে ক্যারিয়ার হিসেবে অসাধারণ।”
🏆 অর্থনৈতিক দিক থেকে লাভজনক
এই কর্মশালার মাধ্যমে তরুণদের সামনে খোলাখুলি বলা হয়েছে —
💸 ৫ মাস ডোমেস্টিক ক্রিকেটে আম্পায়ারিং করলেই প্রায় ₹১৫-২০ লক্ষ টাকা আয় সম্ভব।
💼 এর সাথে থাকে সম্মান, দেশ-বিদেশে ঘোরার সুযোগ, এবং খেলার জগতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ।
এটি শুধুমাত্র পুরুষদের জন্য নয়, মেয়েরাও আজকাল আম্পায়ারিংকে বেছে নিচ্ছে। ফলে এটি একটি জেন্ডার-নিউট্রাল ক্যারিয়ার হিসেবেও গড়ে উঠছে।
📖 শেখানো হচ্ছে কী কী?
এই কর্মশালায় যা শেখানো হচ্ছে:
📌 ক্রিকেটের মূল আইন ও নিয়মাবলি।
📌 মাঠে অবস্থান ও দৃষ্টিকোণ নির্বাচন।
📌 নো বল, ওয়াইড, রান আউট ইত্যাদির সিদ্ধান্ত কিভাবে নেওয়া হয়।
📌 কীভাবে ম্যাচ কন্ট্রোল করতে হয়।
📌 আচরণগত নীতিমালা।
📌 ফিল্ড সেশন — মাঠে গিয়ে বাস্তব প্রশিক্ষণ।
🎤 আয়োজকদের কণ্ঠে উৎসাহ
ঈশান কুন্ডু, টি-রেক্স একাডেমির সম্পাদক বলেন —
“আমরা চাই প্রত্যন্ত গ্রামের প্রতিভাবান ছেলেরা যেন ক্রিকেটে শুধু খেলে না, বরং বিভিন্ন পেশাগত দিকও জানুক। আম্পায়ারিং তার মধ্যে অন্যতম। আমরা চাই তারা এখান থেকে শিখে ভবিষ্যতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে পরিচিত হোক।”
🧠 শিক্ষার্থীদের অভিমত
অনেক অংশগ্রহণকারী এই কর্মশালাকে তাদের জীবনের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে দেখছে।
তাদের মতে —
🗣️ “আমরা আগে জানতাম না আম্পায়ারিং থেকে এত ভালো ক্যারিয়ার গড়া যায়। এবার বুঝলাম এই দিকটাও গুরুত্বপূর্ণ।”
🧾 উপসংহার
পুরুলিয়ার মতো একটি জেলায় আন্তর্জাতিক মানের আম্পায়ারিং কর্মশালা নিঃসন্দেহে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা।
শুধু ক্রিকেট খেলোয়াড় তৈরি নয়, বরং ক্রিকেট প্রশাসক, আম্পায়ার, স্কোরার, কোচ ইত্যাদি পেশার দিকেও তরুণদের দৃষ্টি আকর্ষণ করানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই ধরনের প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম কেবল খেলাধুলার প্রসার ঘটায় না, বরং জীবনের একটি বিকল্প পথে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি করে।
🌟 হয়তো আগামী দিনে এই কর্মশালায় অংশ নেওয়া কোনও ছেলে বা মেয়ে আইপিএল বা আন্তর্জাতিক ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকবে — এটাই স্বপ্ন, এটাই লক্ষ্য! 🌟
📢 আপনি কী ভাবছেন?
আপনার সন্তান বা পরিবারের কেউ ক্রিকেট ভালোবাসে? তাহলে শুধু খেলার দিকে না গিয়ে এই ধরনের বিকল্প পেশার কথাও তাকে ভাবতে বলুন। হয়তো সেখানেই অপেক্ষা করছে তার জীবনের সাফল্য।